জাতীয় গণিত উৎসবের সমাপনী

জীবনের স্বপ্ন বাস্তবায়নের প্রত্যয়
আশীষ-উর-রহমান | ফেব্রুয়ারি ১৬, ২০১৪

পরীক্ষা নেই, তাই কোনো উদ্বেগ-উৎকণ্ঠাও নেই। শুধুই আনন্দ আর গলা ছেড়ে চিৎকার দেওয়া। এই করে গতকাল শনিবার গণিত উৎসবের সমাপনী দিনটি কাটল নতুন প্রজন্মের গণিত অনুরাগীদের। রাজধানীর সেন্ট যোসেফ হায়ার সেকেন্ডারি স্কুলের মাঠে গত শুক্রবার শুরু হয়েছিল দুই দিনের ডাচ্-বাংলা ব্যাংক-প্রথম আলো জাতীয় গণিত উৎসব ২০১৪ ও দ্বাদশ বাংলাদেশ গণিত অলিম্পিয়াড। বিজয়ীদের পুরস্কৃত করার মধ্য দিয়ে শেষ হলো গণিতের এই আনন্দঘন উৎসব।
গতকালের অনুষ্ঠান শুরু হয়েছিল সকাল নয়টায়। আঞ্চলিক প্রতিযোগিতায় বিজয়ীদের পরীক্ষা হয়েছিল শুক্রবার। ফল জানার জন্য উদগ্রীব ছিল সবাই। ‘গণিত শেখো স্বপ্ন দেখো’ ছাপ দেওয়া টি-শার্ট গায়ে অভিভাবকদের নিয়ে উৎসবমঞ্চের সামনে সমবেত হয়েছিল সবাই। কথোপকথন, গান, গণিতের পটগান, রুবিকস কিউব প্রতিযোগিতা, আলোচনা আর শেষে পুরস্কার বিতরণী—এসব নিয়েই ছিল জমানো আয়োজন।
অনুষ্ঠানের শুরুতে বাংলাদেশ গণিত অলিম্পিয়াড কমিটির সাধারণ সম্পাদক মুনির হাসান শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথোপকথনের একপর্যায়ে জানতে চাইলেন, তারা দেশের প্রধানমন্ত্রী হলে কে কী করবে? একেকজনের একেক অভিপ্রায়। কেউ বলল, স্কুলে কম্পিউটার গেমস বাধ্যতামূলক করবে, কেউ বলে স্কুলগুলো খুব বিরক্তিকর, তাই বন্ধ করে দেবে। এর মধ্যে একজন উঠে বলল, ‘প্রধানমন্ত্রী একা কোনো দেশকে ভালো করতে পারে না। সবাই মিলে দেশকে ভালো করতে হয়। প্রধানমন্ত্রী হলে সবাইকে নিয়ে দেশকে ভালো করার কাজ করব।’ তার পর থেকে নিজের জন্য, দেশের জন্য ভালো কাজ করার প্রেরণা ও প্রত্যয়ই প্রধান সুর হয়ে থাকল পুরো অনুষ্ঠানে।
‘আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো একুশে ফেব্রুয়ারি’ গানটি দিয়ে সমবেত সংগীত শুরু করেছিলেন প্রথম আলো বন্ধুসভার বন্ধুরা। এরপর তাঁরা শোনান ‘পূর্ব দিগন্তে সূর্য উঠেছে’, ‘মন শুধু মন ছুঁয়েছে’ ও ‘জীবনের আহ্বানে সামনে এগিয়ে যাই’ গানগুলো। আর্জেন্টিনা গণিত অলিম্পিয়াডে অংশ নেওয়া তানজিম শরিফ শোনান ‘সোনা বন্ধু তুই আমারে’ গানটি। দেশের ঐতিহ্যবাহী পটগান ছিল এরপর। গণিত উৎসব নিয়ে রূপান্তর থিয়েটারের পটগানটি বেশ উপভোগ্য হয়ে উঠেছিল। পটে আঁকা ছবির সঙ্গে নাচ ও গানের মধ্যে দিয়ে শিল্পীরা গণিত উৎসবের গত এক যুগের কার্যক্রম তুলে ধরেন।
এরপর ছিল আরেকটি আকর্ষণীয় পর্ব। রুবিকস কিউব প্রতিযোগিতা। আগের ২২ সেকেন্ডের জাতীয় রেকর্ড ভেঙে দিয়ে ১৮ সেকেন্ডে কিউব মিলিয়ে নতুন রেকর্ড করে চ্যাম্পিয়ন হয় হাসান জহিরুল ইসলাম। দ্বিতীয় হুমায়ূন কবির ও তৃতীয় শাকিব বিন রশিদ।
এরপর শুরু হয় পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠান। প্রথমেই গণিতে অবদান এবং গণিত উৎসবে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখায় দেশের প্রবীণ গণিতবিদ লুৎফুজ্জামান ও খোদাদাদ খানকে দেওয়া হয় আজীবন সম্মাননা। প্রতিক্রিয়ায় লুৎফুজ্জামান বলেন, জীবনের এই পর্যায়ে এসে সম্মাননা পাওয়ায় তিনি আনন্দে আপ্লুত। খোদাদাদ খান বলেন, প্রাণের টানে তিনি গণিত উৎসবে আসেন। ছোট ছোট ছেলেমেয়েরা যে গণিতভীতি কাটিয়ে গণিতকে আনন্দের বিষয় হিসেবে নিয়েছে, তাতে তিনি অভিভূত। এই পর্যায়ে দেশের সেরা গণিত ক্লাব মেহেরপুরের গাংনী গণিত পরিবার, এবারের আঞ্চলিক প্রতিযোগিতার সেরা কেন্দ্র, সেরা ব্যবস্থাপনা এসব ক্ষেত্রে সেরাদের পুরস্কার দেওয়া হয়।
পুরস্কারের ফাঁকে ফাঁকে আলোচনা আর নতুন নতুন ঘোষণার মধ্যে দিয়ে চলছিল অনুষ্ঠান। আগের বিশেষ পুরস্কারগুলোর সঙ্গে আরও নতুন চারটি পুরস্কারের ঘোষণা দেওয়া হয় এবার। এগুলো হলো প্রকৌশলী লুৎফর রহমান স্মৃতি পুরস্কার, জামাল নজরুল ইসলাম স্মৃতি পুরস্কার, গৌরাঙ্গ দেব রায় স্মৃতি পুরস্কার ও জেবুন্নেছা হোসেন পুরস্কার। এরপর বিতরণ করা হয় আগের দিনে সুডোকু প্রতিযোগিতার বিজয়ীদের পুরস্কার। প্রথম হয়েছে রিফা মুহাইমিনা রহমান, দ্বিতীয় সাহিকা আহমেদ ও তৃতীয় হয়েছে হাসান ইশরাক। তাদের পুরস্কৃত করার পর ডাচ্-বাংলা ব্যাংকের উপব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. সাইদুল হাসান প্রতিযোগীদের উৎসাহ দিয়ে বলেন, ‘তোমাদের এই কৃতিত্ব ধরে রাখতে হবে। ভবিষ্যতের জন্য মহৎ পরিকল্পনা করতে হবে।’
বাংলাদেশ গণিত অলিম্পিয়াড কমিটির সভাপতি জামিলুর রেজা চৌধুরী বলেন, সারা দেশে গণিত উৎসবের মধ্যে দিয়ে শিক্ষার্থীদের মন থেকে গণিতভীতি দূর হয়েছে। সারা বিশ্বে এই উৎসব একটি ব্যতিক্রমী উৎসব হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছে।
অনুষ্ঠানে আরও আলোচনা করেন গণিত অলিম্পিয়াডের কোচ মাহবুব মজুমদার, প্রথম আলোর সহযোগী সম্পাদক আব্দুল কাইয়ুম ও আনিসুল হক। উপস্থিত ছিলেন জ্যোতির্বিজ্ঞানী এ আর খান, এফ আর সরকার, জিনবিজ্ঞানী আবেদ চৌধুরী, বিজ্ঞান লেখক রেজাউর রহমান, সেন্ট যোসেফ হায়ার সেকেন্ডারি স্কুলের অধ্যক্ষ ব্রাদার রবি পিউরিফিকেশন, উপাধ্যক্ষ ব্রাদার বিকাশ ডি রোজারিও সিএসসি, তাজিমা মজুমদারসহ অনেকে।
আলোচনার পালা শেষ। এরপর গণিত প্রতিযোগিতায় জাতীয় পর্যায়ে চারটি বিভাগের বিজয়ীদের মধ্যে পুরস্কার বিতরণীর পালা। এবার প্রাথমিক, জুনিয়র, সেকেন্ডারি ও হায়ার সেকেন্ডারি এই চারটি বিভাগে প্রায় ২৫ হাজার শিক্ষার্থী আঞ্চলিক প্রতিযোগিতায় অংশ নেয়। তাদের মধ্যে বিজয়ী এক হাজার ৫৫ জন অংশ নেয় জাতীয় পর্যায়ের প্রতিযোগিতায়। এদের মধ্যে ৮১ জন বিজয়ীকে গতকাল পদক, ক্রেস্ট, সনদ ও বিশেষ পুরস্কারের অর্থ দেওয়া হয়। এদের মধ্যে চার বিভাগে সেরাদের সেরা হয়েছে প্রাথমিকে শাহাদাৎ হোসাইন, জুনিয়রে তাহমিদ আনজুম, সেকেন্ডারিতে প্রীতম কুণ্ডু ও হায়ার সেকেন্ডারিতে নূর মোহাম্মদ শফিউল্লাহ। সবাই মিলে ‘আমরা করব জয়’ গানটি গেয়ে জীবনের স্বপ্ন বাস্তবায়ন করার প্রত্যয় নিয়ে বাড়ি ফেরে নবীন প্রজন্ম।
উৎসব সঞ্চালনায় ছিলেন গণিত অলিম্পিয়াডের একাডেমিক কাউন্সিলর মাহমুদুল হাসান ও তামিম শাহিরয়ার।

