Blog

Latest articles

Explore our latest blog post where we share articles, news, insights, and more!

খুলনা, ময়মনসিংহ, সুনামগঞ্জ ও পাবনা আঞ্চলিক উৎসবের খবর

খুলনার করোনেশন মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়ে গতকাল গণিত উৎসবে অতিথি ও শিক্ষকদের সঙ্গে বিজয়ী শিক্ষার্থীরা l ছবি: প্রথম আলো

সকালের শুরুটা হয়েছিল কুয়াশার চাদর মুড়ি দিয়ে হাড়-কাঁপানো ঠান্ডা নিয়ে। এ কারণেই বোধহয় গতকাল শুক্রবার সুনামগঞ্জ, খুলনা, ময়মনসিংহ ও পাবনার সাধারণ মানুষের সকালটা শুরু করতে একটু দেরি হয়ে গিয়েছিল। তবে ‘বিশেষ’ কিছু মানুষের সকাল শুরু হয়েছিল সকালেরও আগেই! কুয়াশা কিংবা ঠান্ডা কোনোটাই ঘরে আটকে রাখতে পারেনি তাঁদের।
১১ জেলার ২০৪টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রায় ৩ হাজার শিক্ষার্থী ও তাদের অভিভাবকেরা গতকাল সমবেত হন উল্লিখিত চারটি স্থানে। শীতে জবুথবু হয়ে দূর-দূরান্ত থেকে তাঁরা ছুটে আসেন আঞ্চলিক গণিত উৎসবে।
উৎসবের আয়োজক বাংলাদেশ গণিত অলিম্পিয়াড কমিটি। পৃষ্ঠপোষক ডাচ্-বাংলা ব্যাংক লিমিটেড। সার্বিক ব্যবস্থাপনায় প্রথম আলো। ‘গণিত শেখো, স্বপ্ন দেখো’ স্লোগান নিয়ে প্রাথমিক, নিম্নমাধ্যমিক, মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক—এই চার বিভাগে শিক্ষার্থীরা উৎসবস্থলে অনুষ্ঠিত পরীক্ষায় অংশ নেয়। সব স্থানেই বন্ধুসভার সদস্যদের জাতীয় সংগীত পরিবেশনের মধ্য দিয়ে উৎসব উদ্বোধন করা হয়।
প্রশ্নের যেন শেষ নেই! পাবনা বালিকা উচ্চবিদ্যালয়ে গতকাল গণিত উৎসবে প্রশ্ন করে এক শিক্ষার্থী l ছবি: প্রথম আলো

খুলনার করোনেশন মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয় মাঠে সকাল নয়টায় উৎসবের উদ্বোধন করেন বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক লায়লা আরজুমান। শুভেচ্ছা বক্তব্য দেন খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি (কুয়েট) বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য শিবেন্দ্র শেখর শিকদার। অনুষ্ঠানে খুলনা, সাতক্ষীরা ও বাগেরহাট জেলার প্রায় ৮২টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ৮৯২ জন শিক্ষার্থী অংশ নেয়।
শিবেন্দ্র শেখর শিকদার বলেন, ‘আমরা মহাবিশ্বকে চিহ্নিত করি গাণিতিক নিয়মে। তাই বিশ্বের সঙ্গে তাল মিলিয়ে এগিয়ে যাওয়ার জন্য ভালোভাবে গণিত শিখতে হবে।’
অনুষ্ঠানে বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষকদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন হারুনুর রশিদ, মো. আলহাজ উদ্দীন, হাসিবুল হক, আশীষ বর্মণ ও সাইফুল ইসলাম। কুইজ পর্বে শিক্ষার্থীরা নানান প্রশ্ন করে। আমাদের গ্রহ সূর্য, চাঁদ গোল আকৃতির হয়, কিন্তু অন্য আকৃতির হয় না কেন? প্রকৃত উৎপাদক ও মৌলিক উৎপাদকের মধ্যে পার্থক্য কী? অসংজ্ঞায়িত ও অনির্ণেয়র মধ্যে পার্থক্য কী? শক্তির ধ্বংস বা সৃষ্টি নেই। তাহলে বিশ্বের এত শক্তি কোথা থেকে আসে? এসব প্রশ্ন অনুষ্ঠানে নতুন মাত্রা যোগ করে।
ময়মনসিংহ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় হাইস্কুলে গতকাল গণিত উৎসবে প্রশ্ন করার জন্য হাত তুলে দৃষ্টি আকর্ষণের চেষ্টা কয়েকজন শিক্ষার্থী l ছবি: প্রথম আলো

