ঠাকুরগাঁও গণিত উৎসব: ভীতি কাটিয়ে গণিতকে ভালোবাসতে হবে

ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধি | তারিখ: ০৪-০১-২০১৩

কয়েক দিনের হাড় কাঁপানো ঠান্ডা আর কুয়াশা কাটিয়ে সকাল থেকেই ঝলমলে রোদ। সেই ঝলমলে সকালকে আরও রাঙিয়ে তুলেছে উৎসবের বর্ণাঢ্য আয়োজন। এই উৎসব গণিত জয়ের উৎসব।
ডাচ্-বাংলা ব্যাংক-প্রথম আলো একাদশ গণিত ২০১৩-এর আঞ্চলিক পর্বে গতকাল বৃহস্পতিবার ঠাকুরগাঁও সরকারি বালক উচ্চবিদ্যালয় মাঠে গণিত উৎসবের আয়োজন করা হয়। গণিত জয়ের স্বপ্ন নিয়ে ঠাকুরগাঁও, পঞ্চগড় ও দিনাজপুরের বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সহস্রাধিক খুদে গণিতবিদ উৎসবে যোগ দেয়।
সকাল সাড়ে নয়টায় জাতীয় পতাকা উত্তোলনের মাধ্যমে উৎসবের উদ্বোধন করেন বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. আখতারুজ্জামান। এ সময় বাংলাদেশ গণিত অলিম্পিয়াডের সাধারণ সম্পাদক মুনির হাসান আন্তর্জাতিক গণিত অলিম্পিয়াডের পতাকা এবং ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক হামমাদ আলী আঞ্চলিক গণিত উৎসবের পতাকা উত্তোলন করেন।
পতাকা উত্তোলনের পর খুদে গণিতবিদেরা পরীক্ষায় অংশ নেয়। এর পরই শুরু হয় সবচেয়ে আকর্ষণীয় প্রশ্নোত্তর পর্ব। মুনির হাসান ও একাডেমিক কাউন্সিলর তামীম শাহরিয়ারের সঞ্চালনায় একজন শিক্ষার্থীর প্রশ্ন ছিল—পাটিগণিতের জনক কে? যখন শূন্য আবিষ্কৃত হয়নি, তখন মানুষ কীভাবে গণনা করত? পৃথিবী কিসের ওপর ভর করে ঘোরে? মানুষ আঘাত পেলে ভাষা হারিয়ে যায় না কেন—এমন সব মজার মজার প্রশ্ন করে শিক্ষার্থীরা।
প্রশ্নের উত্তর দেন দিনাজপুরের হাজী দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক বিকাশ চন্দ্র সরকার, দিনাজপুরের পরমাণু চিকিৎসা ও আলট্রাসাউন্ড কেন্দ্রের পরিচালক বি কে বোস, ঠাকুরগাঁও সরকারি বালক উচ্চবিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক গোলাম রসুল, ঠাকুরগাঁও সরকারি বালিকা উচ্চবিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক আবদুল হাই, ঠাকুরগাঁও সরকারি কলেজের শিক্ষক অজিত রায় প্রমুখ।
এ পর্বে শিক্ষার্থীদের মুখস্থ, মাদক ও মিথ্যাকে না বলা এবং মা, দেশ, বাংলা ভাষার প্রতি শ্রদ্ধা জানানোর অঙ্গীকার করানো হয়। পরে বন্ধুসভার সদস্যরা গান ও নাচ পরিবেশন করেন। শিক্ষক বিকাশ চন্দ্র গণিতের ভীতি দূর করতে বারবার অনুশীলনের পরামর্শ দেন। মো. আখতারুজ্জামান বলেন, ভীতি কাটিয়ে গণিতকে ভালোবাসতে হবে।
গণিত প্রতিযোগিতায় প্রাথমিক শ্রেণীতে ১২ জন, জুনিয়রে ১২ জন, মাধ্যমিকে ১৩ জন ও উচ্চমাধ্যমিকে ১৩ জন জয়ী হয়। অনুষ্ঠানের শেষ পর্বে বিজয়ীদের ক্রেস্ট, সনদ ও টি-শার্ট দেওয়া হয়। প্রাথমিকে চ্যাম্পিয়ন হয় দিনাজপুর জিলা স্কুলের পঞ্চম শ্রেণীর হামিম রহমান, তার সহপাঠী রিফাত আনজুম, স্কলাস ইন্টারন্যাশনাল স্কুলের চতুর্থ শ্রেণীর নওশিন রানা চৌধুরী ও ঠাকুরগাঁও সরকারি বালক উচ্চবিদ্যালয়ের পঞ্চম শ্রেণীর মো. শাহরিয়ার মোর্শেদ।
জুনিয়রে দিনাজপুর জিলা স্কুলের অষ্টম শ্রেণীর রেশমান মুবতাসিম, তার সহপাঠী এম জি এম শাহরিয়ার, একই বিদ্যালয়ের ষষ্ঠ শ্রেণীর সাহিব আল কাউসার ও ঠাকুরগাঁও সরকারি বালক উচ্চবিদ্যালয়ের সপ্তম শ্রেণীর জিনিয়াস চ্যাম্পিয়ন হয়। মাধ্যমিকে চ্যাম্পিয়ন হয় সেন্ট ফিলিফস উচ্চবিদ্যালয়ের নবম শ্রেণীর কুশল পোদ্দার, দিনাজপুর জিলা স্কুলের দশম শ্রেণীর মো. রেজানুর রহমান, দিনাজপুর সরকারি বালিকা উচ্চবিদ্যালয়ের নবম শ্রেণীর সোমলতা দেব, একই বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণীর রিচিতা খন্দকার ও ঠাকুরগাঁও সরকারি বালক উচ্চবিদ্যালয়ের দশম শ্রেণীর মুহামঞ্চদ আদিব আল হামিম।
উচ্চমাধ্যমিকে চ্যাম্পিয়ন পাঁচজনই দিনাজপুর সরকারি কলেজের একাদশ শ্রেণীর শিক্ষার্থী। এরা হলো: ভাস্বর রায়, মুবাশ্বির রহমান, অভিষেক আগরওয়াল, মো. সাহিব নিহাল ও রাহাত আহমেদ।