গণিত উৎসবে প্রাণের স্ফুরণ

আশীষ-উর-রহমান | ফেব্রুয়ারি ১৫, ২০১৪

একে পরীক্ষা, তার ওপর বিষয়টি অঙ্ক। ভয়ে বুক দুরুদুরু করারই কথা। কিন্তু হলুদ টি-শার্ট গায়ে চাপিয়ে যারা গতকাল শুক্রবার সকালে সেন্ট যোসেফ হায়ার সেকেন্ডারি স্কুলের শ্রেণীকক্ষের দিকে ছুটল পরীক্ষা দিতে—তাদের চোখেমুখে ভয়ের ছাপ তো ছিলই না, বরং উৎসাহ-উদ্দীপনা দেখে মনে হচ্ছিল, অঙ্কের চেয়ে মজার কোনো বিষয় আর হতেই পারে না।
গত এক যুগের চেষ্টার এই ফল। স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীরা অঙ্কভীতি কাটিয়ে এখন উৎসবে মেতে উঠেছে অঙ্ক নিয়ে। গতকাল ছিল সেই উৎসবেরই জাতীয় পর্যায়ের চূড়ান্ত আয়োজন: ডাচ্-বাংলা ব্যাংক-প্রথম আলো জাতীয় গণিত উৎসব ২০১৪ ও দ্বাদশ বাংলাদেশ গণিত অলিম্পিয়াড। এবার আন্তর্জাতিক গণিত অলিম্পিয়াড হবে দক্ষিণ আফ্রিকায় আগামী ৩ থেকে ১২ জুলাই পর্যন্ত। তাতে অংশগ্রহণের জন্যই বাংলাদেশ গণিত অলিম্পিয়াড কমিটি ডাচ্-বাংলা ব্যাংক লিমিটেডের পৃষ্ঠপোষকতায় ও প্রথম আলোর ব্যবস্থাপনায় দেশজুড়ে গণিত উৎসবের আয়োজন করে।
এবার আঞ্চলিক পর্যায়ে প্রতিযোগিতা শুরু হয়েছিল জানুয়ারি মাসে। প্রতিযোগিতা হয়েছে ২২টি অঞ্চলে। গত বছর হয়েছিল ১৭টি অঞ্চলে। প্রাথমিক, জুনিয়র, সেকেন্ডারি ও হায়ার সেকেন্ডারি—এই চারটি বিভাগে ২৩ হাজারের বেশি শিক্ষার্থী এতে অংশ নেয়। তাদের মধ্যে বিজয়ী এক হাজার ৫৫ জনকে নিয়ে গতকাল শুক্রবার থেকে ঢাকায় শুরু হলো দুই দিনের জাতীয় উৎসব। দেশে গণিতের এই উৎসব শুরু হয়েছিল ২০০৩ সালে। এবার হলো তার যুগপূর্তি। এই এক যুগের সাফল্য—দেশের তরুণদের নয়টি অলিম্পিয়াডে অংশ নিয়ে একটি রৌপ্য, আটটি ব্রোঞ্জসহ নয়টি পদক জয়।
উৎসবের জমকালো সাজে সাজানো হয়েছিল সেন্ট যোসেফ হায়ার সেকেন্ডারি স্কুলের বিরাট মাঠটি। দক্ষিণ প্রান্তে শামিয়ানা টানিয়ে উৎসব মঞ্চ। পশ্চিম পাশে আঞ্চলিক কেন্দ্রগুলোর বুথ। উত্তর আর পূর্বে বিভিন্ন প্রকাশনী ও প্রতিষ্ঠানের স্টল। এর মধ্যে ছিল প্রথমা, কিশোর আলো, তাম্রলিপি, সময়, মুক্ত আসর, বন্ধুসভা, এভারেস্ট একাডেমির অ্যাডভেঞ্চারার্স ক্লাব, মুহম্মদ জাফর ইকবালের লেখা ছোটদের মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস এবং গণিত ও বিজ্ঞানবিষয়ক বইয়ের স্টল। আরও ছিল আঞ্চলিক উৎসবগুলোর ছবি, অলিম্পিয়াডে পদকজয়ীদের ছবিসংবলিত বিশালাকার বোর্ড।
অংশগ্রহণকারীদের নাম নিবন্ধন শুরু হয়েছিল সকাল আটটা থেকে। সেন্ট যোসেফ হায়ার সেকেন্ডারি স্কুলের অধ্যক্ষ ব্রাদার রবি পিউরিফিকেশন জাতীয় পতাকা উত্তোলন করে উৎসবের উদ্বোধন করেন। এমন একটি উৎসবের কেন্দ্র হিসেবে তাঁদের প্রতিষ্ঠানকে বেছে নেওয়ার জন্য তিনি আয়োজকদের ধন্যবাদ জানান। এই আয়োজন শিক্ষার্থীদের মধ্যে গণিতের প্রতি আরও আগ্রহ সৃষ্টি করবে বলে উল্লেখ করেন তিনি।
বাংলাদেশ গণিত অলিম্পিয়াডের পতাকা উত্তোলন করেন দেশের গণিত অলিম্পিয়াড কমিটির সভাপতি অধ্যাপক জামিলুর রেজা চৌধুরী। তিনি নবীন শিক্ষার্থীদের উৎসাহ দিয়ে বলেন, প্রতিবছরই অলিম্পিয়াডে অংশগ্রহণকারীদের সংখ্যা বাড়ছে। ভবিষ্যতে হয়তো এই মাঠে আর জায়গাই হবে না। আমাদের দেশের শিক্ষার্থীরা বিশ্বের সেরা বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে শিক্ষা গ্রহণ করছে। তিনি বলেন, যেভাবে আমাদের তরুণ প্রজন্ম শিক্ষা-বিজ্ঞানের চর্চায় এগিয়ে এসেছে, তাতে ২০৩০ সালের মধ্যে বিজ্ঞানে আমাদের নোবেল পুরস্কার পাওয়ার উজ্জ্বল সম্ভাবনা আছে। আন্তর্জাতিক গণিত অলিম্পিয়াডের পতাকা উত্তোলন করে ডাচ্-বাংলা ব্যাংক লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক কে এস তাবরেজ বলেন, ডাচ্-বাংলা ব্যাংক এই আয়োজনের সঙ্গে জড়িত হয়ে আনন্দিত। গণিত অলিম্পিয়াড থেকে দেশের প্রতিযোগীরা ব্রোঞ্জ ও রৌপ্যপদক জয় করেছে। ভবিষ্যতে স্বর্ণপদকও জয় করবে বলে তিনি শিক্ষার্থীদের উৎসাহিত করেন।
দেশের সব ধর্মের মানুষ যেন মিলেমিশে একসঙ্গে বসবাস করতে পারে, সে জন্য নবীন প্রজন্মের শিক্ষার্থীদের দায়িত্ব নেওয়ার আহ্বান জানালেন কমিটির সহসভাপতি অধ্যাপক মুহম্মদ জাফর ইকবাল। তিনি বলেন, ‘এই দেশে মুসলিম, হিন্দু, খ্রিষ্টান, বৌদ্ধ—সবাইকে মিলেমিশে একসঙ্গে থাকতে হবে। হিন্দুদের বাড়িতে আগুন দেওয়া হচ্ছে। তাদের অনেকেই হয়তো এই উৎসবে আসতে পারছে না। সবাই যেন আসতে পারে, তোমাদের সেই দায়িত্ব নিতে হবে। তা না হলে শুধু অঙ্ক নিয়ে মেতে থাকা আর পদক জয় করা অর্থবহ হবে না।’
প্রথম আলো সম্পাদক মতিউর রহমান তাঁর বক্তব্যে বিগত এক যুগে গণিত অলিম্পিয়াডের কার্যক্রম ও সাফল্য তুলে ধরে বলেন, ছোট করে শুরু হলেও আজ গণিত উৎসব দেশের একটি বিশাল উৎসবে পরিণত হয়েছে। শিক্ষার্থীরা ভবিষ্যতে আরও বড় সাফল্য আনবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন খোদাদাদ খান, লুৎফুজ্জামান, মোহাম্মদ কায়কোবাদ, এফ আর খান, আনোয়ার হোসেন, রাশেদ তালুকদার, মোহিত কামাল, মুসা ইব্রাহীম, মুনির হাসান প্রমুখ। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের পরেই শুরু হয় পরীক্ষা পর্ব। অংশ নিতে শিক্ষার্থীরা ছুটল শ্রেণীকক্ষের দিকে, আর তাদের সঙ্গে আসা অভিভাবকেরা কেউ গেলেন স্টলগুলোর সামনে, কেউ বিশ্রাম নিলেন মঞ্চের সামনে পাতা চেয়ারে বসে।
পরীক্ষার পর ব্যবস্থা ছিল দুপুরের খাবারের। এরপর সন্ধ্যা অবধি আনন্দের হরেক আয়োজন। জল রকেট ওড়ানো, সুডোকু প্রতিযোগিতা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। আনন্দ আরও বেড়েছিল প্রিয় লেখক মুহম্মদ জাফর ইকবালকে কাছে পেয়ে। সকালে পরীক্ষা থাকায় শিক্ষার্থীরা তাঁর অটোগ্রাফ সংগ্রহ আর ছবি তোলার সুযোগ তেমন পায়নি। তিনি মাঠে আসামাত্রই সবাই ঘিরে ফেলে তাঁকে। একপর্যায়ে মঞ্চ থেকে ‘জাফর স্যার জাফর স্যার, মঞ্চে আসুন, মঞ্চে আসুন’ স্লোগান দিয়ে তাঁকে মঞ্চে আনা হয়। মজার মজার কিছু গল্প শোনালেন তিনি শিক্ষার্থীদের। এ পর্বে মঞ্চে ছিলেন লুৎফুজ্জামান, দেশের সর্বকনিষ্ঠ ফিদে মাস্টার ফাহাদ রহমান ও মুসা ইব্রাহীম।
সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের পর্ব শুরু হয়েছিল সমবেত কণ্ঠে গণিত উৎসবের গান ‘মন মেলে শোন শুনতে পাবি বিজয়ের আহ্বান/ গণিতের ধ্বনিতে বাজে ঐ মুক্তির জয়গান’। পরে বিভিন্ন জেলার শিক্ষার্থীরা আবৃত্তি, অভিনয়, নৃত্য ও গানে গানে মুখর করে তোলে বসন্তের গোধূলি বেলা।
আজকের আয়োজন: আজ সমাপনী দিনের অনুষ্ঠান শুরু হবে সকাল সাড়ে আটটায়। থাকবে গণিতের পট, ভাষা ও দেশের গান, রুবিকস কিউব প্রতিযোগিতা, সমাপনী অনুষ্ঠান ও পুরস্কার বিতরণী। অনুষ্ঠানটি সরাসরি www.prothom-alo.com ও www.matholympid.org.bd তে দেখা যাবে।

