Blog

Latest articles

Explore our latest blog post where we share articles, news, insights, and more!

যশোর থেকে শুরু আঞ্চলিক গণিত উৎসবের

যশোর থেকে শুরু আঞ্চলিক গণিত উৎসবের
জাতীয় সংগীতের মধ্য দিয়ে শুরু হয় গণিত উৎসব। আজ সকালে যশোর জিলা স্কুল মাঠে

 ‘গণিত শেখো, স্বপ্ন দেখো’ স্লোগানে আজ বৃহস্পতিবার যশোর থেকে শুরু হয়েছে ডাচ্‌-বাংলা ব্যাংক-প্রথম আলো গণিত উৎসব ২০২৩-এর আঞ্চলিক উৎসবের। সকাল সাড়ে নয়টায় ঘন কুয়াশার মধ্যে জাতীয় সংগীতের সুরে পতাকা উত্তোলনের মাধ্যমে জেলা প্রশাসক তমিজুল ইসলাম খান এই উৎসবের উদ্বোধন ঘোষণা করেন।

অনুষ্ঠানে যশোর সরকারি বালিকা উচ্চবিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা জাতীয় সংগীত পরিবেশন করে। এ সময় জেলা প্রশাসক তমিজুল ইসলাম খান জাতীয় পতাকা, যশোর জিলা স্কুলের প্রধান শিক্ষক শোয়াইব হোসেন বাংলাদেশ গণিত অলিম্পিয়াডের পতাকা ও যশোরে প্রথম আলোর সাংবাদিক মনিরুল ইসলাম আন্তর্জাতিক গণিত অলিম্পিয়াডের পতাকা উত্তোলন করেন।

উদ্বোধনী পর্বে জেলা প্রশাসক তমিজুল ইসলাম খান বলেন, ‘বছরের শুরুতেই গণিত চর্চার মতো অত্যন্ত কঠিন ও প্রয়োজনীয় একটি অধ্যবসায়ের সঙ্গে শিক্ষার্থীদের পরিচয় করিয়ে দিচ্ছে প্রথম আলো। এটি নিঃসন্দেহে প্রথম আলোর একটি ভালো কাজ। বিজ্ঞানভিত্তিক সৃজনশীল মেধা বিকাশে গণিত চর্চার বিকল্প নেই।’ প্রথম আলোর এই উদ্যোগকে তিনি স্বাগত জানান।

পরে যশোর, মাগুরা ও নড়াইল জেলার চার শতাধিক শিক্ষার্থীর অংশগ্রহণে পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। পরীক্ষা শেষে একদিকে পরীক্ষার উত্তরপত্র মূল্যায়নের কাজ চলে, অন্যদিকে মিলনায়তনে চলে প্রশ্নোত্তর পর্বের অনুষ্ঠান।

মাইনাসে মাইনাসে কেন প্লাস হয়, যোগ ও গুণের মধ্যে পার্থক্য কী, গণিত ও বিজ্ঞানের জটিল বিষয়ে গভীরভাবে চিন্তা করলে ঘুম ঘুম ভাব আসে কেন, গণিতভীতি দূর করতে কী কী করা দরকার, গণিত উৎসবের তাৎপর্য কী—শিক্ষার্থীদের এমন অনেক প্রশ্নের উত্তর দেন মঞ্চে থাকা অতিথিরা। অতিথি হিসেবে ছিলেন যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের চেয়ারম্যান সৈয়দ মো. গালিব, একই বিশ্ববিদ্যালয়ের কলা ও সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের ডিন আবদুল্লাহ আল মামুন, বাংলাদেশ গণিত অলিম্পিয়াড কমিটির সাধারণ সম্পাদক এবং প্রথম আলোর ডিজিটাল ট্রান্সফরমেশন ও যুব কার্যক্রমের প্রধান সমন্বয়কারী মুনির হাসান, যশোর সরকারি মাইকেল মধুসূদন কলেজের পদার্থবিদ্যা বিভাগের প্রভাষক তৌহিদুর রহমান ও মাগুরার রামগ্রাম সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের গণিতের সহকারী শিক্ষক সোনালী হালদার।

অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ গণিত অলিম্পিয়াড কমিটির সাধারণ সম্পাদক মুনীর হাসান বলেন, ‘বাংলাদেশে এখন গণিত, পদার্থবিদ্যা, রসায়নবিদ্যা ও জীববিজ্ঞান বিষয়ে অলিম্পিয়াড অনুষ্ঠিত হচ্ছে। এসব কেন হয়? কারণ, আমরা বাংলাদেশের জয় দেখতে চাই। এসব অনুষ্ঠান শিক্ষার্থীদের বড় হতে স্বপ্ন দেখতে শেখায়।’ মা, মাটি ও দেশকে ভালোবাসা এবং মুখস্থ, মাদক ও মিথ্যাকে না বলার জন্য শিক্ষার্থীদের শপথ করান তিনি।

ভেন্যু স্মারক গ্রহণ করেন এবং শুভেচ্ছা বক্তব্য দেন যশোর জিলা স্কুলের প্রধান শিক্ষক শোয়াইব হোসেন। ‘ফাগুন হাওয়ায় হাওয়ায় করেছি যে দান’ গান গেয়ে শোনান প্রথম আলো বন্ধুসভার সাধারণ সম্পাদক সৌমেন্দ্র গোস্বামী।

আজ যশোর আঞ্চলিক গণিত উৎসবে সোয়া এক ঘণ্টার পরীক্ষায় ৩১ শিক্ষার্থী বিজয়ী হয়ে পুরস্কার হিসেবে মেডেল ও সনদপত্র জিতে নিয়েছে। তারা ঢাকায় জাতীয় উৎসবে যোগ দেওয়ার কৃতিত্ব অর্জন করেছে।

এই ৩১ জনের একজন উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষা দিয়ে ফলের অপেক্ষায় থাকা মাহমুদ-উল হাসান। সে অষ্টমবারের মতো এবার যশোর আঞ্চলিক গণিত উৎসবে যোগ দিয়েছে। এর মধ্যে ছয়বার বিজয়ী হয়ে পুরস্কার জিতে ঢাকায় জাতীয় গণিত উৎসবে অংশ নেওয়ার কৃতিত্ব অর্জন করে সে।

গণিত উৎসব তাকে অংকের ভীতি দূর করে স্বপ্ন দেখতে শিখিয়েছে বলে উল্লেখ করে মাহমুদ। সে প্রথম আলোকে বলে, ‘২০১৪ সালে যশোর জিলা স্কুলে পঞ্চম শ্রেণিতে পড়ার সময়ে প্রথম যশোর আঞ্চলিক গণিত উৎসবে যোগ দিই। এরপর টানা আটবার গণিত উৎসবে যোগ দিয়েছি। এই উৎসব ক্যালকুলেটর ছাড়া নিজে বুঝে বুঝে জটিল অংকের সমাধান করতে শিখিয়েছে।’

ডাচ্‌-বাংলা ব্যাংকের পৃষ্ঠপোষকতায় ও প্রথম আলোর ব্যবস্থাপনায় গণিত উৎসবের আয়োজন করছে বাংলাদেশ গণিত অলিম্পিয়াড কমিটি। গণিত উৎসবের সব খবর পাওয়া যাবে গণিত অলিম্পিয়াডের ওয়েবসাইট https://matholympiad.org.bd এবং https://facebook.com/BdMOC অফিশিয়াল ফেসবুক পেজে। আগামীকাল খুলনা ও রাজশাহীতে আঞ্চলিক উৎসব অনুষ্ঠিত হবে।

You May also Like

Image