Blog

Latest articles

Explore our latest blog post where we share articles, news, insights, and more!

১০ মার্চ ঢাকায় অনুষ্ঠিত হবে ২৭ তম এপিএমও

আগামী ১০ মার্চ ২০১৫ মঙ্গলবার সকাল ৯ টায় ২৭ তম এশিয়া প্যাসিফিক গণিত অলিম্পিয়াড (এপিএমও) সরকারি টিচার্স ট্রেনিং কলেজ, ঢাকায় (ঢাকা কলেজের পাশে ) অনুষ্ঠিত হবে। এপিএমও-তে নবম থেকে দ্বাদশ শ্রেনীর শিক্ষার্থী এবং এইচএসসি পরীক্ষার্থীরা অংশনিতে পারবে। এপিএমও-তে অংশগ্রহনের জন্য আগ্রহী শিক্ষার্থীদের  রেজিস্ট্রেশন করতে হবে। 

রেজিস্ট্রেশনের জন্য যোগাযোগ:  প্রথম আলো অফিস, ১৯ কাওরানবাজার, ঢাকা। রেজিস্ট্রেশনের তারিখ-  ৮ ও ৯ মার্চ ২০১৫ । আগে এলে আগে পাবেন ভিত্তিতে প্রথম ১০০ জনকে রেজিস্ট্রেশন করা হবে। প্রতিদিন বেলা ১১টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত রেজিস্ট্রেশন চলবে।


এপিএমওর তারিখ   : ১০ মার্চ মঙ্গলবার ২০১৫।

এপিএমওর স্থান       : টিচার্স ট্রেনিং কলেজ, ঢাকা (ঢাকা কলেজের পাশে)।

জাতীয় গণিত উৎসব ২০১৫ : গণিত নিয়ে মজার উৎসব

5গণিত নিয়ে মজার উৎসবে মেতেছিল সহস্রাধিক শিশু-কিশোর। গণিতের জটিল সব সমস্যায় তাদের ছিল না কোনো ভয়। পরীক্ষার সময় তাদের চোখেমুখে ছিল গণিতের চিন্তার ছাপ। পরীক্ষাকক্ষে এ দৃশ্য দেখে কয়েকজন স্বনামধন্য বিজ্ঞানী-গণিতবিদ বললেন, শিশুরা গণিত নিয়ে চিন্তা করছে। অথচ কয়েক বছর আগেও গণিতের প্রশ্ন হাতে নেওয়া শিশুর মুখে ভয়ের ছাপ চোখে পড়ত।
‘গণিত শেখো, স্বপ্ন দেখো’ স্লোগানে গতকাল শুক্রবার রাজধানীর সেন্ট যোসেফ হায়ার সেকেন্ডারি স্কুলে দিনব্যাপী এই উৎসবে মেতেছিল বিভিন্ন স্কুল ও কলেজের শিক্ষার্থীরা। সারা দেশ থেকে প্রাথমিক বাছাইয়ের পর গতকাল তারা অংশ নেয় জাতীয় গণিত উৎসবে। এটি ছিল ১৩তম জাতীয় উৎসব। ডাচ্-বাংলা ব্যাংক লিমিটেডের পৃষ্ঠপোষকতায় ও প্রথম আলোর ব্যবস্থাপনায় বাংলাদেশ গণিত অলিম্পিয়াড কমিটি এ উৎসবের আয়োজন করে।
হরতাল-অবরোধের মধ্যে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে ঢাকায় এসে জাতীয় উৎসবে অংশ নেয় শিশু-কিশোরেরা। দিনটি পরীক্ষা ও আনন্দ আয়োজনে পার করে তারা। শেষ বিকেলে ফল ঘোষণার পর পুরস্কারপ্রাপ্তদের চোখেমুখে ছিল আনন্দের ঝিলিক। তবে যারা পুরস্কার পায়নি, তাদের মধ্যে হতাশা দেখা যায়নি।
খুলনার সাইফ আল মাহমুদ আঞ্চলিক প্রতিযোগিতায় রানার্সআপ হয়েছিল। বাবার সঙ্গে আসা সাইফ জানাল, ‘আমার ইচ্ছে বড় হয়ে বিজ্ঞানী হওয়ার। অঙ্ক করতে আমার ভালো লাগে। একদিন আমিও আন্তর্জাতিক অলিম্পিয়াডে যাব।’
সিরাজগঞ্জ থেকে চতুর্থ ও অষ্টম শ্রেণিতে পড়ুয়া দুই সন্তানকে নিয়ে সোমা রাণী পাল এসেছেন উৎসবে। আঞ্চলিক প্রতিযোগিতায় ছোট ছেলে রানার্সআপ এবং বড় ছেলে চ্যাম্পিয়ন অব চ্যাম্পিয়নস হয়েছে। সোমা রাণী বলেন, ‘মেধা বিকাশের উৎকৃষ্ট মাধ্যম এ উৎসব। পাঁচ বছর ধরে বড় ছেলে অংশ নিচ্ছে। যত দিন ওদের যোগ্যতা থাকবে, তত দিন অংশ নিতে উৎসাহ দিয়ে যাব।’
এবারের জাতীয় উৎসবে চারটি ক্যাটাগরিতে মোট ৮৪ জনকে পুরস্কৃত করা হয়। এর মধ্যে হায়ার সেকেন্ডারি ক্যাটাগরিতে চ্যাম্পিয়ান অব দ্য চ্যাম্পিয়নস হয়েছে ময়মনসিংহের আনন্দমোহন কলেজের শিক্ষার্থী আদিব হাসান। সর্বোচ্চ নম্বর পাওয়ায় সে চ্যাম্পিয়ান অব দ্য অলিম্পিয়াড পুরস্কারেও ভূষিত হয়। এ ছাড়া সেকেন্ডারি ক্যাটাগরিতে গভ. ল্যাবরেটরি স্কুলের মো. সাব্বির রহমান, জুনিয়রে রাজউক উত্তরা মডেল কলেজের মাশরুর হাসান ভূঁইয়া ও প্রাইমারি ক্যাটাগরিতে সিরাজগঞ্জ ক্যালেক্টরেট স্কুলের মো. ইরফান আসিফ রহমান চ্যাম্পিয়ন অব দ্য চ্যাম্পিয়নস পুরস্কার পেয়েছে।
চলতি বছরের জুলাইয়ে থাইল্যান্ডে অনুষ্ঠেয় ৫৬তম আন্তর্জাতিক গণিত অলিম্পিয়াডের জন্য বাংলাদেশ গণিত দলের সদস্যদের নির্বাচনের লক্ষ্যে ২৪টি জেলা শহরে আঞ্চলিক গণিত উৎসব অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে অংশ নেওয়া প্রায় ৩০ হাজার শিক্ষার্থীর মধ্য থেকে বাছাই করা ১ হাজার ২৮১ জন জাতীয় উৎসবে অংশ নিয়েছে।
পৌনে নয়টায় জাতীয় সংগীতের সঙ্গে জাতীয় পতাকা উত্তোলনের মধ্য দিয়ে শুরু হয় জাতীয় উৎসব। জাতীয় পতাকা উত্তোলন করেন সেন্ট যোসেফ হায়ার সেকেন্ডারি স্কুলের অধ্যক্ষ ব্রাদার রবি পিউরিফিকেশন। গণিত অলিম্পিয়াডের পতাকা উত্তোলন করেন অধ্যাপক জামিলুর রেজা চৌধুরী এবং আন্তর্জাতিক গণিত অলিম্পিয়াডের পতাকা উত্তোলন করেন ডাচ্-বাংলা ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক কে এস তাবরেজ। এরপর অতিথিরা বেলুন উড়িয়ে উৎসবের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন।
বাংলাদেশ গণিত অলিম্পিয়াড কমিটির সভাপতি অধ্যাপক জামিলুর রেজা চৌধুরী বলেন, বিজ্ঞানমনস্ক সমাজ ও প্রযুক্তিতে উন্নতি করতে গেলে গণিতে ভালো হতে হবে।
শুভেচ্ছা বক্তব্য দেন প্রথম আলোর সহযোগী সম্পাদক আব্দুল কাইয়ুম। তিনি বলেন, সমাজে যত পশ্চাৎপদতা আছে, সব দূর হবে গণিতের মাধ্যমে।
কে এস তাবরেজ শিক্ষার্থীদের নিয়ে আসা শিক্ষক-অভিভাবকদের ধন্যবাদ জানান।
সকাল পৌনে ১০টায় লিখিত পরীক্ষা শুরু হয়। শিক্ষার্থীরা প্রাইমারি, জুনিয়র, সেকেন্ডারি ও হায়ার সেকেন্ডারি—এই চার ক্যাটাগরিতে অংশ নেয়। প্রাইমারি ও জুনিয়র ক্যাটাগরি দেড় ঘণ্টা এবং সেকেন্ডারি ও হায়ার সেকেন্ডারি ক্যাটাগরির শিক্ষার্থীরা দুই ঘণ্টার পরীক্ষায় অংশ নেয়। পরীক্ষা শেষে খুদে গণিতবিদেরা আবারও মাঠে জড়ো হলে রুবিকস কিউব প্রতিযোগিতার বাছাইপর্ব হয়। বিডি গোস্ট রাইডার্সের সাইকেল স্টান্টের পর বিরতি হয় উৎসবে। গণিত ও বিজ্ঞানবিষয়ক বই দিয়ে সাজানো বইমেলা এই উৎসবে বিশেষ মাত্রা যোগ করে। বিরতির পর বেলা সোয়া দুইটায় ওয়াটার রকেট উড্ডয়ন করা হয়। এরপর সিসিমপুর ও আলোর ঝিলিক পরিবেশন করা হয়। মঞ্চে নৃত্যরঙের নাচও উপভোগ করে শিক্ষার্থী, অভিভাবক ও অতিথিরা। এ ছাড়া রুবিকস কিউব ও সুডোকু প্রতিযোগিতা হয়।
এবার গণিত অলিম্পিয়াড কমিটি দুজনকে আজীবন সম্মাননা দিয়েছে। এঁরা হলেন বিশিষ্ট গণিতবিদ অধ্যাপক মুনিবুর রহমান চৌধুরী ও অধ্যাপক ফরিদা বানু। দিনব্যাপী উৎসবের বিভিন্ন পর্বে আরও উপস্থিত ছিলেন গণিতবিদ অধ্যাপক খোদাদাদ খান, অধ্যাপক লুৎফুজ্জামান, বিজ্ঞানী রেজাউর রহমান, গণিত অলিম্পিয়াড কমিটির সহসভাপতি অধ্যাপক মুনিবুর রহমান চৌধুরী, জ্যোতির্বিদ এফ আর সরকার, অধ্যাপক মোহাম্মদ কায়কোবাদ, অধ্যাপক আনোয়ার হোসেন, ড. বদিউল আলম মজুমদার, অধ্যাপক লায়েক সাজ্জাদ এন্দেল্লাহ, অধ্যাপক আবদুল হাকিম খান, অধ্যাপক আনোয়ারুল ইসলাম, প্রয়াত অধ্যাপক জামাল নজরুল ইসলামের স্ত্রী সুরাইয়া ইসলাম, অধ্যাপক কাওসার জাহান, মনোচিকিৎসক মোহিত কামাল, ডাচ্-বাংলা ব্যাংকের উপব্যবস্থাপনা পরিচালক সাইদুল হাসান প্রমুখ।
বিভিন্ন পর্ব সঞ্চালনা করেন গণিত অলিম্পিয়াড কমিটির সাধারণ সম্পাদক মুনির হাসান, কমিটির অ্যাকাডেমিক কাউন্সিলর মাহমুদুল হাসান ও তামিম শাহরিয়ার। উৎসবে সহায়তা করেন প্রথম আলো বন্ধুসভা এবং ম্যাথ অলিম্পিয়াড ভলান্টিয়ার্সের (মুভার্স) ৩০০ স্বেচ্ছাসেবক।