ছবি: ঘণিত অলিম্পিয়াডের ফেসবুক গ্রুপে
https://www.facebook.com/groups/BdMOC/

আগামীকাল জাতীয় গণিত উৎসব শুরু

 

গণিত উৎসব ২০১৪

আগামীকাল জাতীয় গণিত উৎসব শুরু

নিজস্ব প্রতিবেদক | আপডেট: ০২:১৮, ফেব্রুয়ারি ১৩, ২০১৪ | প্রিন্ট সংস্করণ
 

আগামীকাল ১৪ ফেব্রুয়ারি শুক্রবার ঢাকার সেন্ট যোসেফ হায়ার সেকেন্ডারি স্কুলে শুরু হচ্ছে দুই দিনব্যাপী জাতীয় গণিত উৎসব ২০১৪ ও দ্বাদশ বাংলাদেশ গণিত অলিম্পিয়াড। ডাচ্-বাংলা ব্যাংক লিমিটেডের পৃষ্ঠপোষকতায় এবং প্রথম আলোর ব্যবস্থাপনায় বাংলাদেশ গণিত অলিম্পিয়াড কমিটি উৎসবের আয়োজন করেছে। সকাল নয়টায় উৎসবের উদ্বোধন করবেন সেন্ট যোসেফ হায়ার সেকেন্ডারি স্কুলের অধ্যক্ষ ব্রাদার রবি পিউরিফিকেশনস। এ বছরের জুলাইয়ে দক্ষিণ আফ্রিকায় অনুষ্ঠেয় ৫৫তম আন্তর্জাতিক গণিত অলিম্পিয়াডের জন্য বাংলাদেশ গণিত দলের সদস্যদের নির্বাচনের লক্ষ্যে এ বছর সারা দেশের ২২টি জেলা শহরে আঞ্চলিক গণিত উৎসব অনুষ্ঠিত হয়েছে। এই ২২টি আঞ্চলিক গণিত উৎসবের বিজয়ী সেরা এক হাজার ৫৫ জন অংশ নেবে জাতীয় উৎসবে।
উৎসবে উপস্থিত থাকবেন বাংলাদেশ গণিত অলিম্পিয়াড কমিটির সভাপতি অধ্যাপক জামিলুর রেজা চৌধুরী, সহসভাপতি অধ্যাপক মুহম্মদ জাফর ইকবাল, সদস্য অধ্যাপক মোহাম্মদ কায়কোবাদ, ডাচ্-বাংলা ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক কে এস তাবরেজ, গণিতবিদ অধ্যাপক খোদাদাদ খান, অধ্যাপক লুৎফুজ্জামান, বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক আবদুল হাকিম খান, সহযোগী অধ্যাপক ফারসীম মান্নান মোহাম্মদী, বিজ্ঞানলেখক রেজাউর রহমান, বাংলাদেশ গণিত দলের কোচ মাহবুব মজুমদারসহ বিশিষ্টজনেরা।
উৎসবের প্রথম দিন প্রাইমারি, জুনিয়র, সেকেন্ডারি ও হায়ার সেকেন্ডারি—এই চার ক্যাটাগরিতে শিক্ষার্থীদের মধ্যে অনুষ্ঠিত হবে উৎসবের মূল পর্ব দ্বাদশ বাংলাদেশ গণিত অলিম্পিয়াড। এতে প্রাইমারি ক্যাটাগরি দুই ঘণ্টা, জুনিয়র ক্যাটাগরি তিন ঘণ্টা এবং সেকেন্ডারি ও হায়ার সেকেন্ডারি ক্যাটাগরির চার ঘণ্টাব্যাপী অলিম্পিয়াডে অংশ নেবে। গণিত অলিম্পিয়াড ছাড়াও থাকবে শিক্ষার্থীদের সুডোকু প্রতিযোগিতা, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, বইমেলাসহ নানা আয়োজন।
উৎসবের দ্বিতীয় দিন ১৫ ফেব্রুয়ারি সকাল সাড়ে আটটায় উৎসব শুরু হয়ে গণিতের পট, ভাষা ও দেশের গান ও বাংলাদেশ রুবিক্সকিউব প্রতিযোগিতা এবং বেলা ১১টা থেকে সমাপনী অনুষ্ঠান ও পুরস্কার বিতরণের মাধ্যমে শেষ হবে এ বছরের গণিত উৎসব। গণিত উৎসবে উপস্থিত থাকবেন আঞ্চলিক আয়োজকেরাও। আঞ্চলিক আয়োজকদের পুরস্কৃত করা ছাড়াও থাকবে ২০১৩ সালের সেরা গণিত ক্লাবের পুরস্কার প্রদান।
আঞ্চলিক গণিত উৎসবের সব বিজয়ীকে সার্টিফিকেট ও হলুদ রঙের টি-শার্ট পরে আগামীকাল সকাল সাড়ে আটটায় সেন্ট যোসেফ হায়ার সেকেন্ডারি স্কুল, আসাদ অ্যাভিনিউ, মোহাম্মদপুর ঢাকায় আসতে বলেছেন আয়োজকেরা। আসাদগেট থেকে মোহাম্মদপুরের দিকে সামান্য এগোলেই হাতের বাঁ পাশে পড়বে বিদ্যালয়টি।

