গণিত উৎসবে মেতেছে বরিশালের শিক্ষার্থীরা
জাতীয় সংগীত আর পতাকা উত্তোলনের মাধ্যমে বরিশালে শুরু হয় ডাচ্-বাংলা ব্যাংক-প্রথম আলো গণিত উৎসব। ছবি: সাইয়ান

গণিত উৎসবে মেতেছে বরিশালের শিক্ষার্থীরা

সকাল থেকেই কিছুটা বসন্তের আবহ ছিল বরিশালে। ঝকঝকে রোদে মাঘের শীত উবে গেছে। বরিশাল নগরের ঐতিহ্যবাহী ব্রজমোহন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের (বিএম স্কুল) বিশাল মাঠ তখন শিক্ষার্থীদের পদচারণে মুখর। চারদিকে উৎসবের আমেজ। প্রাথমিক, নিম্নমাধ্যমিক ও মাধ্যমিকের শিক্ষার্থীরা সারবদ্ধভাবে দাঁড়িয়ে গেল।

ঘড়ির কাঁটায় সাড়ে নয়টা বাজতেই জাতীয় সংগীত শুরু। এতে গলা মেলান শিক্ষার্থী ও অতিথিরা। এভাবেই বরিশালে আজ শনিবার সকালে উদ্বোধন করা হয় ডাচ্-বাংলা ব্যাংক-প্রথম আলো গণিত উৎসবের বরিশাল পর্ব।

উৎসব উদ্বোধনের সময় জাতীয় পতাকা উত্তোলন করেন বাংলাদেশ বিএম স্কুলের সহকারী প্রধান শিক্ষক মো. হারুন অর রশিদ।আন্তর্জাতিক গণিত অলিম্পিয়াড কমিটির পতাকা উত্তোলন করেন অনুষ্ঠানের উদ্বোধক ও প্রধান অতিথি মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের বরিশাল বিভাগীয় পরিচালক অধ্যাপক মোয়াজ্জেম হোসেন, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের গণিত বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মোহাম্মদ আলমগীর হোসেন।

ডাচ্-বাংলা ব্যাংকের পৃষ্ঠপোষকতায় ও প্রথম আলোর ব্যবস্থাপনায় গণিত উৎসবের আয়োজন করেছে বাংলাদেশ গণিত অলিম্পিয়াড কমিটি। এতে বরিশাল বিভাগের ছয় জেলা বরিশাল, পটুয়াখালী, পিরোজপুর, ভোলা, ঝালকাঠি ও বরগুনার বিভিন্ন বিদ্যালয়ের প্রায় ৪০০ শিক্ষার্থী অংশ নেয়। আজ সকালে দূরদূরান্তের জেলা থেকে আসা শিক্ষার্থীরা বিভাগীয় এই গণিত উৎসবে অংশ নিতে বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে উপস্থিত হয়। শিক্ষার্থীদের সঙ্গে আসেন তাদের অভিভাবকেরাও। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন বরিশাল জেলা প্রথম আলো বন্ধুসভার সাধারণ সম্পাদক নাঈম ইসলাম।

অনুষ্ঠানের উদ্বোধন ঘোষণা করে মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের বিভাগীয় পরিচালক মোয়াজ্জেম হোসেন বলেন, ‘জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে গণিত ওতপ্রোতভাবে জড়িয়ে আছে। গণিত ছাড়া জীবন চলে না। গণিতে ভালো করতে পারলে তোমরা সবকিছুতেই, বিশেষ করে বিজ্ঞানের প্রতিটি শাখায় ভালো করতে পারবে। তেমনি জীবন উৎকর্ষময় হবে। এ জন্য তোমাদের গণিতের ভীতি দূর করতে হবে। ভয় জয় করে গণিতকে আনন্দের সঙ্গে চর্চা করতে হবে।’

অনুষ্ঠানে বিএম স্কুলের সহকারী প্রধান শিক্ষক হারুন অর রশিদ বলেন, ‘গণিত উৎসবের মতো একটি বড় আয়োজনের জন্য আমাদের স্কুলটি বেছে নেওয়ায় আমি আনন্দিত এবং গণিত অলিম্পিয়াডের কাছে কৃতজ্ঞ।

অনুষ্ঠানে ডাচ্-বাংলা ব্যাংক বরিশাল শাখার উপব্যবস্থাপক মোহাম্মাদ হুমায়ুন কবির উপস্থিত ছিলেন। উদ্বোধনের পর সকাল সাড়ে ১০টায় শুরু হয় পরীক্ষা। পরীক্ষার পর শুরু হয় প্রশ্নোত্তর পর্ব। প্রশ্নোত্তর পর্ব পরিচালনা করেন আইসিটি মন্ত্রণালয়ের সহকারী প্রোগ্রামার দিপু সরকার।

এ সময় শিক্ষার্থীদের নানা প্রশ্নের উত্তর দেন বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের কম্পিউটার বিজ্ঞান ও প্রকৌশল বিভাগের সহকারী অধ্যাপক রাহাত হোসাইন ফয়সাল, একই বিশ্ববিদ্যালয়ের গণিত বিভাগের চেয়ারম্যান ও সহযোগী অধ্যাপক মো. শাখাওয়াত হোসেন, সহযোগী অধ্যাপক হেনা রানী বিশ্বাস, সরকারি ব্রজমোহন কলেজের গণিত বিভাগের সহকারী অধ্যাপক গৌতম কুমার সাহা, আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজের প্রতিষ্ঠাতা ও গণিত বিভাগের শিক্ষক ইলিয়াস হোসেন।

এর আগে সাংস্কৃতিক পর্বে গান পরিবেশন করেন বরিশাল বন্ধুসভার সদস্য মো. রায়হান এবং নৃত্য পরিবেশন করেন বরিশাল বন্ধুসভার সাংস্কৃতিক সম্পাদক মিজানুর রহমান।