কাল ৬ মার্চ, শুক্রবার জাতীয় গণিত উৎসব ২০১৫

গণিত উৎসব ২০১৫

কাল ৬ মার্চ শুক্রবার রাজধানীর মোহাম্মদপুরের আসাদগেট এলাকায় অবস্থিত সেন্ট যোসেফ হায়ার সেকেন্ডারি স্কুলে অনুষ্ঠিত হবে দিনব্যাপী জাতীয় গণিত উৎসব ২০১৫ ও ত্রয়োদশ বাংলাদেশ গণিত অলিম্পিয়াড। ডাচ্-বাংলা ব্যাংক লিমিটেডের পৃষ্ঠপোষকতায় এবং প্রথম আলোর ব্যবস্থাপনায় বাংলাদেশ গণিত অলিম্পিয়াড কমিটি উৎসবের আয়োজন করেছে।
চলতি বছরের জুলাই মাসে থাইল্যান্ডে অনুষ্ঠেয় ৫৬তম আন্তর্জাতিক গণিত অলিম্পিয়াডের জন্য বাংলাদেশ গণিত দলের সদস্যদের নির্বাচনের লক্ষ্যে এ বছর সারা দেশের ২৪টি জেলা শহরে আঞ্চলিক গণিত উৎসব অনুষ্ঠিত হয়েছে। এই ২৪টি আঞ্চলিক গণিত উৎসবের ১ হাজার ২৮১ জন বিজয়ী অংশ নেবে জাতীয় উৎসবে।
সকাল আটটায় আঞ্চলিক গণিত উৎসবের সব বিজয়ীকে সনদ ও লাল রঙের টি-শার্ট পরে উৎসব প্রাঙ্গণে উপস্থিত থাকার জন্য অনুরোধ করেছে আয়োজক কমিটি। সবাইকে উৎসব প্রাঙ্গণে এসে নিজ অঞ্চলের বুথ থেকে নিবন্ধন সম্পন্ন করতে হবে। সকাল আটটা ৪৫ মিনিটে উদ্বোধনী পর্বের মাধ্যমে শুরু হবে এবারের জাতীয় গণিত উৎসব।
আঞ্চলিক আয়োজকদের পুরস্কৃত করা ছাড়াও অনুষ্ঠানে থাকবে ২০১৪ সালের সেরা গণিত ক্লাবের পুরস্কার প্রদান এবং আজীবন সম্মাননা। বিকেল চারটায় সমাপনী ও পুরস্কার বিতরণীর মাধ্যমে শেষ হবে এবারের উৎসব।