১৪ ও ১৫ ফেব্রুয়ারি জাতীয় গণিত উৎসব ২০১৪

 

১৪ ও ১৫ ফেব্রুয়ারি জাতীয় গণিত উৎসব ২০১৪

আপডেট: ০১:৩৭, ফেব্রুয়ারি ০৮, ২০১৪ | প্রিন্ট সংস্করণ
 

১৪ ও ১৫ ফেব্রুয়ারি শুক্র ও শনিবার ঢাকার সেন্ট যোসেফ হায়ার সেকেন্ডারি স্কুলে ডাচ্-বাংলা ব্যাংক-প্রথম আলো জাতীয় গণিত উৎসব ২০১৪ অনুষ্ঠিত হবে। এ উৎসবের প্রধান আকর্ষণ দ্বাদশ বাংলাদেশ গণিত অলিম্পিয়াড। এই অলিম্পিয়াডে ২২টি আঞ্চলিক গণিত উৎসবের বিজয়ীরা অংশ নেবে। বিজয়ীদের হলুদ রঙের টি-শার্ট পরে এবং বিজয়ীর সার্টিফিকেট নিয়ে ১৪ ফেব্রুয়ারি সকাল আটটায় উৎসব প্রাঙ্গণে হাজির হতে হবে। শুরুতে বিজয়ীদের নিজ অঞ্চলের বুথ থেকে রেজিস্ট্রেশন করতে হবে। সকাল নয়টায় উদ্বোধনের পর সকাল ১০টা থেকে শুরু হবে সব ক্যাটাগরির শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণে দ্বাদশ বাংলাদেশ গণিত অলিম্পিয়াড। প্রাইমারি ক্যাটাগরির পরীক্ষা দুই ঘণ্টার, জুনিয়র ক্যাটাগরির তিন ঘণ্টা এবং সেকেন্ডারি ও হায়ার সেকেন্ডারি ক্যাটাগরির পরীক্ষা হবে চার ঘণ্টার। ১৫ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠানের দ্বিতীয় দিন সকাল সাড়ে আটটা থেকে বেলা একটার মধ্যে পুরস্কার বিতরণীর মাধ্যমে উৎসবের সব আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন হবে।
জাতীয় উৎসবের স্থান: সেন্ট যোসেফ হায়ার সেকেন্ডারি স্কুল, মোহাম্মদপুর, ঢাকা। আসাদগেট থেকে মোহাম্মদপুরের দিকে সামান্য এগোলেই হাতের বাঁ পাশে পড়বে বিদ্যালয়টি।

