বর্ণাঢ্য আয়োজনে নোয়াখালী সরকারি বালিকা উচ্চবিদ্যালয়ের মাঠে চলছে আঞ্চলিক গণিত উৎসব। আজ শুক্রবার সকাল সাড়ে নয়টায় ভেন্যু প্রতিষ্ঠানের প্রধান শিক্ষক জান্নাতুল তাজেরীন আনুষ্ঠানিকভাবে এ উৎসবের উদ্বোধন করেন। ডাচ-বাংলা ব্যাংকের পৃষ্ঠপোষকতায় ও প্রথম আলোর সহযোগিতায় ১৩তম গণিত উৎসবের আঞ্চলিক পর্বের আয়োজক বাংলাদেশ গণিত অলিম্পিয়াড কমিটি। সকালে নোয়াখালী বন্ধুসভার বন্ধুদের জাতীয় সংগীত পরিবেশনার মধ্য দিয়ে দিনব্যাপী উৎসবের শুরু হয়। এ সময় জাতীয় সংগীতের তালে তালে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করেন ওই বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক জান্নাতুল তাজেরীন, বাংলাদেশ গণিত অলিম্পিয়াডের পতাকা উত্তোলন করেন নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য ড. আবুল হোসেন এবং আন্তর্জাতিক গণিত অলিম্পিয়াডের পতাকা উত্তোলন করেন ডাচ-বাংলা ব্যাংকের চৌমুহনী শাখার ব্যবস্থাপক মোহাম্মদ ফিরোজ আল-মামুন। নোয়াখালী, ফেনী ও লক্ষ্মীপুরের ১০১টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রায় সাড়ে ৮০০ শিক্ষার্থী এ গণিত উৎসবের আঞ্চলিক পর্বের অনুষ্ঠানে যোগ দিয়েছে। প্রাথমিক, নিম্ন মাধ্যমিক, মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক—এই চার বিভাগে ভাগ হয়ে শিক্ষার্থীরা গণিত প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়েছে।
তীব্র শীত আর কুয়াশায় মোড়ানো শীতের সকাল। তবে শীত-কুয়াশা দূরে ঠেলে সাতসকালেই গণিত জয়ের স্বপ্নে বিভোর হয়ে উঠেছিল খুদে শিক্ষার্থীরা। তাদের বাঁধভাঙা উচ্ছ্বাসে জমে ওঠে গণিত উৎসবের আসর। বগুড়া পুলিশ লাইনস স্কুল অ্যান্ড কলেজ ও ঝালকাঠি সরকারি হরচন্দ্র বালিকা উচ্চবিদ্যালয় প্রাঙ্গণে গতকাল রোববার বসেছিল ওই আসর। দুই স্থানে অংশ নেয় প্রায় দেড় হাজার শিক্ষার্থী। গণিত উৎসবের স্লোগান: ‘গণিত শেখো, স্বপ্ন দেখো’। আয়োজক বাংলাদেশ গণিত অলিম্পিয়াড কমিটি। পৃষ্ঠপোষক ডাচ্-বাংলা ব্যাংক লিমিটেড। সার্বিক ব্যবস্থাপনায় রয়েছে প্রথম আলো। বগুড়া: সকাল সাড়ে নয়টায় জাতীয় সংগীত পরিবেশনের মধ্য দিয়ে শুরু হয় গণিত উৎসব। এ সময় জাতীয় পতাকা ছাড়াও জাতীয় ও আন্তর্জাতিক গণিত অলিম্পিয়াডের পতাকা উত্তোলন করেন বগুড়ার জেলা প্রশাসক শফিকুর রেজা বিশ্বাস, ডাচ্-বাংলা ব্যাংকের বগুড়া শাখার ব্যবস্থাপক