৬ মার্চ জাতীয় গণিত উৎসব

৬ মার্চ ঢাকার সেন্ট যোসেফ হায়ার সেকেন্ডারি স্কুলে অনুষ্ঠিত হবে দিনব্যাপী জাতীয় গণিত উৎসব ২০১৫ ও ত্রয়োদশ বাংলাদেশ গণিত অলিম্পিয়াড। ডাচ্-বাংলা ব্যাংক লিমিটেডের পৃষ্ঠপোষকতায় এবং প্রথম আলোর ব্যবস্থাপনায় বাংলাদেশ গণিত অলিম্পিয়াড কমিটি উৎসবের আয়োজন করেছে।
২০০৫ সাল থেকে আমাদের শিক্ষার্থীরা আন্তর্জাতিক গণিত অলিম্পিয়াডে (আইএমও) অংশগ্রহণ শুরু করেছে। চলতি বছরের জুলাই মাসে থাইল্যান্ডে অনুষ্ঠেয় ৫৬তম আন্তর্জাতিক গণিত অলিম্পিয়াডের জন্য বাংলাদেশ গণিত দলের সদস্যদের নির্বাচনের লক্ষ্যে এ বছর সারা দেশের ২৪টি জেলা শহরে আঞ্চলিক গণিত উৎসব অনুষ্ঠিত হয়েছে। এই ২৪টি আঞ্চলিক গণিত উৎসবের বিজয়ীরা অংশ নেবে জাতীয় উৎসবে।
শিক্ষার্থীদের সকাল আটটায় উৎসব প্রাঙ্গণে উপস্থিত থাকার জন্য অনুরোধ করেছে আয়োজক কমিটি। সবাইকে উৎসব প্রাঙ্গণে এসে নিজ অঞ্চলের বুথ থেকে নিবন্ধন সম্পন্ন করতে হবে। সকাল আটটা ৪৫ মিনিটে উদ্বোধনী পর্বের মাধ্যমে শুরু হবে এবারের জাতীয় গণিত উৎসব। সাড়ে নয়টায় শুরু হবে পরীক্ষা পর্ব। প্রাইমারি ও জুনিয়র ক্যাটাগরির পরীক্ষা ১ ঘণ্টা ৩০ মিনিট এবং সেকেন্ডারি ও হায়ার সেকেন্ডারি পরীক্ষার সময় ২ ঘণ্টা। পরীক্ষার হলে ক্যালকুলেটর ব্যবহার করা যাবে না। তবে কলম, পেনসিল, জ্যামিতি বক্স সঙ্গে আনতে হবে। বিকেল ৪ টায় সমাপনী ও পুরস্কার বিতরণী পর্ব অনুষ্ঠিত হবে।

উল্লেখ্য, আঞ্চলিক উৎসবের সব বিজয়ীদের লাল রঙের টি শার্ট ও বিজয়ী সার্টিফিকেট সঙ্গে আনতে হবে।

জাতীয় গণিত উৎসবের নতুন তারিখ ৬ মার্চ ২০১৫

আগামী ৬ মার্চ ২০১৫, শুক্রবার বাংলাদেশ গণিত অলিম্পিয়াড কমিটি কর্তৃক আয়োজিত ‌'ডাচ্‌-বাংলা ব্যাংক প্রথম আলো জাতীয় গণিত উৎসব ২০১৫' অনুষ্ঠিত হবে। উৎসবটি অনুষ্ঠিত হবে ঢাকার সেন্ট যোসেফ হায়ার সেকেন্ডারি স্কুলে ।
সার্বিক পরিস্থিতির আলোকে এবং আন্তর্জাতিক গণিত অলিম্পিয়াডে অংশগ্রহণের নিয়মাবলীর কারণে আর পেছানো সম্ভব নয়। তাই জাতীয় গণিত উৎসবটি একদিনে করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বাংলাদেশ গণিত অলিম্পিয়াড কমিটি।

কিছু প্রয়োজনীয় তথ্য:

  • উৎসবে আগমন সকাল ৮ টায়
  • উৎসবে এসে নিজ অঞ্চলের বুথ থেকে রেজিস্ট্রেশন করতে হবে
  • উদ্বোধনী পর্ব সকাল ৮টা ৪৫ মিনিটে
  • পরীক্ষা পর্ব শুরু সকাল ৯টা ৩০ মিনিটে
  • প্রাইমারি ও জুনিয়র ক্যাটাগরির পরীক্ষা ১ ঘন্টা ৩০ মিনিট এবং সেকেন্ডারি ও হায়ার সেকেন্ডারি ক্যাটাগরির পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে ২ঘন্টা
  • পরীক্ষায় ক্যালকুলেটর ব্যবহার করা যাবে না
  • পরীক্ষার হলে কলম, পেনসিল ও জ্যামিতি বক্স সঙ্গে আনতে হবে
  • সমাপনী ও পুরস্কার বিতরণী পর্ব অনুষ্ঠিত হবে বিকেল ৪ টায়
  • উৎসবে আঞ্চলিক পর্যায়ের বিজয়ীদের লাল রঙের টি শার্ট ও বিজয়ী সার্টিফিকেট সঙ্গে আনতে হবে

জাতীয় গণিত উৎসব স্থগিত

আগামী ৬ ও ৭ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ শুক্র ও শনিবার বাংলাদেশ গণিত অলিম্পিয়াড কমিটি কর্তৃক আয়োজিত ‌'ডাচ্‌-বাংলা ব্যাংক প্রথম আলো জাতীয় গণিত উৎসব ২০১৫' স্থগিত করা হয়েছে। উৎসবটি ঢাকার সেন্ট যোসেফ হায়ার সেকেন্ডারি স্কুলে অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিল।

উল্লেখ্য,জাতীয় গণিত উৎসবের নতুন তারিখ পরবর্তীতে জানানো হবে।

ঢাকা আঞ্চলিক গণিত উৎসবের খবর

গণিত শিখে দেশ গড়ার স্বপ্ন

 

ঢাকা আঞ্চলিক গণিত উৎসব হয়ে গেল গতকাল। ঢাকা রেসিডেনসিয়াল মডেল কলেজ প্রাঙ্গণে সকালে বেলুন উড়িয়ে ওই উৎসবের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন অতিথিরা l ছবি: প্রথম আলো