ঢাকা আঞ্চলিক গণিত উৎসব : গণিত শেখার, স্বপ্ন দেখার উৎসব

‘গণিত শেখো, স্বপ্ন দেখো’—এটা গণিত উৎসবের স্লোগান। আর এ স্লোগান সত্যি প্রমাণ করতেই যেন গতকাল শনিবার রাজধানীর রেসিডেনসিয়াল মডেল কলেজ প্রাঙ্গণে ঢাকা অঞ্চলের আঞ্চলিক গণিত উৎসবের প্রশ্নোত্তর পর্বে স্বপ্ন নিয়ে একের পর এক প্রশ্ন করছিল খুদে শিক্ষার্থীরা। ডাচ্-বাংলা ব্যাংক লিমিটেডের পৃষ্ঠপোষকতায় ও প্রথম আলোর ব্যবস্থাপনায় বাংলাদেশ গণিত অলিম্পিয়াড কমিটি গণিত শেখার, স্বপ্ন দেখার এ উৎসব আয়োজন করে।
মনোরোগ বিশেষজ্ঞ মোহিত কামাল প্রশ্নোত্তর পর্বের শুরু থেকেই স্বপ্নের মনোবৈজ্ঞানিক বিশ্লেষণ তুলে ধরছিলেন। একপর্যায়ে তিনি জানিয়ে দেন, ‘স্বপ্নের রং হয় সাদা-কালো।’ তারপর গণিত, পদার্থবিদ্যা হয়ে আবারও এক প্রশ্নকর্তা স্বপ্ন প্রসঙ্গে ফিরে জানতে চাইল, ‘স্বপ্নের রং সাদা-কালো হয় কেন?’ ততক্ষণে প্রশ্নের উত্তর দিচ্ছেন লেখক অধ্যাপক মুহম্মদ জাফর ইকবাল। খুদে গণিতবিদের এই প্রশ্নের উত্তরে তিনি বললেন, ‘এটা স্বপ্নের বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যা। তবে স্বপ্ন যে দেখে, সে চাইলেই স্বপ্নকে রঙিন করে তুলতে পারে।’
মুহম্মদ জাফর ইকবাল বলেন, কৃষক, পোশাক খাতের শ্রমিক ও প্রবাসী বাংলাদেশি—এ তিন মিলে এখন বাংলাদেশ তিন চাকার রিকশার মতো চলছে। বাংলাদেশের এখন আর একটি চাকা দরকার। নতুন প্রজন্মের চার কোটি শিক্ষার্থী যদি নিজেদের দক্ষ জনশক্তিতে রূপান্তর করতে পারে, তবেই ৪ নম্বর চাকাটি পেয়ে যাবে বাংলাদেশ, ছুটবে দুরন্তগতির গাড়ির মতো। তাহলেই ২০৫০ সাল নাগাদ বাংলাদেশের সমৃদ্ধি ইউরোপ-আমেরিকাকেও ছাড়িয়ে যাবে।
গতকাল সকাল নয়টার দিকে জাতীয় সংগীতের সঙ্গে জাতীয় পতাকা উত্তোলনের মধ্য দিয়ে শুরু হয় স্বপ্নকে রঙিন করার এ গণিত উৎসব। রেসিডেনসিয়াল মডেল কলেজের উপাধ্যক্ষ সুলতান উদ্দিন আহমেদ জাতীয় পতাকা, বাংলাদেশ গণিত অলিম্পিয়াড কমিটির সভাপতি অধ্যাপক জামিলুর রেজা চৌধুরী বাংলাদেশ গণিত অলিম্পিয়াডের পতাকা এবং ডাচ্-বাংলা ব্যাংক লিমিটেডের সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট মো. এহতেশামুল হক খান আন্তর্জাতিক গণিত অলিম্পিয়াডের পতাকা উত্তোলন করেন। পতাকা উত্তোলনের পর উৎসবের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন ঘোষণা করা হয়।
উদ্বোধনী অধিবেশনে জামিলুর রেজা চৌধুরী বলেন, ‘১২ বছর আগে শুরু হওয়া গণিত অলিম্পিয়াড এখন দেশে ও বিদেশে একটি অনুকরণীয় দৃষ্টান্ত হয়ে উঠেছে। আমাদের শিক্ষার্থীরা ক্রমাগত আন্তর্জাতিক গণিত অলিম্পিয়াডে ভালো করছে।’ তিনি আগামী কয়েক বছরের মধ্যে বাংলাদেশের শিক্ষার্থীরা আন্তর্জাতিক গণিত অলিম্পিয়াড থেকে স্বর্ণপদক জয় করে আনবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
মো. এহতেশামুল হক খান বলেন, শিক্ষার্থীদের প্রাণের উৎসবের সঙ্গে যুক্ত থাকতে পেরে ডাচ্-বাংলা ব্যাংক গর্বিত ও আনন্দিত। এ উৎসব শিক্ষার্থীদের গণিতে দক্ষ হওয়ায় ভূমিকা রাখছে।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রথম আলোর পক্ষে সহযোগী সম্পাদক আব্দুল কাইয়ুম শুভেচ্ছা বক্তব্য দেন।
এরপর সকাল ১০টায় গণিত উৎসবের লিখিত পরীক্ষা শুরু হয়ে চলে বেলা সোয়া ১১টা পর্যন্ত। পরীক্ষা শেষে খুদে গণিতবিদেরা আবারও মাঠে এসে জড়ো হয়। গণিত উৎসবের গান দিয়ে শুরু হয় উৎসবের এ পর্বটি। এরপর একে একে আয়োজন করা হয় রম্য বিতর্ক, প্রশ্নোত্তর পর্ব ও রুবিকস কিউব প্রতিযোগিতা। গণিত ও বিজ্ঞানবিষয়ক বই দিয়ে সাজানো বইমেলা উৎসবে বিশেষ মাত্রা যোগ করেছে।
গণিতবিদ অধ্যাপক খোদাদাদ খান, অধ্যাপক লুৎফুজ্জামান, গণিত অলিম্পিয়াড কমিটির সদস্য অধ্যাপক মোহাম্মদ কায়কোবাদ, বিশিষ্ট বিজ্ঞানলেখক রেজাউর রহমান, প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের গণিত বিভাগের প্রধান আবদুল হামিদ খান প্রমুখ খুদে গণিতবিদদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন।
খোদাদাদ খান খুদে গণিতবিদদের উদ্দেশে বলেন, ‘তোমাদের চোখে গণিত নিয়ে যে স্বপ্ন দেখছি, তা বৃদ্ধ বয়সে আমাকে আবারও স্বপ্ন দেখতে উদ্বুব্ধ করছে। আশা করছি, গণিতের চিন্তা ও যুক্তি তোমাদের মেধাকে আরও শাণিত করবে।’
মোহাম্মদ কায়কোবাদ বলেন, শিক্ষার্থীদের মন থেকে গণিত নিয়ে ভয় দূর করছে গণিত উৎসব। উৎসবে অংশগ্রহণকারী সবাইকে যে বড় গণিতবিদ হতে হবে তা নয়। গণিতের যুক্তি জীবনের সব ক্ষেত্রেই জরুরি।
এরপর রেসিডেনসিয়াল মডেল কলেজের উপাধ্যক্ষ ফেরদৌস আরা বেগম, এভারেস্ট বিজয়ী মুসা ইব্রাহীম, বাংলাদেশের পক্ষে আন্তর্জাতিক গণিত অলিম্পিয়াডে ব্রোঞ্জ বিজয়ী সামিন রিয়াসাত প্রমুখ শুভেচ্ছা বক্তব্য দেন। গণিত অলিম্পিয়াড কমিটির সহসভাপতি মুনিবুর রহমান চৌধুরী, সদস্য অধ্যাপক আনোয়ার হোসেন, বাংলাদেশ অ্যাস্ট্রোনমিক্যাল সোসাইটির সাধারণ সম্পাদক এফ আর সরকার, প্রথম আলোর সহযোগী সম্পাদক আনিসুল হক, বাংলাদেশ গণিত দলের কোচ মাহবুব মজুমদার প্রমুখ উৎসবে উপস্থিত ছিলেন। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন গণিত অলিম্পিয়াডের একাডেমিক কাউন্সেলর তামিম শাহিরয়ার।
বেলা তিনটা বাজার কয়েক মিনিট আগে শুরু হয় ফলাফল ঘোষণা। এর আগে গণিত অলিম্পিয়াড কমিটির সাধারণ সম্পাদক মুনির হাসান জানিয়ে দেন, ঢাকা অঞ্চলের এবারের আয়োজনে চারটি ক্যাটাগরিতে ঢাকা, গাজীপুর ও মানিকগঞ্জ—এ তিন জেলার ১৮৪টি স্কুলের তৃতীয় থেকে দ্বাদশ শ্রেণীর দুই হাজার ২১৮ জন শিক্ষার্থী অংশ নিয়েছে, এটি অংশগ্রহণকারীর বিগত সব রেকর্ড ভেঙে দিয়েছে। উৎসব সফল করার জন্য কাজ করেছেন ৩০০ স্বেচ্ছাসেবক। পরীক্ষা হলে দায়িত্ব পালনকারীর সংখ্যা ১৪৩। পরীক্ষার্থীদের খাতা দেখার কাজ করেছেন ১২০ জন।
অংশগ্রহণকারীদের মধ্য থেকে ১৬৪ জনকে পুরস্কৃত করা হয়। এই ১৬৪ জন দেশের আরও ২১টি আঞ্চলিক গণিত উৎসবে বিজয়ীদের সঙ্গে ১৪ ও ১৫ ফেব্রুয়ারি ঢাকার আসাদগেটসংলগ্ন সেন্ট যোসেফ হায়ার সেকেন্ডারি স্কুলে অনুষ্ঠেয় জাতীয় গণিত উৎসব ২০১৪ ও দ্বাদশ বাংলাদেশ গণিত অলিম্পিয়াডে অংশ নেবে এবং সেখান থেকে নির্বাচিত বাংলাদেশ গণিত দল যাবে দক্ষিণ আফ্রিকায় অনুষ্ঠেয় ৫৫তম আন্তর্জাতিক গণিত অলিম্পিয়াডে (আইএমও) অংশ নিতে।

