রাজশাহী, মাদারীপুর, নওগাঁ ও রাজবাড়ীতে গণিত উৎ​সব অনুষ্ঠিত

কুয়াশাচ্ছন্ন আকাশে বেলুন-ফেস্টুনের সঙ্গে সঙ্গে গণিতের ভয়কেও উড়িয়ে দেওয়ার মধ্য দিয়ে আজ বৃহস্পতিবার রাজশাহী, মাদারীপুর, নওগাঁ ও রাজবাড়ী দিয়ে শুরু হয়েছে ডাচ-বাংলা ব্যাংক-প্রথম আলো আঞ্চলিক গণিত উৎসব। ডাচ-বাংলা ব্যাংক লিমিটেডের পৃষ্ঠপোষকতায় ও প্রথম আলোর ব্যবস্থাপনায় উৎসব আয়োজন করে বাংলাদেশ গণিত অলিম্পিয়াড কমিটি। উৎসব আয়োজনে সহযোগিতা করছেন প্রথম আলোর বন্ধুসভার বন্ধুরা।

 

ঘন কুয়াশায় সূর্যের আলোর দেখা নেই। এর মধ্যেই গণিত উৎসবে অংশগ্রহণের জন্য হাজির হয়েছে শিক্ষার্থীরা। বেলুন-ফেস্টুন উড়িয়ে উৎসবের উদ্বোধন করছেন অতিথিরা। রাজশাহী শিক্ষা বোর্ড মডেল স্কুল অ্যান্ড কলেজ চত্বর, রাজশাহী, ২১ ডিসেম্বর। ছবি: শহীদুল ইসলাম


রাজশাহী:
 সকাল সাড়ে আটটায় রাজশাহী শিক্ষা বোর্ড মডেল স্কুল অ্যান্ড কলেজ প্রাঙ্গণে জাতীয় সংগীতের সঙ্গে জাতীয় পতাকা, জাতীয় গণিত উৎসব ও আন্তর্জাতিক গণিত অলিম্পিয়াডের পতাকা উত্তোলনের মাধ্যমে উৎসবের শুরু হয়। শিক্ষা বোর্ড মডেল স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ তাইফুর রহমান জাতীয় পতাকা, ডাচ-বাংলা ব্যাংক রাজশাহী শাখার ব্যবস্থাপক নজরুল ইসলাম জাতীয় গণিত অলিম্পিয়াডের পতাকা এবং বাংলাদেশ গণিত অলিম্পিয়াড কমিটির সাধারণ সম্পাদক মুনির হাসান আন্তর্জাতিক গণিত অলিম্পিয়াডের পতাকা উত্তোলন করেন। এরপর বেলুন-ফেস্টুন উড়িয়ে অতিথিরা উৎসবের উদ্বোধন করেন। বেলুন ওড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে উড়ে যায় গণিতের ভয়ও। রাজশাহী আঞ্চলিক গণিত উৎসবে রাজশাহী, নাটোর ও চাঁপাইনবাবগঞ্জের বিভিন্ন স্কুল ও কলেজের এক হাজারের বেশি শিক্ষার্থী অংশ নিচ্ছে।