মাঘের সকাল৷ টানা অবরোধ৷ কোনো কিছুই আটকে রাখতে পারেনি ওদের৷ গণিতের প্রতি ভালোবাসার টানে, সব বাধা উপেক্ষা করে খুদে গণিতবিদেরা জড়ো হয়েছিল ঢাকা রেসিডেনসিয়াল মডেল কলেজ প্রাঙ্গণে, ঢাকা আঞ্চলিক গণিত উৎসবে। ‘গণিত শেখো, স্বপ্ন দেখো’ স্লোগানের উৎসবে এসে তারা জয় করল গণিতভীতি, দেখল দেশ গড়ার স্বপ্ন৷
গতকাল শুক্রবার ডাচ্-বাংলা ব্যাংক লিমিটেডের পৃষ্ঠপোষকতায় এবং প্রথম আলোর ব্যবস্থাপনায় বাংলাদেশ গণিত অলিম্পিয়াড কমিটি আয়োজন করে এই উৎসবের।
দিনভর গণিতের নানা বিষয়ের পাশাপাশি ভালো মানুষ হওয়ার, দেশকে এগিয়ে নেওয়ারও শিক্ষা পায় এই শিক্ষার্থীরা৷ উৎসবের গান ‘আয় আয় আয়, কে স্বপ্ন দেখবি আয়। আয় গণিতের আঙিনায়। কে দেশটা গড়বি আয়’—যেন সার্থকতা পায় এসব খুদে গণিতবিদের উচ্ছল অংশগ্রহণে৷
সকাল নয়টার আগেই অনুষ্ঠানস্থল মুখর হয়ে ওঠে খুদে গণিতবিদদের পদচারণে৷ সাড়ে নয়টায় জাতীয় সংগীতের সঙ্গে জাতীয় পতাকা উত্তোলনের মধ্য দিয়ে শুরু হয় গণিত উৎসব। রেসিডেনসিয়াল মডেল কলেজের অধ্যক্ষ ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান সুবহানি জাতীয় পতাকা উত্তোলন করেন। বাংলাদেশ গণিত অলিম্পিয়াডের পতাকা উত্তোলন করেন বাংলাদেশ গণিত অলিম্পিয়াড কমিটির সভাপতি অধ্যাপক জামিলুর রেজা চৌধুরী এবং আন্তর্জাতিক গণিত অলিম্পিয়াডের পতাকা উত্তোলন করেন ডাচ্-বাংলা ব্যাংক লিমিটেডের উপব্যবস্থাপনা পরিচালক সাইদুল হাসান। পতাকা উত্তোলনের পর অতিথিরা বেলুন উড়িয়ে উৎসবের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন।
উদ্বোধনী অধিবেশনে জামিলুর রেজা চৌধুরী এই উৎসব ভবিষ্যতে আরও বড় পরিসরে করার কথা বললেন। তিনি বলেন, শিক্ষার্থীদের গণিতভীতি দূর হচ্ছে। বিশ্বের বিভিন্ন নামী বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হয়ে তারা যে বিশ্বমানের, সেটা প্রমাণ করছে।
গণিতকে ভয় নয়, ভালোবেসে জয় করার মন্ত্র সব শিক্ষার্থীর কাছে পৌঁছে দেওয়ার আহ্বান জানালেন জামিলুর রেজা চৌধুরী।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রথম আলোর পক্ষে সহযোগী সম্পাদক আব্দুল কাইয়ুম শুভেচ্ছা বক্তব্য দেন।
এরপর সকাল ১০টায় গণিত উৎসবের লিখিত পরীক্ষা শুরু হয়ে চলে বেলা সোয়া ১১টা পর্যন্ত। পরীক্ষা শেষে খুদে গণিতবিদেরা আবারও মাঠে এসে জড়ো হয়। গণিত উৎসবের গান দিয়ে শুরু হয় উৎসবের এ পর্ব। এরপর শুরু হয় প্রশ্নোত্তর পর্ব। গণিত ও বিজ্ঞানবিষয়ক বই দিয়ে সাজানো বইমেলা উৎসবে বিশেষ মাত্রা যোগ করে।
গাড়ি বা ট্রেনে করে যাওয়ার সময় কয়েন ওপরে ছুড়ে দিলে তা সেখানেই ফিরে আসে কেন? সর্ববৃহৎ মৌলিক নাম্বার কোনটি? পিত্তথলি, কিডনিতে পাথর হয় কীভাবে? গণিত উৎসবে এসে অংশগ্রহণকারীরা বিজ্ঞানের নানা বিষয়ে প্রশ্ন করে।
খুদে গণিতবিদদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন গণিত অলিম্পিয়াড কমিটির সদস্য অধ্যাপক মোহাম্মদ কায়কোবাদ, গণিতবিদ অধ্যাপক খোদাদাদ খান, বিশিষ্ট বিজ্ঞানী রেজাউর রহমান, মনোরোগ বিশেষজ্ঞ মোহিত কামাল, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের গণিত বিভাগের অধ্যাপক লায়েক সাজ্জাদ এন্দেল্লাহ, প্রথম আলোর সহযোগী সম্পাদক আব্দুল কাইয়ুম, আনিসুল হক প্রমুখ। প্রশ্নোত্তরের এ পর্বটি সঞ্চালনা করেন গণিত অলিম্পিয়াডের একাডেমিক কাউন্সেলর মাহমুদুল হাসান।
উত্তরা থেকে বাবার সঙ্গে উৎসবে আসে পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থী তানভীর আহমেদ৷ সে বলল, ‘ম্যাথ করতে আমার ভালো লাগে৷ একদিন আমিও আন্তর্জাতিক অলিম্পিয়াডে যাব৷’
উৎসবে উপস্থিত ছিলেন রেসিডেনসিয়াল মডেল কলেজের উপাধ্যক্ষ ফেরদৌস আরা বেগম, অধ্যাপক লুৎফুজ্জামান, গণিত অলিম্পিয়াড কমিটির সহসভাপতি মুনিবুর রহমান চৌধুরী, সদস্য অধ্যাপক আনোয়ার হোসেন, বুয়েটের অধ্যাপক আবদুল হাকিম খান ও ফারসীম মান্নান মোহাম্মদী, এস সোহরাবউদ্দীন, বাংলাদেশ গণিত দলের কোচ মাহবুব মজুমদার, সেন্ট যোসেফ কলেজের শিক্ষক দীপক কুমার সরকার, একাডেমিক কাউন্সেলর তামিম শাহরিয়ার প্রমুখ।
নিজের ছেলে ও ভাগনেকে নিয়ে উৎসবে এসেছিলেন ইকবাল আহমেদ৷ বললেন, ‘পুরস্কার পাওয়া না-পাওয়া বড় ব্যাপার নয়৷ ছেলেমেয়েরা এত ছোট বয়স থেকেই অঙ্কের ভয় কাটিয়ে মজা নিয়ে শিখতে শুরু করছে, এটাই আসল৷ ব্যাপারটা আরও তৃণমূল পর্যায়ে নিয়ে যেতে পারলে ভালো হবে৷’
মধ্যাহ্ন বিরতির পর আবারও অনুষ্ঠান শুরু হয় বাংলাদেশ অ্যাস্ট্রোনমিক্যাল সোসাইটির ওয়াটার রকেট উৎক্ষেপণের মধ্য দিয়ে। এর পরই হয় রুবিকস কিউব প্রতিযোগিতা। মাত্র ১১ দশমিক ১ সেকেন্ডে কিউব মিলিয়ে এতে চ্যাম্পিয়ন হয় সেন্ট যোসেফ হায়ার সেকেন্ডারি স্কুলের সাকিব ইবনে রশীদ ঋভু।
৫০ ও ৫১তম আন্তর্জাতিক গণিত অলিম্পিয়াডে বাংলাদেশের হয়ে ব্রোঞ্জ পদকজয়ী নাজিয়া চৌধুরী ও তারিক আদনান খুদে গণিতবিদদের তাঁদের সফলতার গল্প শোনান।
বেলা তিনটায় শুরু হয় ফলাফল ঘোষণা। এর আগে গণিত অলিম্পিয়াড কমিটির সাধারণ সম্পাদক মুনির হাসান জানিয়ে দেন, ঢাকা অঞ্চলের এবারের আয়োজনে নারায়ণগঞ্জ, মুন্সিগঞ্জ, মানিকগঞ্জ ও ঢাকার ১৫৪টি স্কুলের ৩ হাজার ১৫৭ জন শিক্ষার্থী নিবন্ধন করে। তার মধ্যে গতকালের উৎসবে উপস্থিত ছিল ২ হাজার ৫২৭ জন। ঢাকা উৎসবে প্রাইমারি, জুনিয়র, সেকেন্ডারি ও হায়ার সেকেন্ডারি—এই চারটি ক্যাটাগরিতে শিক্ষার্থীরা অংশ নেয়। উৎসব সফল করার জন্য কাজ করেছেন প্রথম আলো বন্ধুসভা এবং ম্যাথ অলিম্পিয়াড ভলান্টিয়ার্সের (মুভার্স) ৩০০ স্বেচ্ছাসেবক।
ফলাফল ঘোষণার আগে আনিসুল হক বলেন, অংশগ্রহণকারীরা প্রশ্নোত্তর পর্বে যেসব প্রশ্ন করেছে, সেই প্রশ্নগুলো উত্তরসহ কিশোর আলোয় ছাপা হবে।
অংশগ্রহণকারীদের মধ্য থেকে ১৬৬ জনকে পুরস্কৃত করা হয়। এই ১৬৬ জন দেশের আরও ২৩টি আঞ্চলিক গণিত উৎসবে বিজয়ীদের সঙ্গে ৬ ও ৭ ফেব্রুয়ারি ঢাকার আসাদগেটসংলগ্ন সেন্ট যোসেফ হায়ার সেকেন্ডারি স্কুলে অনুষ্ঠেয় জাতীয় গণিত উৎসব ও ত্রয়োদশ বাংলাদেশ গণিত অলিম্পিয়াডে অংশ নেবে।

