Blog

Latest articles

Explore our latest blog post where we share articles, news, insights, and more!

কক্সবাজারে গণিত উৎসব: বুদ্ধিকে পরিপক্ব করে গণিত

কক্সবাজারে আঞ্চলিক গণিত উৎসবের প্রশ্নোত্তর পর্বে প্রশ্ন করছে এক শিক্ষার্থী। গতকাল কক্সবাজার সরকারি বালিকা উচ্চবিদ্যালয়ে সমবেত শিক্ষার্থীরা l ছবি: সুপ্রিয় চাকমাকক্সবাজারে আঞ্চলিক গণিত উৎসবের প্রশ্নোত্তর পর্বে প্রশ্ন করছে এক শিক্ষার্থী। গতকাল কক্সবাজার সরকারি বালিকা উচ্চবিদ্যালয়ে সমবেত শিক্ষার্থীরা l ছবি: সুপ্রিয় চাকমা

 

শিক্ষার্থীদের কেউ এসেছে পাহাড় ডিঙিয়ে। কাউকে পাড়ি দিতে হয়েছে নদী ও সাগর। পৌষের কনকনে ঠান্ডা উপেক্ষা করে কুয়াশায় ঢাকা সকালে তারা হাজির কক্সবাজার সরকারি বালিকা উচ্চবিদ্যালয়ের মাঠে। গণিতের ভয়কে জয় করতে দুর্গম পথ ও ঠান্ডা তুচ্ছ করেছে তারা। পরীক্ষা, প্রশ্নোত্তর পর্বে অংশ নেওয়া, গান, নাচসহ নানা আয়োজনে দিনভর মেতে ছিল প্রায় এক হাজার শিক্ষার্থী।
গতকাল শনিবার সকাল সোয়া নয়টায় কক্সবাজার সরকারি বালিকা উচ্চবিদ্যালয়ের মাঠে জাতীয় সংগীত পরিবেশনের মধ্য দিয়ে শুরু হয় ডাচ্-বাংলা ব্যাংক-প্রথম আলো আঞ্চলিক গণিত উৎসবের। জাতীয় পতাকা উত্তোলন করেন জেলা প্রশাসক মো. আলী হোসেন। শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, বুদ্ধিকে পরিপক্ব করে গণিত। মানবসভ্যতায় গণিতের অবদান অনেক। তাই গণিতকে জয় করতে হবে। এ সময় শিক্ষার্থীরা হাত তুলে গণিতকে জয় করার শপথ নেয়। 
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে আন্তর্জাতিক গণিত অলিম্পিয়াডের পতাকা তোলেন ডাচ্-বাংলা ব্যাংকের কক্সবাজারের আঞ্চলিক ব্যবস্থাপক মো. সাজ্জাদুর রহমান। বাংলাদেশ গণিত অলিম্পিয়াডের পতাকা উত্তোলন করেন কক্সবাজার সরকারি বালিকা উচ্চবিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক মো. নাছির উদ্দিন। 
উদ্বোধনী পর্বে বক্তব্য দেন কক্সবাজার সরকারি উচ্চবিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক রাম মোহন সেন, কক্সবাজার সরকারি বালিকা উচ্চবিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক মো. নাছির উদ্দিন। শুভেচ্ছা বক্তব্য দেন প্রথম আলো কক্সবাজারের নিজস্ব প্রতিবেদক আব্দুল কুদ্দুস। 
‘গণিত শেখো স্বপ্ন দেখো’ স্লোগানে এই উৎসবের আয়োজক বাংলাদেশ গণিত অলিম্পিয়াড কমিটি। ডাচ্-বাংলা ব্যাংকের পৃষ্ঠপোষকতায় ও প্রথম আলোর ব্যবস্থাপনায় গতকালের এ উৎসবে অংশ নেয় কক্সবাজার ও বান্দরবানের বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ৮৫৭ জন শিক্ষার্থী। উদ্বোধন শেষে শিক্ষার্থীরা অংশ নেয় এক ঘণ্টার লিখিত পরীক্ষায়। এরপর ছিল সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। বন্ধুসভার সদস্যদের পাশাপাশি উপস্থিত শিক্ষার্থীদের মধ্যে কয়েকজন এ আয়োজনে অংশ নেয়।
এরপর ছিল মজার পর্ব—প্রশ্নোত্তর। কারও প্রশ্ন ছিল, মোমবাতির শিখা ওপরের দিকে যায় কেন? কেউবা জানতে চেয়েছে, বোকামির সঙ্গে গণিতের সর্ম্পক কী? শূন্য জোড় নাকি বিজোড়? শূন্য ঋণাত্মক নাকি ধনাত্মক? সময় কেন আপেক্ষিক? খুদে গণিতবিদদের একের পর এক বুদ্ধিদীপ্ত প্রশ্নের উত্তর দিতে মঞ্চে ছিলেন কক্সবাজার সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ এ কে এম ফজলুল করিম চৌধুরী, নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটির শিক্ষক আরশাদ চৌধুরী ও নোভা আহমেদ, বদরখালী ডিগ্রি কলেজের অধ্যক্ষ ফজলুল হক, কক্সবাজার সরকারি কলেজের গণিত বিভাগের প্রধান আবদুল কুদ্দুস, প্রভাষক নিজাম উদ্দিন ফারুকী, পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মফিজুল আলম, কক্সবাজার সিটি কলেজের পদার্থবিদ্যার শিক্ষক জেবুন্নেছা ও প্রথম আলো যুব কর্মসূচির সমন্বয়ক মুনির হাসান। মজার প্রশ্ন করে পুরস্কার জিতে নেয় শিক্ষার্থীরা। 
উৎসবে অংশ নেওয়া শিক্ষার্থীরা মুখস্থ, মাদক ও মিথ্যাকে ‘না’ বলার অঙ্গীকার করে। বিজয়ী শিক্ষার্থীদের মধ্যে পুরস্কার বিতরণের আগে সংক্ষিপ্ত বক্তব্যে কক্সবাজার সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ এ কে এম ফজলুল করিম চৌধুরী বলেন, সবাইকে নিজের ওপর অর্পিত দায়িত্ব পালন করতে হবে। এ দেশ, এ মাটি আমার—এই চেতনায় শিক্ষার্থীদের দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ হতে হবে।

You May also Like

Image