এ বি এম মামুনুল কবির ও জেলা পুলিশ সুপার মো. মোজাম্মেল হক। বেলুন উড়িয়ে উৎসবের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন জেলা প্রশাসক। বগুড়া অঞ্চলের এই উৎসবে জয়পুরহাট, সিরাজগঞ্জ ও গাইবান্ধার শতাধিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রায় সাড়ে আট শ শিক্ষার্থী অংশ নেয়। জেলা প্রশাসক তাঁর বক্তব্যে বলেন, ‘বিজ্ঞানের শিক্ষার্থীরাও আগে পাঠ্যসূচিতে গণিত নিতে ভয় করত। এখন শিক্ষার্থীরা উৎসাহ নিয়ে গণিত শেখে। গণিত উৎসব করে। শিক্ষার্থীরা এভাবেই একদিন গণিতে বিশ্বজয় করবে। এ দেশকে এগিয়ে নেবে।’ অন্য বক্তারা বলেন, গণিত মানেই কঠিন বিষয়, ভীতির বিষয়—উৎসবে আসা শিক্ষার্থীরা সেই ধারণা পাল্টে দিয়েছে। উৎসবে গণিতের ওপর সোয়া এক ঘণ্টার মূল্যায়ন পরীক্ষা হয়। শেষে শুরু হয় প্রশ্নোত্তর পর্ব। এই পর্ব সঞ্চালনা করেন জাতীয় গণিত অলিম্পিয়াড কমিটির সাধারণ সম্পাদক মুনির হাসান। শিক্ষার্থীদের গণিত নিয়ে নানা প্রশ্নের উত্তর দেন মুনির হাসান ছাড়াও সরকারি আজিজুল হক কলেজের সহযোগী অধ্যাপক মাহতাব হোসেন মণ্ডল, পুলিশ লাইনস স্কুল অ্যান্ড কলেজের শিক্ষক শহিদুল ইসলাম ও মাহফুজুর রহমান।
সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান পর্বে অংশ নেন বগুড়ার আমরা কজন শিল্পীগোষ্ঠী ও চর্চা সাংস্কৃতিক একাডেমির শিল্পীরা। প্রশ্নোত্তর পর্বে মাদক, মিথ্যা ও মুখস্থকে ‘না’ বলে শপথ করান মুনির হাসান। শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘মা, মাতৃভূমি আর মাতৃভাষা—এই তিন মাকে ভালোবাসতে হবে। গণিতকে ভালোবেসে আন্তর্জাতিক গণিত অলিম্পয়াড উৎসবে চ্যাম্পিয়ন হওয়ার মাধ্যমে তিন মাকে সারা বিশ্বে তুলে ধরা সম্ভব। সে জন্য নিজেদের তৈরি করতে হবে।’ দিন শেষে বিজয়ীদের হাতে পদক তুলে দেন আজিজুল হক কলেজের অধ্যক্ষ সামস্-উল-আলম। তিনি বলেন, ‘প্রথম আলোর অনেক সৃজনশীল কাজের মধ্যে গণিতের এই উৎসব আয়োজন এক অনবদ্য উদ্যোগ। মেধাবী জাতি ও সুন্দর ভবিষ্যৎ প্রজন্ম গড়তে নিজেকে তৈরি করার বিকল্প নেই। গণিত জয়ের এই চ্যালেঞ্জের জন্য শিক্ষার্থীদের তৈরি থাকতে হবে। গণিত জয়ের মাধ্যমে বিশ্বকে জয় করতে হবে।’ বগুড়া পুলিশ লাইনস স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ শাহাদৎ আলম বলেন, ‘প্রথম আলো সুন্দর আগামীর স্বপ্ন দেখায়। গণিতে বিশ্বজয়ের মাধ্যমে অবশ্যই শিক্ষার্থীরা একদিন প্রমাণ করবে কালকের পৃথিবীটা আমাদের হবে।’ বগুড়া পুলিশ লাইনস স্কুল অ্যান্ড কলেজের সপ্তম শ্রেণির শিক্ষার্থী আসিফ করিমের চার হাত-পা নেই। জন্ম থেকে শারীরিক প্রতিবন্ধী আসিফকে এই বাধা গণিত জয়ের স্বপ্ন দেখা থেকে দমাতে পারেনি। সাতসকালে হুইলচেয়ারে বসে নানার সঙ্গে গণিত উৎসবে এসেছিল সেও। উৎসবে চারটি ভাগে ৬০ জন শিক্ষার্থীকে বিজয়ী ঘোষণা করে তাদের হাতে একটি করে পদক, টি-শার্ট ও সনদ তুলে দেওয়া হয়। ঝালকাঠি: সকাল নয়টায় ঝালকাঠি সরকারি হরচন্দ্র বালিকা উচ্চবিদ্যালয়ের মাঠে শুরু হয় গণিত উৎসবের। তবে সকাল সাতটা থেকেই শিক্ষার্থীরা মাঠে সমবেত হতে থাকে। উৎসবে ঝালকাঠি, বরিশাল, পিরোজপুর ও ভোলার ৩০টি বিদ্যালয়ের প্রায় সাড়ে সাত শ শিক্ষার্থী অংশ নেয়। প্রথম আলো বন্ধুসভার সদস্যদের জাতীয় সংগীত পরিবেশনার সঙ্গে জাতীয় পতাকা উত্তোলনের মাধ্যমে উৎসবের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সৈয়দ আতিয়ার রহমান। এ সময় জাতীয় গণিত অলিম্পিয়াডের পতাকা উত্তোলন করেন ডাচ্-বাংলা ব্যাংকের বরিশাল শাখার ব্যবস্থাপক মো. আলমগীর হুমায়ুন ও আন্তর্জাতিক গণিত অলিম্পিয়াডের পতাকা উত্তোলন করেন বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থবিদ্যা বিভাগের চেয়ারম্যান সমীরণ রায়। সৈয়দ আতিয়ার রহমান, মো. আলমগীর হুমায়ুন ও সমীরণ রায় ছাড়াও উৎসবে শুভেচ্ছা বক্তব্য দেন বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক রাহাত হোসেন, ড্যাফোডিল ইউনিভার্সিটির শিক্ষক জাভেদ ইকবাল, মুক্তিযোদ্ধা চিত্তরঞ্জন দত্ত, ঝালকাঠি সরকারি হরচন্দ্র বালিকা উচ্চবিদ্যালয়ের শিক্ষক মো. কামরুল ইসলাম ও মানিক লাল ভদ্র, ঝালকাঠি সরকারি উচ্চবিদ্যালয়ের শিক্ষক নান্টু রঞ্জন বিশ্বাস, প্রথম আলোর বরিশাল প্রতিনিধি সাইফুর রহমান, ঝালকাঠি প্রতিনিধি আক্কাস সিকদার ও ঝালকাঠি বন্ধুসভার সাংগঠনিক সম্পাদক সাইফুল ইসলাম। শুভেচ্ছা বক্তব্যে সৈয়দ আতিয়ার রহমান বলেন, ‘বিশ্বের সঙ্গে তাল মিলিয়ে এগিয়ে যেতে আমাদের ভালোভাবে গণিত শিখতে হবে। সবাইকে মনে রাখতে হবে, গণিতের সমীকরণে বর্তমান বিশ্ব চলছে।’ কুইজ পর্বে নানা প্রশ্ন করে শিক্ষার্থীরা। চারটি বিভাগে ৫১ জন বিজয়ীকে পুরস্কৃত করা হয়। এর আগে নৃত্য ও সংগীত পরিবেশন করেন ঝালকাঠি বন্ধুসভার সদস্যরা।