 

ঢাকা আঞ্চলিক গণিত উৎসব আগামীকাল ১৬ জানুয়ারি

 

1

 

আগামীকাল শুক্রবার ঢাকা রেসিডেনসিয়াল মডেল কলেজে অনুষ্ঠিত হবে ঢাকা আঞ্চলিক গণিত উৎসব। ডাচ্-বাংলা ব্যাংক লিমিটেডের পৃষ্ঠপোষকতায় ও প্রথম আলোর ব্যবস্থাপনায় বাংলাদেশ গণিত অলিম্পিয়াড কমিটি এই উৎসবের আয়োজন করেছে। সকাল নয়টায় জাতীয় সংগীতের সঙ্গে জাতীয় পতাকা উত্তোলনের মধ্য দিয়ে উৎসবের উদ্বোধন করবেন ঢাকা রেসিডেনসিয়াল মডেল কলেজের অধ্যক্ষ ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান সুবহানি।
চলতি বছর থাইল্যান্ডে অনুষ্ঠেয় ৫৬তম আইএমওর জন্য বাংলাদেশ গণিত দল নির্বাচনের লক্ষ্যে এ বছর ২৪টি শহরে আঞ্চলিক গণিত উৎসব অনুষ্ঠিত হচ্ছে। এই উৎসবে অংশগ্রহণ করতে ইতিমধ্যেই প্রাইমারি, জুনিয়র, সেকেন্ডারি ও হায়ার সেকেন্ডারি ক্যাটাগরিতে মানিকগঞ্জ, গাজীপুর, মুন্সিগঞ্জ, নারায়ণগঞ্জ ও ঢাকার ১৫৪টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রায় ২ হাজার ৮০০ জন শিক্ষার্থী নিবন্ধন করেছে।
উৎসব শুরু হবে সকাল সাড়ে আটটায়। উৎসবে পরীক্ষার সময় মুঠোফোন ব্যবহার করা যাবে না। অলিম্পিয়াডে ক্যালকুলেটর ব্যবহার করা যাবে না। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের নির্ধারিত পোশাক পরে আসতে হবে। পরীক্ষার হলে প্রবেশপত্র, কলম ও পেনসিল সঙ্গে আনতে হবে।
উৎসবে খুদে গণিতবিদদের উৎসাহ জোগাতে উপস্থিত থাকবেন বাংলাদেশ গণিত অলিম্পিয়াড কমিটির সভাপতি অধ্যাপক জামিলুর রেজা চৌধুরী, সহসভাপতি অধ্যাপক মুহম্মদ জাফর ইকবাল, মুনিবুর রহমান চৌধুরী, সদস্য অধ্যাপক মোহাম্মদ কায়কোবাদ, অধ্যাপক আনোয়ার হোসেন, বিশিষ্ট গণিতবিদ অধ্যাপক খোদাদাদ খান, অধ্যাপক লুৎফুজ্জামান, বিশিষ্ট বিজ্ঞানী রেজাউর রহমান, বুয়েটের অধ্যাপক আবদুল হাকিম খান, ফারসীম মান্নান মোহাম্মদী, ডাচ্-বাংলা ব্যাংকের উপব্যবস্থাপনা পরিচালক সাইদুল হাসান, প্রথম আলোর সহযোগী সম্পাদক আব্দুল কাইয়ুম ও আনিসুল হক, গণিত দলের কোচ মাহবুব মজুমদার এবং বাংলাদেশ গণিত অলিম্পিয়াডের সাধারণ সম্পাদক মুনির হাসান।
দিনব্যাপী এই উৎসবে চারটি ক্যাটাগরিতে উৎসবের মূল পর্ব গণিত অলিম্পিয়াড অনুষ্ঠিত হবে। গণিত অলিম্পিয়াড ছাড়াও থাকবে গণিত ও বিজ্ঞানবিষয়ক নানা আয়োজন। থাকবে গণিত ও বিজ্ঞানবিষয়ক স্পট কুইজ, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, প্রশ্নোত্তর পর্ব, রুবিকস কিউব প্রতিযোগিতা, বইমেলা, সমাপনী অনুষ্ঠান ও পুরস্কার বিতরণী।
২৪টি আঞ্চলিক গণিত উৎসবের বিজয়ীরা আগামী ৬ ও ৭ ফেব্রুয়ারি শুক্র ও শনিবার ঢাকার সেন্ট যোসেফ হায়ার সেকেন্ডারি স্কুলে অনুষ্ঠেয় জাতীয় গণিত উৎসব ২০১৫ ও ত্রয়োদশ বাংলাদেশ গণিত অলিম্পিয়াডে অংশগ্রহণ করবে।

 

রাজবাড়ী গণিত উৎসব

গণিত গড়ে যুক্তিবাদী মন

 

রাজবাড়ী সরকারি উচ্চবিদ্যালয়ে অনুষ্ঠিত আঞ্চলিক গণিত উৎসবে প্রশ্ন করছে এক খুদে গণিতবিদ l ছবি: প্রথম আলো