ঢাকা আঞ্চলিক গণিত উৎসব আগামীকাল ১ ফেব্রুয়ারি শনিবার

আগামীকাল শনিবার অনুষ্ঠিত হবে ঢাকা আঞ্চলিক গণিত উৎসব। ডাচ্-বাংলা ব্যাংক লিমিটেডের পৃষ্ঠপোষকতায় ও প্রথম আলোর ব্যবস্থাপনায় বাংলাদেশ গণিত অলিম্পিয়াড কমিটি এই উৎসবের আয়োজন করেছে। সকাল নয়টায় জাতীয় সংগীতের সঙ্গে জাতীয় পতাকা উত্তোলনের মধ্য দিয়ে উৎসবের উদ্বোধন করবেন ঢাকা রেসিডেনসিয়াল মডেল কলেজের উপাধ্যক্ষ সুলতান উদ্দিন আহমেদ।
চলতি বছর দক্ষিণ আফ্রিকায় অনুষ্ঠেয় ৫৫তম আন্তর্জাতিক গণিত অলিম্পিয়াডের (আইএমও) জন্য বাংলাদেশ গণিত দল নির্বাচনের লক্ষ্যে এ বছর ২২টি শহরে আঞ্চলিক গণিত উৎসব অনুষ্ঠিত হচ্ছে। এর মধ্যে ঢাকার বাইরে সব কটি আঞ্চলিক উৎসব শেষ হয়েছে। এরই ধারাবাহিকতায় আগামীকাল ঢাকা রেসিডেনসিয়াল মডেল কলেজে অনুষ্ঠিত হচ্ছে ঢাকা আঞ্চলিক গণিত উৎসব।
ইতিমধ্যে ঢাকা উৎসবে অংশ নিতে প্রাইমারি, জুনিয়র, সেকেন্ডারি ও হায়ার সেকেন্ডারি ক্যাটাগরিতে মানিকগঞ্জ, গাজীপুর ও ঢাকার দেড় শতাধিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রায় দুই হাজার ৬০০ জন শিক্ষার্থী নিবন্ধন করেছে।
উৎসব শুরু হবে সকাল সাড়ে আটটায়। উৎসবে পরীক্ষার সময় মুঠোফোন ব্যবহার করা যাবে না। অলিম্পিয়াডে ক্যালকুলেটর ব্যবহার করা যাবে না। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের নির্ধারিত পোশাক পরে আসতে হবে। পরীক্ষার হলে প্রবেশপত্র, কলম ও পেনসিল সঙ্গে আনতে হবে।
উৎসবে খুদে গণিতবিদদের উৎসাহ জোগাতে উপস্থিত থাকছেন বাংলাদেশ গণিত অলিম্পিয়াড কমিটির সভাপতি অধ্যাপক জামিলুর রেজা চৌধুরী, সহসভাপতি অধ্যাপক মুহম্মদ জাফর ইকবাল, সদস্য অধ্যাপক মোহাম্মদ কায়কোবাদ, বিশিষ্ট গণিতবিদ অধ্যাপক খোদাদাদ খান, অধ্যাপক লুৎফুজ্জামান, বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের গণিত বিভাগের প্রধান অধ্যাপক আবদুল হাকিম খান, বিশিষ্ট বিজ্ঞানী রেজাউর রহমান, গণিত দলের কোচ মাহবুব মজুমদার, ডাচ্-বাংলা ব্যাংক লিমিটেডের সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট মো. এহতেশামুল হক খানসহ বিশিষ্টজনেরা।
উল্লেখ্য, ২২টি আঞ্চলিক গণিত উৎসবের বিজয়ীরা আগামী ১৪ ও ১৫ ফেব্রুয়ারি শুক্র ও শনিবার ঢাকার আসাদগেটসংলগ্ন সেন্ট যোসেফ হায়ার সেকেন্ডারি স্কুলে অনুষ্ঠেয় জাতীয় গণিত উৎসব ২০১৪ ও দ্বাদশ বাংলাদেশ গণিত অলিম্পিয়াডে অংশ নেবে।

১৭ তারিখ অনুষ্ঠিত ৮ আঞ্চলিক গণিত উৎসবের খবর

 


 শীতের সকাল। কনকনে শীত। ঘন কুয়াশায় ঢাকা পড়েছে আকাশ। কোথাও কোথাও কুয়াশা ভেদ করে সূর্যের উঁকিঝুঁকি। রোদ-কুয়াশার লুকোচুরি। মাঘের শিশিরভেজা এই সকাল আরও সিক্ত হলো হাজারো শিক্ষার্থীর উচ্ছ্বাসে।বিপুল উৎসাহ-উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে গতকাল শুক্রবার দেশের আটটি অঞ্চলে ডাচ্-বাংলা ব্যাংক-প্রথম আলো গণিত উৎসব শুরু হয়েছে। আঞ্চলিক পর্বের এ উৎসবে অংশ নিয়ে খুদে গণিতবিদেরা উচ্ছ্বসিত। তাদের চোখেমুখে গণিতজয়ের স্বপ্ন।
এ উৎসবের আয়োজক বাংলাদেশ গণিত অলিম্পিয়াড কমিটি। উৎসবের পৃষ্ঠপোষক ডাচ্-বাংলা ব্যাংক লিমিটেড, সার্বিক ব্যবস্থাপনায় প্রথম আলো। উৎসবের স্লোগান ‘গণিত শেখো, স্বপ্ন দেখো’।
উৎসবের প্রথম দিনে রংপুর, ঝিনাইদহ, যশোর, ফরিদপুর, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, ময়মনসিংহ, ফেনী ও রাঙামাটি অঞ্চলে অলিম্পিয়াড অনুষ্ঠিত হয়। প্রতিটি অঞ্চলেই জাতীয় সংগীতের সঙ্গে জাতীয় পতাকা, আন্তর্জাতিক গণিত অলিম্পিয়াড ও বাংলাদেশ গণিত অলিম্পিয়াডের পতাকা উত্তোলন করা হয়। উৎসবে শিক্ষার্থীদের মূল্যায়ন পরীক্ষার পাশাপাশি ছিল কুইজ প্রতিযোগিতা, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও প্রশ্নোত্তর পর্ব।
‘দেশের আয়তন ঘনমিটারে না করে বর্গমিটারে প্রকাশ কেন’, ‘রোমান সংখ্যায় জিরো নেই কেন’, ‘পদার্থ ও রসায়নে গণিত প্রয়োজন হয়, জীববিজ্ঞানে কেন প্রয়োজন হয় না’, ‘শূন্য যৌগিক না মৌলিক’—শিক্ষার্থীদের এমন আরও অনেক বুদ্ধিদীপ্ত, সৃজনশীল ও যুক্তিনির্ভর মজার মজার জিজ্ঞাসায় জমে ওঠে প্রশ্নোত্তর পর্ব। অতিথিরাও উত্তর দেন উৎসাহ নিয়ে। ভালো প্রশ্নের সঙ্গে সঙ্গেই ছিল পুরস্কার।
উৎসবে বক্তারা বলেন, মানুষের উন্নতির জন্য দুটি বিষয় দরকার। একটি হলো ভাষাজ্ঞান, অন্যটি গণিতে দক্ষতা। কেউ কেউ বলেন, ‘গণিত বিশ্বময়, বিশ্ব গণিতময়। আমরা লেখাপড়া না শিখলেও গণিত আমাদের প্রয়োজন হয়।’ শিক্ষার্থীরা মুখস্থ, মিথ্যা ও মাদককে ‘না’ বলার শপথ নেয়।
অলিম্পিয়াডে সব অঞ্চলের বিজয়ীদের সনদ, ক্রেস্ট ও টি-শার্ট দেওয়া হয়। আমন্ত্রণপত্র দেওয়া হয় জাতীয় উৎসবের।
উৎসব আয়োজনে সহযোগিতা করেন প্রথম আলো বন্ধুসভার সদস্যরা।


রংপুর: রংপুর জিলা স্কুলের মাঠে উৎসবের শুরু সকাল নয়টায়। উদ্বোধন করেন রংপুর জিলা স্কুলের সহকারী প্রধান শিক্ষক মোফাজ্জল হোসেন। রংপুর, নীলফামারী, কুড়িগ্রাম, লালমনিরহাট ও জয়পুরহাটের বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের এক হাজার শিক্ষার্থী উৎসবে অংশ নেয়। প্রতিযোগিতায় বিজয়ী হয় মোট ৫৬ জন।
জেলা প্রশাসক ফরিদ আহাম্মদ তাঁর শুভেচ্ছা বক্তব্যে বলেন, প্রথম আলো প্রতিবছর গণিত উৎসব করে দেশের শিক্ষার্থীদের মধ্যে গণিত শেখার আন্দোলন জাগিয়ে দিয়েছে।
উৎসবে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের গণিত বিভাগের প্রধান হাফিজুর রহমান, ডাচ্-বাংলা ব্যাংক রংপুর শাখার ব্যবস্থাপক অপূর্ব রায় প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

রাঙামাটি: রাঙামাটি লেকার্স পাবলিক স্কুল ও কলেজে সকাল সাড়ে নয়টায় উৎসবের উদ্বোধন করেন রাঙামাটির অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) মুহাম্মদ মোস্তাফিজুর রহমান। উৎসবে রাঙামাটি ও খাগড়াছড়ির ২১টি প্রতিষ্ঠানের প্রায় ৬০০ শিক্ষার্থী অংশ নেয়। চারটি বিভাগে বিজয়ী হয় ৩০ জন।
উৎসবে ড্যাফোডিল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক জাবেদ মোর্শেদ, রাঙামাটি লেকার্স পাবলিক স্কুল ও কলেজের উপাধ্যক্ষ বৈশিলী রায়, রাঙামাটি সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ বাঞ্চিতা চাকমা, রাঙামাটি সরকারি মহিলা কলেজের অধ্যক্ষ মো. সদরুদ্দিন আহমেদ উপস্থিত ছিলেন। শিক্ষার্থীদের প্রশ্নের উত্তর দেন শিক্ষক মো. মনজু মিঞা, সনাতন দাস, মো. বশির আহমেদ, নূর মোহাম্মদ ও পরান্টু চাকমা।