উদ্বোধনের পর শুরু হয় পরীক্ষার পর্ব। প্রাথমিক, নিম্নমাধ্যমিক, মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক—এই চার বিভাগে ভাগ হয়ে শিক্ষার্থীরা পরীক্ষায় অংশ নেয়। এরপর প্রশ্ন-উত্তর পর্ব ও সমাপনী অনুষ্ঠান। এদিনই আঞ্চলিক উৎসবের বিভিন্ন ক্যাটাগরিতে বিজয়ীদের নাম ঘোষণা করা হবে। আঞ্চলিক পর্বের বিজয়ীরা সুযোগ পাবে জাতীয় গণিত উৎসবে অংশ নেওয়ার। জাতীয় পর্যায়ের বিজয়ীরা যাবে আন্তর্জাতিক গণিত অলিম্পিয়াডে।
উদ্বোধনী বক্তব্যে ডাচ-বাংলা ব্যাংক রাজশাহী শাখার ব্যবস্থাপক নজরুল ইসলাম বলেন, আজকে শিক্ষার্থীরা এখানে হাজির হয়েছে তাদের মেধার বিকাশ ঘটানোর জন্য। ডাচ-বাংলা ব্যাংক তাদের মেধার বিকাশে সহযোগিতা করছে মাত্র। শুধু গণিত অলিম্পিয়াড আয়োজন নয়, আরও বিভিন্নভাবে শিক্ষার্থীদের মেধার বিকাশে কাজ করছে ডাচ-বাংলা ব্যাংক। তিনি বলেন, ‘আমাদের শিক্ষার্থীরা আন্তর্জাতিক গণিত অলিম্পিয়াডে অংশগ্রহণের মাধ্যমে দেশের নাম উজ্জ্বল করছে।’ ভবিষ্যতেও শিক্ষার্থীরা তাদের মেধার স্বাক্ষর রেখে বিশ্বের মধ্যে দৃষ্টান্ত স্থাপন করবে বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
উৎসবের উদ্বোধন ঘোষণা করে রাজশাহী শিক্ষা বোর্ড মডেল স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ তাইফুর রহমান বলেন, আগে গণিত সম্পর্কে অনেক ভীতি থাকলেও শিক্ষার্থীরা এখন সেটা জয় করেছে। তারা গণিতের পরীক্ষায় এখন ১০০ নম্বরের মধ্যে ১০০-ই পায়। শিক্ষার্থীরা এই ধারাবাহিকতা অব্যাহত রেখে গণিতের মাধ্যমে বিশ্বে বাংলাদেশকে তুলে ধরবে বলে তিনি বিশ্বাস করেন। এ ধরনের আয়োজনের জন্য তিনি আয়োজকদের ধন্যবাদ জানান।

নওগাঁ গণিত উৎসবের উদ্বোধনী পর্ব। নওগাঁ কে ডি সরকারি উচ্চবিদ্যালয় চত্বর, নওগাঁ, ২১ ডিসেম্বর। ছবি: প্রথম আলো

 

নওগাঁ: নওগাঁ কে ডি সরকারি উচ্চবিদ্যালয়ের মাঠে সকালে ডাচ-বাংলা ব্যাংক-প্রথম আলো আঞ্চলিক গণিত উৎসবের উদ্বোধন করা হয়েছে। জাতীয় সংগীত পরিবেশনের মধ্য দিয়ে সকাল নয়টায় শুরু হয় উদ্বোধনী পর্ব। জাতীয় সংগীতের সঙ্গে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করেন নওগাঁর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার রাশিদুল হক। তিনি বেলুন ও ফেস্টুন উড়িয়ে উৎসবের উদ্বোধন করেন। উদ্বোধনী পর্বে আন্তর্জাতিক গণিত অলিম্পিয়াডের পতাকা উত্তোলন করেন নওগাঁ কে ডি সরকারি উচ্চবিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক নাসরিন বানু। বাংলাদেশ গণিত অলিম্পিয়াডের পতাকা উত্তোলন করেন ব্যাংকের নওগাঁ শাখার ব্যবস্থাপক মহসিন আলী।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার রাশিদুল হক বলেন, ‘গণিত একটি কঠিন বিষয়। গণিত উৎসব আয়োজনের কারণে গণিত এখন আনন্দের পাঠে পরিণত হয়েছে। গণিত নিয়ে শিক্ষার্থীরা স্বপ্ন দেখছে। এই স্বপ্ন দেখানোর কাজটি করে যাওয়ার জন্য প্রথম আলো ও ডাচ-বাংলা ব্যাংককে ধন্যবাদ জানাই।’
অংশগ্রহণকারী শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে আরও বক্তব্য দেন স্থানীয় সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠন একুশে পরিষদ নওগাঁর সভাপতি ডি এম আবদুল বারী ও নওগাঁ বন্ধুসভার সভাপতি তসলিমা ফেরদৌস। উদ্বোধনী অনুষ্ঠান শেষে পরীক্ষা দেয় শিক্ষার্থীরা। আজকের এই আঞ্চলিক উৎসবে নওগাঁ ও জয়পুরহাট জেলার শিক্ষার্থীরা অংশ নিচ্ছে।