শীতের সকালে কুয়াশা ফুঁড়ে বের হতে থাকে ঝলমলে রোদ। উষ্ণতার সঙ্গে বাড়তে থাকে উচ্ছ্বসিত খুদে শিক্ষার্থীদের উপস্থিতি। সকাল সাড়ে আটটার মধ্যেই রাজবাড়ী সরকারি উচ্চবিদ্যালয় মাঠ পরিপূর্ণ। গতকাল শনিবার সেখানে অনুষ্ঠিত হয় গণিত উৎসব।
ডাচ্-বাংলা ব্যাংকের পৃষ্ঠপোষকতা আর প্রথম আলোর সার্বিক সহযোগিতায় রাজবাড়ীতে এ গণিত উৎসবে অংশ নেয় রাজবাড়ী ও ফরিদপুর জেলার ৮০০ শিক্ষার্থী। সকাল নয়টায় জাতীয় পতাকা উত্তোলন করেন জেলা প্রশাসক রফিকুল ইসলাম খান। পরে জাতীয় গণিত অলিম্পিয়াডের পতাকা উত্তোলন করেন রাজবাড়ী সরকারি উচ্চবিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আজিজা খানম এবং আন্তর্জাতিক গণিত অলিম্পিয়াডের পতাকা উত্তোলন করেন রাজবাড়ী সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ জয়নাল আবেদিন।
এরপর ‘গণিত শেখো স্বপ্ন দেখো’ স্লোগান লেখা উৎসবের ব্যানার উড়িয়ে দেওয়া হয় সকালের রোদেলা আকাশে। উদ্বোধন ঘোষণা করা হয় রাজবাড়ী আঞ্চলিক গণিত উৎসবের।
জেলা প্রশাসক বলেন, ‘গণিত যারা সমাধান করতে পারে তারাই বুঝতে পারে এতে কত আনন্দ। একটু মন দিয়ে চেষ্টা করলেই খুব সহজেই গণিত সমাধান করা যায়।’
সকাল সাড়ে নয়টায় শুরু হয় উৎসবের মূল পর্ব পরীক্ষা। এরপর বিদ্যালয়ের মাঠে শুরু হয় গণিত জয়ের গান ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। এতে অংশ নেন রাজবাড়ী বন্ধুসভার বন্ধুরা।
এরপর শুরু হয় মজার মজার প্রশ্ন নিয়ে প্রশ্নোত্তর পর্ব। রাজবাড়ী সরকারি উচ্চবিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির শিক্ষার্থী জান্নাতুল ফেরদৌস প্রশ্ন করে, মানুষের মন কোথায় থাকে ও আকার কেমন? আলো একসঙ্গে কণা ও তরঙ্গের আচরণ করে কীভাবে—এ প্রশ্ন ছুড়ে দেয় ফরিদপুর বালিকা উচ্চবিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী নাসিফা তাসনিম। এ সময় বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন বাংলাদেশ গণিত অলিম্পিয়াড কমিটির সাধারণ সম্পাদক মুনির হাসান, বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ কায়কোবাদ, রাজবাড়ী সরকারি কলেজের রসায়ন বিভাগের সহকারী অধ্যাপক হামিমুর রহমান, সরকারি সারদা সুন্দরী মহিলা কলেজের গণিত প্রভাষক সুশান্ত কুমার দে, রাজবাড়ী সরকারি উচ্চবিদ্যালয়ের গণিতের শিক্ষক সমীর ময় মণ্ডল, আরিফ হোসেন, রাজবাড়ী সরকারি উচ্চবিদ্যালয়ের গণিতের শিক্ষক রেজাউল হক, রাজবাড়ী সরকারি বালিকা উচ্চবিদ্যালয়ের পদার্থের শিক্ষক ইতিকা রানী দাস।
পরে পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন পুলিশ সুপার (এসপি) তাপতুন নাসরীন। তিনি বলেন, ‘গণিত মানুষকে যুক্তিবাদী হতে শেখায়। আর যারা যুক্তিবাদী তারা কখনো ইভ টিজিং, মাদক ও খারাপ কাজের সঙ্গে যুক্ত হতে পারে না। যুক্তিবাদী মন মানুষকে প্রকৃত মানুষ হিসেবে গড়ে তোলে।’
বাংলাদেশ গণিত অলিম্পিয়ার্ড কমিটির সাধারণ সম্পাদক মুনির হাসান বলেন, মাকে খুশি করলে ভালো মানুষ হওয়া যায়। আর মাকে বড় করলে সেটা হয় দেশমাতৃকা। এ সময় তিনি ‘মাদক, মুখস্থ ও মিথ্যা’কে না বলতে শিক্ষার্থীদের শপথ করান।
উৎসবে অংশ নেয় শারীরিক প্রতিবন্ধী তামান্না আক্তার রিন্তু। সে ফরিদপুর সরকারি সারদা সুন্দরী মহিলা কলেজের একাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থী। তিনি উৎসবে অংশ নেওয়ার অনুভূতি জানিয়ে প্রতিবেদককে বলেন, অংশ নিতে পেরে খুব ভালো লাগছে। এতে অনেক অভিজ্ঞতা হলো, অনেক কিছু জানতে ও শিখতে পারলাম।
উৎসবের বিভিন্ন পর্ব সঞ্চালনা করেন গণিত অলিম্পিয়াড কমিটির সাধারণ সম্পাদক ও প্রথম আলোর যুব কর্মসূচি সমন্বয়ক মুনির হাসান এবং রাজবাড়ী বন্ধুসভার উপদেষ্টা শামীমা আক্তার মুনমুন।
অনুষ্ঠানস্থলে গণিত একাডেমির বই, তাম্রলিপি, রকমারি ডটকম ও বন্ধুসভার স্টলে শিক্ষার্থীরা ভিড় জমায়। উৎসবে সার্বিক সহযোগিতা করেন রাজবাড়ী বন্ধুসভার বন্ধুরা।


 

সকাল থেকে চলছে শরীয়তপুরে গণিত উৎসব

 

শরীয়তপুরে গণিত উৎসবে শিক্ষার্থীরা। ছবি: প্রথম আলো

‘গণিত শেখো, স্বপ্ন দেখো’ স্লোগান সামনে রেখে আজ শুক্রবার সকাল সাড়ে নয়টা থেকে শরীয়তপুরে শুরু হয়েছে গণিত উৎসব। ডাচ-বাংলা ব্যাংক লিমিটেডের পৃষ্ঠপোষকতায় ও প্রথম আলোর ব্যবস্থাপনায় এবারের উৎসবের আয়োজনে আছে গণিত অলিম্পিয়াড কমিটি।
শিক্ষার্থীদের গাণিতিক মেধার উৎকর্ষ বৃদ্ধি এবং থাইল্যান্ডে অনুষ্ঠেয় ৫৬তম আন্তর্জাতিক গণিত অলিম্পিয়াডে (আইএমও) অংশগ্রহণের জন্য বাংলাদেশ গণিত দলের সদস্য নির্বাচনের লক্ষ্য নিয়ে এ উৎসব শুরু হয়েছে।

সকালে শরীয়তপুরের পালং তুলাসার গুরুদাস সরকারি উচ্চবিদ্যালয় প্রাঙ্গণে জাতীয় সংগীতের মধ্য দিয়ে উৎসবের উদ্বোধন করেন বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. শহীদুল্লাহ। এ সময় জাতীয় পতাকা, বাংলাদেশ গণিত অলিম্পিয়াডের পতাকা ও আন্তর্জাতিক গণিত অলিম্পিয়াডের পতাকা উত্তোলন করা হয়।

শুভেচ্ছা বক্তব্য দেন শরীয়তপুরের জেলা প্রশাসক রামচন্দ্র দাস এবং পুলিশ সুপার সাইফুল্লাহ আল মামুন। এ ছাড়া উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ গণিত অলিম্পিয়াড কমিটির সাধারণ সম্পাদক ও প্রথম আলোর যুববিষয়ক কর্মসূচির সমন্বয়ক মুনির হাসান এবং গণিত অলিম্পিয়াড কমিটির সহ-সভাপতি মোহাম্মদ কায়কোবাদ।
শরীয়তপুর বন্ধুসভার সহযোগিতায় এ উৎসব চলবে বেলা আড়াইটা পর্যন্ত। অনেক শিক্ষার্থী উৎসাহ-উদ্দীপনার সঙ্গে এবারের উৎসবে অংশ নিচ্ছে।

 

রাঙামাটি ও চাঁদপুর গণিত উৎসবের খবর

     

গণিতে মিলবে জীবনের হিসাব

চাঁদপুর শহরের হাসান আলী সরকারি উচ্চবিদ্যালয় মাঠে গণিত উৎসবে অতিথিদের উদ্দেশে প্রশ্ন এক শিক্ষার্থীর। গতকাল তার মতোই শত শত খুদে শিক্ষার্থীর উপস্থিতিতে স্কুলমাঠটি পরিণত হয়েছিল এক মিলনমেলায় l ছবি: প্রথম আলো