ময়মনসিংহ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় হাইস্কুল মাঠে সকাল সাড়ে নয়টায় উৎসব যৌথভাবে উদ্বোধন করেন বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সৈয়দ রায়হান উদ্দিন এবং বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক জহিরুল হক খন্দকার। অনুষ্ঠানে শুভেচ্ছা বক্তব্য দেন ডাচ্-বাংলা ব্যাংকের উপব্যবস্থাপক নূরে আলম খান।
উৎসবে ময়মনসিংহ, জামালপুর, নেত্রকোনা, শেরপুর ও কিশোরগঞ্জ জেলার ৫৫টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের এক হাজার শিক্ষার্থী অংশ নেয়।
শিক্ষার্থীদের প্রশ্নের উত্তর দেন শিক্ষক নিরঞ্জন কুমার বসাক, এখলাস উদ্দিন খান, আলতাব হোসেন, রুহুল আমিন, আল মামুন ও রফিকুল ইসলাম।
পাবনার আদর্শ গার্লস হাইস্কুল মাঠে উৎসবের উদ্বোধন করেন গণিতের প্রবীণ শিক্ষক ও পাবনা সরকারি শহীদ বুলবুল কলেজের অবসরপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ শিবজিত নাগ। বাংলাদেশ গণিত অলিম্পিয়াডের পতাকা উত্তোলন করেন আদর্শ গার্লস হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক আমান উল্লাহ খান। আন্তর্জাতিক গণিত অলিম্পিয়াডের পতাকা উত্তোলন করেন ডাচ্-বাংলা ব্যাংকের পাবনা শাখার ব্যবস্থাপক শফিকুজ্জামান খান।
হাত তুলে মিথ্যা, মাদক ও মুখস্থকে ‘না’ বলছে শিক্ষার্থীরা। গতকাল সুনামগঞ্জ শহরের এইচএমপি উচ্চবিদ্যালয়ে আয়োজিত গণিত উৎসবে ছবি: প্রথম আলো

শিক্ষার্থীদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন বাংলাদেশ গণিত অলিম্পিয়াড কমিটির সাধারণ সম্পাদক ও প্রথম আলোর যুববিষয়ক কর্মসূচির সমন্বয়ক মুনির হাসান। তাঁর সঙ্গে অংশ নেন শিক্ষক মো. নূর আলম, উদয় শংকর বসাক, তোফাজ্জল হোসেন ভূঁইয়া, উত্তম কুমার চৌধুরী ও আইনুল হক। শুভেচ্ছা বক্তব্য দেন পাবনা সরকারি মহিলা কলেজের সহকারী অধ্যাপক আখতার জামান। উৎসবে জেলার ২৫টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রায় সাড়ে তিন শ শিক্ষার্থী অংশ নেয়।
সুনামগঞ্জের অনুষ্ঠানে আসে সুনামগঞ্জ ও সিলেট জেলার ৪২টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ছয় শতাধিক শিক্ষার্থী। উদ্বোধন করেন সুনামগঞ্জের জেলা প্রশাসক শেখ রফিকুল ইসলাম। আন্তর্জাতিক গণিত অলিম্পিয়াডের পতাকা উত্তোলন করেন ডাচ্-বাংলা ব্যাংক সুনামগঞ্জ শাখার ব্যবস্থাপক গোলাম আজাদ এবং বাংলাদেশ গণিত অলিম্পিয়াডের পতাকা উত্তোলন করেন এইচএমপি উচ্চবিদ্যালয়ের সহকারী প্রধান শিক্ষক প্রেমানন্দ বিশ্বাস।
পরীক্ষা শেষে শিক্ষার্থীরা প্রশ্নোত্তর ও কুইজ পর্বে অংশ নেয়। প্রশ্নের উত্তর দেন শিক্ষক রাশেদ তালুকদার, সাজেদুল ইসলাম, আবদুল হান্নান, যোগেশ্বর দাস, মুত্তাকিন রহমান ও বিজয় কৃষ্ণ দাস। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন বাংলাদেশ গণিত অলিম্পিয়াড কমিটির একাডেমিক কাউন্সিলর মাহমুদুল হাসান।

You May also Like

Image