যশোর: সকাল সাড়ে নয়টায় যশোর জিলা স্কুল প্রাঙ্গণে উৎসবের শুরু। উদ্বোধন করেন স্কুলের প্রধান শিক্ষক ফরিদুল ইসলাম। তিনি বলেন, একটি সুন্দর বিজ্ঞানমনস্ক জাতি গঠনের জন্য এই উৎসব গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখে চলেছে। দূর হয়েছে গণিতভীতি।
যশোর ও নড়াইলের ৭৬টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সাড়ে ৬০০ শিক্ষার্থী উৎসবে অংশ নেয়। এক ঘণ্টা ২৫ মিনিটের লিখিত পরীক্ষার মাধ্যমে চারটি বিভাগে ৩০ জনকে পুরস্কৃত করা হয়।উৎসবে গণিতবিদ অধ্যাপক এ এ কে এম লুৎফুজ্জামান, মাগুরার সরকারি হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী কলেজের অধ্যক্ষ এলিয়াস হোসেন, যশোরের ডাক্তার আবদুর রাজ্জাক মিউনিসিপ্যাল কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ জে এম ইকবাল হোসেন, ডাচ্-বাংলা ব্যাংক যশোর শাখার ব্যবস্থাপক শহিদুল ইসলাম প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।


ব্রাহ্মণবাড়িয়া: সকাল নয়টায় ব্রাহ্মণবাড়িয়ার অন্নদা সরকারি উচ্চবিদ্যালয়ের প্রাঙ্গণে উৎসবের উদ্বোধন করেন বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ফরিদা নাজমীন। উৎসবে ব্রাহ্মণবাড়িয়া, হবিগঞ্জ ও নরসিংদী জেলার ৫০টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রায় সাড়ে ৮০০ শিক্ষার্থী অংশ নেয়। মূল্যায়ন পরীক্ষায় ৪৫ জন শিক্ষার্থীকে বিজয়ী ঘোষণা করা হয়।
বক্তৃতা পর্বে ফরিদা নাজমীন বলেন, গণিতকে ভয় পাওয়ার দিন আর নেই। এখন সময় বিশ্বকে জয় করার। আরেক শিক্ষক চিন্ময় ভট্টাচার্য বলেন, গণিত হচ্ছে বিজ্ঞানের ভাষা। বিজ্ঞান ব্যাখ্যা করতে হলে গণিতের প্রয়োজন। অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য দেন আইডিয়াল রেসিডেনসিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ সোপানুল ইসলাম, বাংলাদেশ গণিত অলিম্পিয়াডের একাডেমিক কাউন্সিলর সৌমিত্র চক্রবর্তী। উপস্থিত ছিলেন ডাচ্-বাংলা ব্যাংক ব্রাহ্মণবাড়িয়া শাখার ব্যবস্থাপক জহিরুল হক, বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের অধ্যাপক মোহাম্মদ কায়কোবাদ প্রমুখ।

ফরিদপুর: ফরিদপুর জিলা স্কুল প্রাঙ্গণে সকাল সাড়ে নয়টায় উৎসবের উদ্বোধন করেন স্কুলের প্রধান শিক্ষক দুর্গারানী সিকদার। ফরিদপুর অঞ্চলের উৎসবে গোপালগঞ্জ, মাদারীপুর, শরীয়তপুর, রাজবাড়ী ও ফরিদপুরের ৪৩টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ৭৪১ জন শিক্ষার্থী অংশ নেয়। উৎসবে ৪৪ জনকে বিজয়ী ঘোষণা করা হয়।
উৎসবে ফরিদপুরের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মো. জাহাঙ্গীর হোসেন, প্রবীণ শিক্ষক জগদীশ চন্দ্র ঘোষ, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক আ স ম আবদুল হক, সরকারি রাজেন্দ্র কলেজের গণিত বিভাগের প্রভাষক পরিমল কুমার কুণ্ডু, বাংলাদেশ গণিত অলিম্পিয়াডের একাডেমিক কাউন্সিলর তামিম শাহরীয়ার প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। সরকারি রাজেন্দ্র কলেজের গণিত বিভাগের প্রধান অধ্যাপক হরিদাস হালদার তাঁর বক্তৃতায় বলেন, ‘গণিত বিশ্বময়, বিশ্ব গণিতময়। আমরা লেখাপড়া না শিখলেও গণিত আমাদের প্রয়োজন হয়।’

ফেনী: ফেনী সরকারি বালিকা উচ্চবিদ্যালয়ের মাঠে সকাল ১০টায় উৎসবের উদ্বোধন করেন বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সুব্রত নাথ। এরপর শুরু হয় মূল প্রতিযোগিতা। এতে নোয়াখালী, ফেনী ও লক্ষ্মীপুরের বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের আট শতাধিক শিক্ষার্থী অংশ নেয়। চারটি বিভাগে ৪৬ জনকে বিজয়ী ঘোষণা করা হয়।
উৎসবে অন্যান্যের মধ্যে ফেনীর জেলা প্রশাসক মো. হুমায়ুন কবির খোন্দকার, অধ্যাপক ফসিউল আলম, ডাচ্্-বাংলা ব্যাংক ফেনী শাখার ব্যবস্থাপক মো. সফিউল আজম ভূঞা, বাংলাদেশ গণিত অলিম্পিয়াডের একাডেমিক কাউন্সিলর মাহমুদুল হাসান প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

 

 

 

 

ঝিনাইদহ: সকাল থেকেই কুয়াশাছন্ন ঝিনাইদহ। কুয়াশা ভেদ করে ঝিনাইদহ ওয়াজির আলী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের মাঠে হাজির প্রায় ৮০০ খুদে গণিতবিদ। তারা এসেছে ঝিনাইদহ, কুষ্টিয়া, চুয়াডাঙ্গা, মেহেরপুর ও মাগুরা জেলা থেকে।
সাড়ে নয়টায় উৎসবের উদ্বোধন করেন যশোর শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান আমিরুল ইসলাম খান। তিনি বলেন, মানুষের উন্নতির জন্য দুটি জিনিস দরকার। একটি হলো ভাষায় দক্ষতা, অন্যটি হলো গণিতে পারঙ্গমতা।
এরপর এক ঘণ্টা ১৫ মিনিটের পরীক্ষায় চারটি বিভাগে মোট ৫০ জন বিজয়ী হয়। সেরাদের সেরা হয়েছে কুষ্টিয়া জিলা স্কুলের নবম শ্রেণীর ছাত্র তাসনিম ফারহান।
উৎসবে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন ওয়াজির আলী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক হাবিবুর রহমান, ওয়াজির আলী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সাইফুল ইসলাম, গণিত অলিম্পিয়াডের সাধারণ সম্পাদক মুনির হাসান, প্রবীণ শিক্ষক আলতাফ হোসেন প্রমুখ।

 

ময়মনসিংহ: ময়মনসিংহ জিলা স্কুলের মাঠে সকাল নয়টায় উৎসবের উদ্বোধন করেনময়মনসিংহের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও উন্নয়ন) মো. ফিরোজ আহমেদ। উৎসবে ময়মনসিংহ, জামালপুর, শেরপুর, টাঙ্গাইল, কিশোরগঞ্জ ও নেত্রকোনার ৫২টি স্কুলের এক হাজার প্রতিযোগী অংশ নেয়। বিজয়ী হয় ৫৯ জন।
উৎসবে জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের প্রধান শেখ সুজন আলী, ময়মনসিংহ জিলা স্কুলের সহকারী প্রধান শিক্ষক হাবিবুর রহমান, শেরপুর সরকারি কলেজের অধ্যাপক মজিবুর রহমান, বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রভাষক অভীক রায়, ডাচ্-বাংলা ব্যাংকের ময়মনসিংহ শাখার ব্যবস্থাপক মো. সামসুজ্জামান প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