মানুষের জীবনটাই একটা গণিত। জীবনের ভালোমন্দ সবটাই গুনতে হয়; গুনতে হবেও। তাই তো গণিত জয়েই মিলতে পারে জীবনের হিসাব-নিকাশও। গণিত জয়ের স্বপ্নে বিভোর গণিত উৎসবের খুদে শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে এমন উপদেশ ছিল শিক্ষক ও গণিতবিদদের।
পৌষের শীত আর মেঘাচ্ছন্ন আকাশের মধ্যে সাতসকালেই উৎসবে মেতে উঠেছিল শিক্ষার্থীরাও। তাদের উচ্ছ্বাস-উল্লাসে জমে উঠেছিল গণিত উৎসবের আসর। গতকাল শনিবার চাঁদপুর ও রাঙামাটিতে বসে ১৩তম এ আসর। দুই স্থানে উৎসবে অংশ নেয় প্রায় ১ হাজার ২০০ শিক্ষার্থী। তাদের মধ্যে বিজয়ী ৮০ জন যাবে জাতীয় গণিত উৎসবে।
গণিত উৎসবের স্লোগান ‘গণিত শেখো, স্বপ্ন দেখো’। আয়োজক বাংলাদেশ গণিত অলিম্পিয়াড কমিটি। পৃষ্ঠপোষক ডাচ্-বাংলা ব্যাংক লিমিটেড। আর সার্বিক ব্যবস্থাপনায় রয়েছে প্রথম আলো।
চাঁদপুর: আনুষ্ঠানিকভাবে উৎসব শুরুর ঘণ্টা খানেক আগেই কানায় কানায় ভরে যায় শহরের হাসান আলী সরকারি উচ্চবিদ্যালয় প্রাঙ্গণ। সকাল সাড়ে নয়টায় প্রথম আলো বন্ধুসভার সদস্যদের গাওয়া জাতীয় সংগীতে অংশ নিতে দাঁড়িয়ে যায় চাঁদপুর ও কুমিল্লার প্রায় ৭০০ শিক্ষার্থী। এ সময় তাদের হাতে ছিল জাতীয় পতাকা, বেলুন ও ইলিশের আদলে তৈরি প্ল্যাকার্ড।
জাতীয় পতাকা, বাংলাদেশ গণিত অলিম্পিয়াড ও আন্তর্জাতিক গণিত অলিম্পিয়াডের পতাকা উত্তোলনের মাধ্যমে সূচনা হয় উৎসবের। হাসান আলী সরকারি উচ্চবিদ্যালয় স্কুলের প্রধান শিক্ষক মোহাম্মদ হোসেন উৎসবের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন ঘোষণা করেন। অনুষ্ঠানে ডাচ্-বাংলা ব্যাংক চাঁদপুর শাখার ব্যবস্থাপক মো. নুরুল আমিনসহ বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষক ও আমন্ত্রিত অতিথিরা অংশ নেন।
চাঁদপুরের জেলা প্রশাসক মো. ইসমাইল হোসেন শুভেচ্ছা বক্তব্যে বলেন, ‘গণিতের মাধ্যমে ঘটে মেধার বিকাশ, হয় আইকিউ উন্নত। বোঝা যায় ভালোমন্দ। এ জন্য আমাদের প্রত্যেকের জীবনেই গণিত শেখা অপরিহার্য। এ উৎসবের মাধ্যমে গণিত সবার মধ্যে ছড়িয়ে যাবে, এটাই হোক আমাদের অঙ্গীকার।’
চাঁদপুর সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ মিহির লাল সাহা শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে বলেন, মানুষের জীবনটাই গণিত। গণিতকে জয় করলেই জীবনের হিসাবও মিলাতে পারবে।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠান শেষে সকাল ১০টায় শিক্ষার্থীরা অংশ নেয় গণিত জয়ের প্রতিযোগিতায়। সোয়া এক ঘণ্টার পরীক্ষা শেষে শুরু হয় বন্ধুসভার সদস্য ও চাঁদপুরের শিল্পীদের নিয়ে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের পর্ব। ঘণ্টা খানেক শিল্পীরা নাচে-গানে মাতিয়ে তোলেন পুরো স্কুল প্রাঙ্গণ।
দুপুর সাড়ে ১২টায় বাংলাদেশ গণিত অলিম্পিয়াডের একাডেমিক কাউন্সিলর মাহমুদুল হাসানের পরিচালনায় শিক্ষার্থীদের নিয়ে শুরু হয় প্রশ্নোত্তর পর্ব। শিক্ষক-অতিথিরা প্রশ্নের জবাব দেন। সেরা শিক্ষার্থীদের দেওয়া হয় বই পুরস্কার। এরই ফাঁকে এক মিনিট করে শুভেচ্ছা বক্তব্যে অংশ নেন চাঁদপুর সরকারি কলেজের গণিত বিভাগের সহকারী অধ্যাপক আবুল কালাম আজাদ, প্রভাষক শুক্কুর আলম মজুমদার, প্রভাষক মো. মাহফুজুর রহমান, ভেন্যু শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সহকারী শিক্ষক মনজুরুল আলম, উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা মো. মোস্তফা কামাল, প্রথম আলোর কুমিল্লা অফিসের নিজস্ব প্রতিবেদক গাজীউল হক, চাঁদপুর প্রতিনিধি আলম পলাশ ও চাঁদপুর বন্ধুসভার সভাপতি আফরোজা খাতুন।
উৎসবের শেষ পর্যায়ে মাহমুদুল হাসান শিক্ষার্থীদের মাদক, মিথ্যা ও মুখস্থকে না বলার অঙ্গীকার করান। ভেন্যু শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানকে স্মারক ক্রেস্ট ও বিজয়ী ৪০ শিক্ষার্থীকে দেওয়া হয় মেডেল ও সনদ।
রাঙামাটি: লেকার্স পাবলিক স্কুল অ্যান্ড কলেজে সকাল সাড়ে নয়টায় শুরু হয় গণিত উৎসব। প্রাইমারি, জুনিয়র, সেকেন্ডারি ও হায়ার সেকেন্ডারি ক্যাটাগরিতে রাঙামাটি ও খাগড়াছড়ি জেলার ১৭টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রায় সাড়ে পাঁচ শ শিক্ষার্থী উৎসবে অংশগ্রহণ করে।
উৎসব উদ্বোধন করেন লেকার্স পাবলিক স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ এম এ মতিন। জাতীয় সংগীত পরিবেশনের মধ্য দিয়ে উত্তোলন করা হয় জাতীয় পতাকা, বাংলাদেশ গণিত অলিম্পিয়াড ও আন্তর্জাতিক গণিত অলিম্পিয়াডের পতাকা।
পতাকা উত্তোলন করেন অধ্যক্ষ এম এ মতিন, রাঙামাটি সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ বাঞ্চিতা চাকমা, বাংলাদেশ গণিত অিলম্পিয়াড কমিটির সাধারণ সম্পাদক ও প্রথম আলোর যুব কর্মসূচির সমন্বয়কারী মুনির হাসান।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে এম এ মতিন বলেন, ‘গণিত উৎসব শুরু হওয়ার পর থেকে আমাদের শিক্ষার্থীদের মাঝে গণিত-ভীতি কমে যাচ্ছে। গণিতকে এখন সবাই উৎসাহ নিয়ে দেখছে।’ রাঙামাটিতে এ উৎসব আয়োজন করায় পার্বত্য এলাকার শিক্ষার্থীদের মধ্যে গণিত নিয়ে কৌতূহল সৃষ্টির জন্য প্রথম আলো ও ডাচ্-বাংলা ব্যাংক কর্তৃপক্ষকে কৃতজ্ঞতা জানান এম এ মতিন।
বাঞ্চিতা চাকমা বলেন, প্রথম আলো শিক্ষার্থী ও তরুণদের মেধাবিকাশে কাজ করে যাওয়ায় দেশে মেধার বিকাশ ঘটছে।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের পর অনুষ্ঠিত হয় সোয়া এক ঘণ্টার লিখিত পরীক্ষা। এরপর মুনির হাসানের সঞ্চালনায় শুরু হয় প্রশ্নোত্তর পর্ব। ছাত্রছাত্রীদের প্রশ্নের উত্তর দেন মুনির হাসানসহ ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির শিক্ষক জাবেদ মোর্শেদ, নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটির শিক্ষক নোভা আহমেদ ও আরশাদ চৌধুরী।
গণিত উৎসবে অংশগ্রহণকারী শিক্ষার্থীদের মধ্যে ৪০ জন প্রতিযোগিতায় বিজয়ী হয়।