গণিতের জিয়ন কাঠিতে দেশ জাগানোর অঙ্গীকার করল শিক্ষার্থীরা। সেই সঙ্গে তিন ‘ম’—মুখস্থ, মিথ্যা ও মাদককে না বলার শপথ করেছে তারা। রংপুর জিলা স্কুল মাঠে গতকাল শনিবার অনুষ্ঠিত ডাচ্-বাংলা ব্যাংক-প্রথম আলো গণিত উৎসব ২০১৫-এর আঞ্চলিক পর্বে শিক্ষার্থীরা এই অঙ্গীকার করে। গণিত শেখো, স্বপ্ন দেখো—স্লোগানের এই উৎসবে রংপুর, নীলফামারী, কুড়িগ্রাম, লালমনিরহাট ও দিনাজপুরের ১০৩ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের এক হাজার শিক্ষার্থী অংশ নেয়। এ উৎসবের আয়োজক বাংলাদেশ গণিত অলিম্পিয়াড কমিটি। পৃষ্ঠপোষক ডাচ্-বাংলা ব্যাংক লিমিটেড। সার্বিক ব্যবস্থাপনায় প্রথম আলো। কনকনে ঠান্ডা উপেক্ষা করে নির্ধারিত সময়ের আগেই শিক্ষার্থী, শিক্ষক ও অভিভাবকেরা রংপুর জিলা স্কুলের মাঠে জড়ো হতে থাকেন। সকাল নয়টার আগেই পুরো মাঠ উৎসবমুখর হয়ে ওঠে। সকাল সাড়ে নয়টায় জাতীয় সংগীত পরিবেশনার মধ্য দিয়ে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) এ টি এম মাহবুব-উল-করিম। আন্তর্জাতিক গণিত উৎসবের পতাকা উত্তোলন করেন ডাচ্-বাংলা ব্যাংক রংপুর শাখার ব্যবস্থাপক অপূর্ব রায় ও বাংলাদেশ গণিত উৎসবের পতাকা উত্তোলন করে উৎসবের উদ্বোধন ঘোষণা করেন রংপুর জিলা স্কুলের প্রধান শিক্ষক আবু রায়হান মিজানুর রহমান। মিজানুর রহমান শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে বলেন, শুধু পাঠ্যপুস্তকের মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকলে চলবে না, ভালো শিক্ষার্থী হয়ে দেশ গঠনে ভূমিকা রাখতে হবে। মাহবুব-উল করিম বলেন, প্রথম আলো পত্রিকা গণিত উৎসবের মাধ্যমে বাংলাদেশকে বিশ্বের দরবারে উপস্থাপন করছে। উদ্বোধনী পর্বের পর শিক্ষার্থীরা সোয়া ঘণ্টার মূল্যায়ন পরীক্ষায় বসে। পরে শুরু হয় প্রশ্নোত্তর পর্ব হয়। ‘শূন্য দিয়ে কোনো কিছুকে ভাগ করা যায় না কেন’, ‘মানুষ কেন স্বপ্ন দেখে’, ‘আকাশের তারা কেন গণনা করা যায় না’—এমন অনেক মজার মজার প্রশ্ন করে শিক্ষার্থীরা। প্রশ্নের উত্তর দেন হাজী দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক বিকাশ চন্দ্র সরকার, রংপুর ক্যান্টনমেন্ট পাবলিক স্কুল ও কলেজের শিক্ষক শাহজাহান মিয়া, পীরগঞ্জ মহিলা ডিগ্রি কলেজের শিক্ষক আলমগীর মো. সাইফুল ইসলাম, শঠিবাড়ী ডিগ্রি কলেজের শিক্ষক তারিক প্রধান। প্রশ্নোত্তর পর্ব শেষে শুভেচ্ছা বক্তব্য দেন বন্ধুসভার সভাপতি শাহজাদ হোসেন ও প্রথম আলোর রংপুরের নিজস্ব প্রতিবেদক আরিফুল হক। পুরো অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন গণিত অলিম্পিয়াড কমিটির সাধারণ সম্পাদক মুনির হাসান। উৎসবে বন্ধুসভার বন্ধুরা সংগীত পরিবেশন করেন। উৎসবে চার ক্যাটাগরিতে ৬০ জন বিজয়ীকে সনদ দেওয়া হয়। তাদের পরিয়ে দেওয়া হয় পদক ও টি-শার্ট।