 

 

সফল ভাবে শেষ হলো ৮ টি আঞ্চলিক গণিত উৎসব

সকাল থেকে উৎসব শুরু হয়ে শেষ দুপুরে বিজয়ীদের নাম ঘোষণার মাধ্যমে আজকে অনুষ্ঠিত ৮ টি আঞ্চলিক গণিত উৎসব শেষ হয়েছে।
সব আঞ্চলিক উৎসবের চার ক্যাটাগরির সকল বিজয়ীকে দেওয়া হয় মেডেল, সার্টিফিকেট ও হলুদ রঙের টি শার্ট। সঙ্গে ছিল আগামী ১৪ ও ১৫ ফেব্রুয়ারি ঢাকায় অনুষ্ঠেয় জাতীয় গণিত উৎসব ২০১৪ এবং দ্বাদশ বাংলাদেশ গণিত অলিম্পিয়াডের আমন্ত্রণ পত্র।
এছাড়াও দেয়া হয় প্রত্যেক বিজয়ীর শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রধানের জন্য একটি চিঠি এবং একটি বিজয়ী ফরম।
শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রধানের চিঠির নির্দ্দিষ্ট অংশে প্রধানের নাম এবং শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের নাম লিখে জমা দিয়ে আসবে।
এবং বিজয়ী ফরমটি পূরণ করে ফরমে থাকা গণিত উৎসবের ঠিকানায় দ্রত পাঠাতে হবে।

সকল বিজয়দেরকে অভিনন্দন !

উল্লেখ্র, আজ যে আটটি অঞ্চলে গণিত উৎসব অনুষ্ঠিত হয়েছে সেগুলো হচ্ছে রংপুর, ঝিনাইদহ, যশোর, ফরিদপুর, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, ময়মনসিংহ, ফেনী ও রাঙামাটি। এরপর ক্রমান্বয়ে ২৪, ২৫ জানুয়ারি ও ০১ ফেব্রুয়ারি বাকী অঞ্চলগুলোতে উৎসব অনুষ্ঠিত হবে।
এছাড়া আগামী ১৪ ও ১৫ ফেব্রুয়ারি ঢাকায় অনুষ্ঠিত হবে জাতীয় গণিত উৎসব ২০১৪ এবং দ্বাদশ বাংলাদেশ গণিত অলিম্পিয়াড।

 

সব অঞ্চলে উদ্বোধনী ও পরীক্ষা পর্ব শেষ


 আজ সকাল ৯টা থেকে ৮টি অঞ্চলে গণিত উৎসব ২০১৪-এর আঞ্চলিক উৎসব শুরু হয়। ঠান্ডা ও কোয়াশার কারনে কয়েকটি স্থানে উৎসব শুরু করতে একটু বিলম্ব হয়। এর অাগে ভোর থেকে প্রতিটি ভেন্যুতে ভেন্যু জেলা এবং তার অন্তভূর্ক্ত বিভিন্ন জেলাগুলো থেকে ব্যাক্তিগত ভাবে কেউবা দলগতভাবে উৎসব স্থলে এসে উপস্থিত হয় । পরে ক্যাটাগরি অনুযায়ী ভেন্যু মাঠে পতাকা মঞ্চের পাশে সবাইকে লাইনগতভাবে দাড় করানো হয় এবং পরে জাতীয় সংগীতের সঙ্গে বাংলাদেশের জাতীয় পতাকা এবং বাংলাদেশ গণিত অলিম্পিয়াড ও আন্তজার্তিক গণিত অলিম্পিয়াডের পতাকা উত্তোলনের মাধ্যমে শুরু হয় সব অঞ্চলের উৎসব।
উদ্বোধনীর পর মাঠ থেকে সবাইকে নিয়ে যাওয়া হয় ক্লাস রুমে। সেখানে ১.১৫ মনিটির একটি পরীক্ষায় (গণিত অলিম্পিয়াডে) অংশ নেয় শিক্ষার্থীরা।
তারপর ক্লাস রুম থেকে মাঠে এসে শিক্ষার্থীরা। অংশ নেয় বন্ধুত্বা পর্বে।
এখন গণিতের গান দিয়ে শুরু হয়েছে প্রশ্নোত্তর পর্ব

আপডেট আসছে.....

আজ শুরু হচ্ছে গণিত উৎসব

আজ শুক্রবার শুরু হচ্ছে ডাচ্-বাংলা ব্যাংক-প্রথম আলো গণিত উৎসব ২০১৪ ও দ্বাদশ বাংলাদেশ গণিত অলিম্পিয়াডের আঞ্চলিক উৎসব। শিক্ষার্থীদের গাণিতিক মেধার উৎকর্ষ বৃদ্ধি এবং দক্ষিণ আফ্রিকায় অনুষ্ঠেয় ৫৫তম আন্তর্জাতিক গণিত অলিম্পিয়াডে (আইএমও) অংশগ্রহণের জন্য বাংলাদেশ গণিত দলের সদস্য নির্বাচনের লক্ষ্য নিয়ে এ উৎসব শুরু হচ্ছে।
এ উৎসবের আয়োজক বাংলাদেশ গণিত অলিম্পিয়াড কমিটি। উৎসবের পৃষ্ঠপোষক ডাচ্-বাংলা ব্যাংক; আর সার্বিক ব্যবস্থাপনায় প্রথম আলো। এবার ২২টি অঞ্চলে আঞ্চলিক গণিত উৎসব অনুষ্ঠিত হবে। এর মধ্যে আজ একযোগে আটটি অঞ্চলে উৎসব শুরু হবে। এই অঞ্চলগুলো হলো রংপুর, ঝিনাইদহ, যশোর, ফরিদপুর, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, ময়মনসিংহ, ফেনী ও রাঙামাটি। এরপর ক্রমান্বয়ে বাকি অঞ্চলগুলোতে উৎসব অনুষ্ঠিত হবে।
২০০৩ সাল থেকে এই অলিম্পিয়াডের আয়োজন হয়ে আসছে।
২২টি আঞ্চলিক উৎসবের বিজয়ী শিক্ষার্থীরা আগামী ১৪ ও ১৫ ফেব্রুয়ারি ঢাকায় অনুষ্ঠেয় জাতীয় গণিত উৎসব ২০১৪ ও দ্বাদশ বাংলাদেশ গণিত অলিম্পিয়াডে অংশ নেবে। দ্বাদশ বাংলাদেশ গণিত অলিম্পিয়াডের সেরাদের নিয়ে আয়োজন করা হবে দশম বাংলাদেশ গণিত ক্যাম্পের। বড়দের সঙ্গে সেই ক্যাম্পে যোগ দেবে জুনিয়র গণিতবিদেরাও। এরপর গণিত ক্যাম্পের সামগ্রিক পারফরম্যান্সের ভিত্তিতে গঠিত হবে বাংলাদেশ গণিত দল। এই দল এ বছরের জুলাইয়ে দক্ষিণ আফ্রিকায় অনুষ্ঠেয় ৫৫তম আইএমওতে যোগ দেবে।
উৎসব শুরু হবে সকাল সাড়ে আটটায়। উৎসবে পরীক্ষার সময় মুঠোফোন ব্যবহার করা যাবে না। অলিম্পিয়াডে ক্যালকুলেটর ব্যবহার করা যাবে না। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের নির্ধারিত পোশাক পরে আসতে হবে। পরীক্ষার হলে প্রবেশপত্র, কলম ও পেনসিল সঙ্গে নিয়ে আসতে হবে। গণিত উৎসবের সর্বশেষ হালনাগাদ তথ্য জানা যাবে প্রথম আলোর অনলাইনে (www.prothom-alo.com)।
গণিত উৎসবের সমন্বয়ক বায়েজিদ ভূঁইয়া জানান, গতবারের তুলনায় এবার পাঁচটি উৎসব বেশি হচ্ছে। উৎসব আয়োজনের যাবতীয় প্রস্তুতি সম্পন্ন করা হয়েছে।