চট্টগ্রাম ও নোয়াখালী গণিত উৎসবের খবর

সমস্বরে দেশ গড়ার শপথ

 

চট্টগ্রাম নগরের সেন্ট প্লাসিডস উচ্চবিদ্যালয়ে গতকালের গণিত উৎসবে শিক্ষক ও অতিথিদের সঙ্গে বিজয়ীরা l ছবি: প্রথম আলো

 

‘বিড়ালের চোখ রাতে জ্বলজ্বল করলেও মানুষের চোখ একই রকম জ্বলজ্বল করে না কেন?’, ‘টিকটিকি কেন দেয়াল থেকে পড়ে যায় না?’, ‘হার্ডওয়্যারকে হার্ড এবং সফটওয়্যারকে সফট কেন বলা হয়?’—শিক্ষার্থীদের এমন নানা প্রশ্নে জেরবার হয়েছেন ডাচ্-বাংলা ব্যাংক-প্রথম আলো গণিত উৎসবের চট্টগ্রাম ও নোয়াখালী পর্বে আসা অতিথি-বিশেষজ্ঞরা।
গণিতজয়ের পাশাপাশি দেশ এবং নিজেদের গড়ার শপথ নিয়েছে গতকাল শুক্রবার দিনব্যাপী উৎসবে আসা শিশু-কিশোরেরা। চট্টগ্রাম থেকে ৮০ ও নোয়াখালী অঞ্চল থেকে ৫০ জন প্রতিযোগী বিজয়ী হয়ে ঢাকায় উৎসবের মূল পর্বে অংশগ্রহণের সুযোগ পেয়েছে।
চট্টগ্রাম: ‘গণিত শেখো স্বপ্ন দেখো’ স্লোগানে নগরের সেন্ট প্লাসিডস হাইস্কুল মাঠে গতকাল অনুষ্ঠিত উৎসবে বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ৭১৩ জন ছাত্রছাত্রী অংশ নেয়। উৎসবের আয়োজক বাংলাদেশ গণিত অলিম্পিয়াড কমিটি, ব্যবস্থাপনায় প্রথম আলো, আর সহযোগিতায় প্রথম আলো বন্ধুসভা, চট্টগ্রাম। বাংলাদেশ গণিত অলিম্পিয়াডের সাধারণ সম্পাদক মুনির হাসানের সঙ্গে শিক্ষার্থীরা সমস্বরে শপথ নিয়েছে মিথ্যা, মুখস্থ ও মাদককে ‘না’ বলার।
সকালে দিনব্যাপী উৎসবের সূচনা হয় জাতীয়, আন্তর্জাতিক গণিত অলিম্পিয়াড ও বাংলাদেশ গণিত অলিম্পিয়াডের পতাকা উত্তোলনের মধ্য দিয়ে। তিনটি পতাকা উত্তোলন করেন যথাক্রমে সেন্ট প্লাসিড হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক ব্রাদার প্রদীপ লুইজ রোজারিও, ডাচ্-বাংলা ব্যাংকের সিনিয়র অ্যাসিস্ট্যান্ট ভাইস প্রেসিডেন্ট সাঈদ মো. সোহেল ও প্রথম আলোর যুগ্ম সম্পাদক বিশ্বজিৎ চৌধুরী। জাতীয় সংগীত ও উৎসব সংগীত পরিবেশন করেন বন্ধুসভার সদস্যরা।
উদ্বোধনের পর অনুষ্ঠিত গণিতবিষয়ক পরীক্ষা শেষে শিক্ষার্থীরা মেতে ওঠে নানা জিজ্ঞাসায়। তারা একটি স্বনির্ভর দেশ উপহার দেবে বলে আশা প্রকাশ করেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের কম্পিউটার বিজ্ঞান ও প্রকৌশল বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক হানিফ সিদ্দিকী। নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক আরশাদ এম চৌধুরী বলেন, ‘খেলাধুলা, বিজ্ঞানচর্চা, সবকিছুই করতে হবে। তবেই গণিতকে জয় করা যাবে।’
শিক্ষার্থীদের নানা জিজ্ঞাসার জবাব দিয়েছেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থবিদ্যা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক মশিউর রহমান, কম্পিউটার বিজ্ঞান ও প্রকৌশল বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক মোহাম্মদ খাইরুল ইসলাম, বন ও পরিবেশবিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক মোশাররফ হোসেন, চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (চুয়েট) গণিত বিভাগের সহকারী অধ্যাপক উজ্জ্বল কুমার দেব ও প্রভাষক মোহম্মদ কামরুল হাসান প্রমুখ। অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন বন্ধুসভা চট্টগ্রামের সাধারণ সম্পাদক ফাহিম উদ্দিন।
নোয়াখালী: পৌষের শীত, মেঘলা আকাশ ও বৃষ্টি উপেক্ষা করে নোয়াখালীর খুদে গণিতবিদেরা নোয়াখালী সরকারি বালিকা উচ্চবিদ্যালয় প্রাঙ্গণে গতকাল গণিত উৎসবে যোগ দেয়। সকাল সাড়ে নয়টায় নোয়াখালী বন্ধুসভার সদস্যদের জাতীয় সংগীত পরিবেশনার মধ্য দিয়ে শুরু হয় অনুষ্ঠান। এ সময় জাতীয় পতাকা উত্তোলন করেন বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক জান্নাতুল তাজেরীন। বাংলাদেশ গণিত অলিম্পিয়াড ও আন্তর্জাতিক গণিত অলিম্পিয়াডের পতাকা উত্তোলন করেন যথাক্রমে নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য আবুল হোসেন এবং ডাচ্-বাংলা ব্যাংক চৌমুহনী শাখার ব্যবস্থাপক মোহাম্মদ ফিরোজ আল-মামুন।
নোয়াখালী ও ফেনী জেলার ১০১টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রায় ৮০০ শিক্ষার্থী আঞ্চলিক পর্বের এ উৎসবে যোগ দেয়। গণিতের ওপর সোয়া এক ঘণ্টার মূল্যায়ন পরীক্ষা শেষে শুরু হয় প্রশ্নোত্তর পর্ব। এই পর্ব সঞ্চালনা করেন জাতীয় গণিত অলিম্পিয়াড কমিটির পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক মাহমুদুল হাসান। তাঁর পাশাপাশি শিক্ষার্থীদের নানা প্রশ্নের উত্তর দেন নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ফলিত গণিত বিভাগের প্রধান নিজাম উদ্দিন, সহকারী অধ্যাপক জসিম উদ্দিন, কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড টেলিকমিউনিকেশন ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের প্রভাষক ফাতেহা খানম এবং তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি (আইসিটি) বিভাগের প্রভাষক আবিদুর রহমান। উৎসবে চারটি বিভাগে ৫০ জন শিক্ষার্থীকে বিজয়ী ঘোষণা করে তাদের হাতে একটি করে পদক, টি-শার্ট ও সনদ তুলে দেওয়া হয়।


 

Image