ঠাকুরগাঁও গণিত উৎসব: ভীতি কাটিয়ে গণিতকে ভালোবাসতে হবে

ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধি | তারিখ: ০৪-০১-২০১৩

কয়েক দিনের হাড় কাঁপানো ঠান্ডা আর কুয়াশা কাটিয়ে সকাল থেকেই ঝলমলে রোদ। সেই ঝলমলে সকালকে আরও রাঙিয়ে তুলেছে উৎসবের বর্ণাঢ্য আয়োজন। এই উৎসব গণিত জয়ের উৎসব।
ডাচ্-বাংলা ব্যাংক-প্রথম আলো একাদশ গণিত ২০১৩-এর আঞ্চলিক পর্বে গতকাল বৃহস্পতিবার ঠাকুরগাঁও সরকারি বালক উচ্চবিদ্যালয় মাঠে গণিত উৎসবের আয়োজন করা হয়। গণিত জয়ের স্বপ্ন নিয়ে ঠাকুরগাঁও, পঞ্চগড় ও দিনাজপুরের বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সহস্রাধিক খুদে গণিতবিদ উৎসবে যোগ দেয়।
সকাল সাড়ে নয়টায় জাতীয় পতাকা উত্তোলনের মাধ্যমে উৎসবের উদ্বোধন করেন বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. আখতারুজ্জামান। এ সময় বাংলাদেশ গণিত অলিম্পিয়াডের সাধারণ সম্পাদক মুনির হাসান আন্তর্জাতিক গণিত অলিম্পিয়াডের পতাকা এবং ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক হামমাদ আলী আঞ্চলিক গণিত উৎসবের পতাকা উত্তোলন করেন।
পতাকা উত্তোলনের পর খুদে গণিতবিদেরা পরীক্ষায় অংশ নেয়। এর পরই শুরু হয় সবচেয়ে আকর্ষণীয় প্রশ্নোত্তর পর্ব। মুনির হাসান ও একাডেমিক কাউন্সিলর তামীম শাহরিয়ারের সঞ্চালনায় একজন শিক্ষার্থীর প্রশ্ন ছিল—পাটিগণিতের জনক কে? যখন শূন্য আবিষ্কৃত হয়নি, তখন মানুষ কীভাবে গণনা করত? পৃথিবী কিসের ওপর ভর করে ঘোরে? মানুষ আঘাত পেলে ভাষা হারিয়ে যায় না কেন—এমন সব মজার মজার প্রশ্ন করে শিক্ষার্থীরা।
প্রশ্নের উত্তর দেন দিনাজপুরের হাজী দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক বিকাশ চন্দ্র সরকার, দিনাজপুরের পরমাণু চিকিৎসা ও আলট্রাসাউন্ড কেন্দ্রের পরিচালক বি কে বোস, ঠাকুরগাঁও সরকারি বালক উচ্চবিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক গোলাম রসুল, ঠাকুরগাঁও সরকারি বালিকা উচ্চবিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক আবদুল হাই, ঠাকুরগাঁও সরকারি কলেজের শিক্ষক অজিত রায় প্রমুখ।