রাজবাড়ী: সকাল সাড়ে নয়টায় শহরের ইয়াছিন উচ্চবিদ্যালয়ের মাঠে ডাচ-বাংলা ব্যাংক-প্রথম আলো গণিত উৎসব উদ্বোধন করা হয়েছে। নয়টার আগেই শিক্ষার্থীদের পদচারণায় মুখরিত হয়ে ওঠে বিদ্যালয়ের মাঠ। জাতীয় সংগীতের সঙ্গে জাতীয় পতাকা, বাংলাদেশ গণিত অলিম্পিয়াডের পতাকা এবং আন্তর্জাতিক গণিত অলিম্পিয়াডের পতাকা উত্তোলন করা হয়।
জাতীয় পতাকা উত্তোলন করেন ইয়াছিন উচ্চবিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সাঈদা খানম, গণিত অলিম্পিয়াডের পতাকা উত্তোলন করেন ডাচ-বাংলা ব্যাংক রাজবাড়ী শাখার ব্যবস্থাপক আমিনুল ইসলাম মিয়া ও আন্তর্জাতিক গণিত অলিম্পিয়াডের পতাকা উত্তোলন করেন জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ফকীর আবদুল জব্বার। শুভেচ্ছা বক্তব্য দেন পৌর মেয়র ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানটির ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি মহম্মদ আলী চৌধুরী। এরপর অতিথিরা রঙিন বেলুন উড়িয়ে উৎসবের উদ্বোধন করেন।
রাজবাড়ী আঞ্চলিক গণিত অলিম্পিয়াডে ফরিদপুর ও রাজবাড়ীর বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা অংশগ্রহণ করছে।

মাদারীপুর মাদারীপুরে প্রথম বারের মতো ডাচ্-বাংলা ব্যাংক প্রথম আলো গণিত উৎসব ২০১৮ অনুষ্ঠিত হয়েছে। বৃহস্পতিবার সকালে সরকারি ডনোভান বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে এ উৎসবের আয়োজন করা হয়। এতে ২১৪ জন শিক্ষার্থীর অংশগ্রহণে করেন।মাদারীপুরে গণিত উৎসবে প্রাথমিক পর্যায় অংশ নেয় ৩৩ জন, জুনিয়ার পর্যায় ৭৮জন, মাধ্যমিক পর্যায় ৮৯ জন এবং উচ্চ মাধ্যমিক পর্যায় ১৪ শিক্ষার্থী অংশ নেয়।সকাল ৯টায় দুই শতাধিক শিক্ষার্থীর অংশগ্রহণে জাতীয় সংগীতের সঙ্গে জাতীয় পতাকা, বাংলাদেশ গণিত অলিম্পিয়াডের পতাকা এবং আন্তর্জাতিক গণিত অলিম্পিয়াডের পতাকা উত্তোলন করা হয়। পতাকা উত্তোলন করেন সরকারি ডনোভান বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক রতন কুমার খান এবং ডাচ্- বাংলা ব্যাংক মাদারীপুর ব্যাঞ্চের ম্যানেজার শাহিনূর রহমান। পতাকা উত্তোলন শেষে অতিথারা শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্য করে শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন। পরে মাদারীপুর বন্ধুসভার সভাপতি কুমার লাভলু সরকারি ডনোভান বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের হাতে শুভেচ্ছা স্মারক তুলে দেন।

Related Articles