এ পর্বে শিক্ষার্থীদের মুখস্থ, মাদক ও মিথ্যাকে না বলা এবং মা, দেশ, বাংলা ভাষার প্রতি শ্রদ্ধা জানানোর অঙ্গীকার করানো হয়। পরে বন্ধুসভার সদস্যরা গান ও নাচ পরিবেশন করেন। শিক্ষক বিকাশ চন্দ্র গণিতের ভীতি দূর করতে বারবার অনুশীলনের পরামর্শ দেন। মো. আখতারুজ্জামান বলেন, ভীতি কাটিয়ে গণিতকে ভালোবাসতে হবে।
গণিত প্রতিযোগিতায় প্রাথমিক শ্রেণীতে ১২ জন, জুনিয়রে ১২ জন, মাধ্যমিকে ১৩ জন ও উচ্চমাধ্যমিকে ১৩ জন জয়ী হয়। অনুষ্ঠানের শেষ পর্বে বিজয়ীদের ক্রেস্ট, সনদ ও টি-শার্ট দেওয়া হয়। প্রাথমিকে চ্যাম্পিয়ন হয় দিনাজপুর জিলা স্কুলের পঞ্চম শ্রেণীর হামিম রহমান, তার সহপাঠী রিফাত আনজুম, স্কলাস ইন্টারন্যাশনাল স্কুলের চতুর্থ শ্রেণীর নওশিন রানা চৌধুরী ও ঠাকুরগাঁও সরকারি বালক উচ্চবিদ্যালয়ের পঞ্চম শ্রেণীর মো. শাহরিয়ার মোর্শেদ।
জুনিয়রে দিনাজপুর জিলা স্কুলের অষ্টম শ্রেণীর রেশমান মুবতাসিম, তার সহপাঠী এম জি এম শাহরিয়ার, একই বিদ্যালয়ের ষষ্ঠ শ্রেণীর সাহিব আল কাউসার ও ঠাকুরগাঁও সরকারি বালক উচ্চবিদ্যালয়ের সপ্তম শ্রেণীর জিনিয়াস চ্যাম্পিয়ন হয়। মাধ্যমিকে চ্যাম্পিয়ন হয় সেন্ট ফিলিফস উচ্চবিদ্যালয়ের নবম শ্রেণীর কুশল পোদ্দার, দিনাজপুর জিলা স্কুলের দশম শ্রেণীর মো. রেজানুর রহমান, দিনাজপুর সরকারি বালিকা উচ্চবিদ্যালয়ের নবম শ্রেণীর সোমলতা দেব, একই বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণীর রিচিতা খন্দকার ও ঠাকুরগাঁও সরকারি বালক উচ্চবিদ্যালয়ের দশম শ্রেণীর মুহামঞ্চদ আদিব আল হামিম।
উচ্চমাধ্যমিকে চ্যাম্পিয়ন পাঁচজনই দিনাজপুর সরকারি কলেজের একাদশ শ্রেণীর শিক্ষার্থী। এরা হলো: ভাস্বর রায়, মুবাশ্বির রহমান, অভিষেক আগরওয়াল, মো. সাহিব নিহাল ও রাহাত আহমেদ।


Written by:
Published at: Fri, Jan 4, 2013 3:01 AM
Category : News
Share with others