সকালে সূর্যের দেখা নেই। কুয়াশার চাদরে ঢাকা চারদিক। সঙ্গে কনকনে ঠান্ডা হাওয়া। কিন্তু তাতে কী? গণিত উৎসব বলে কথা! পাইয়ের মান একই কেন? পৃথিবীটা গোল, অন্য আকৃতির হয় না কেন? লসাগু বড়, তো গসাগু ছোট কেন? এসব প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে উদ্গ্রীব যাদের মন, তাদের আটকাতে পারেনি কুয়াশার বাধা আর শীতের কনকনে হাওয়া। চোখে-মুখে গণিত জয়ের স্বপ্ন নিয়েই গতকাল শুক্রবার পঞ্চগড় ও বরগুনায় গণিত উৎসবে যোগ দিয়েছিল খুদে শিক্ষার্থীরা। উৎসবে পঞ্চগড় ও ঠাকুরগাঁও এবং বরগুনা ও পটুয়াখালী—এ চার জেলার শতাধিক প্রতিষ্ঠানের সহস্রাধিক খুদে শিক্ষার্থী অংশ নেয়। ডাচ্-বাংলা ব্যাংকের পৃষ্ঠপোষকতা ও প্রথম আলোর সার্বিক সহযোগিতায় অনুষ্ঠিত হচ্ছে ১৩তম এই আঞ্চলিক উৎসব। ‘গণিত শেখো, স্বপ্ন দেখো’ উৎসবের স্লোগান। পঞ্চগড়: সকাল আটটা থেকেই খুদে গণিতবিদদের পদচারণে মুখর হয়ে ওঠে পঞ্চগড় বিপি সরকারি উচ্চবিদ্যালয় মাঠ। গণিতকে জয় করার উৎসাহ নিয়ে আলোচনায় মেতে ওঠে মাঠজুড়ে ছড়িয়ে থাকা শিক্ষার্থীরা। গণিতের ভয় জয় করে গণিতকে ভালোবেসে এগিয়ে যাওয়ার নেশা তাদের চোখে-মুখে। তেঁতুলিয়া থেকে ভাইয়ের সঙ্গে এসেছে ছোট্ট শিশু তমা। চারদিক এত শিক্ষার্থীর আনাগোনা দেখে অবাক সে। গণিত করবে? জিজ্ঞেস করতেই মাথা নেড়ে সায় দিয়ে বলে, ‘আমি এখন অল্প পারি, আরেকটু বড় হয়ে ভাইয়ার মতো করব।’ সাড়ে নয়টার দিকে উৎসবের স্লোগান লেখা ব্যানার বেঁধে একঝাঁক বেলুন উড়িয়ে ও প্রথম আলো বন্ধুসভার সদস্যদের জাতীয় সংগীত পরিবেশনের মধ্য দিয়ে শুরু হয় পঞ্চগড় অঞ্চলের গণিত উৎসব। পতাকা উত্তোলন করে উৎসব উদ্বোধন করেন শিক্ষাসচিব নজরুল ইসলাম খান, ওই বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক জীবধন বর্মণ ও ডাচ্-বাংলা ব্যাংকের পঞ্চগড় শাখার ব্যবস্থাপক মো. মোফাজ্জল হোসেন মণ্ডল। প্রধান অতিথির বক্তব্যে শিক্ষাসচিব আশা প্রকাশ করে বলেন, ২০১৭ সালের মধ্যে আন্তর্জাতিক গণিত অলিম্পিয়াডে বাংলাদেশের এই খুদে গণিতবিদেরা স্বর্ণপদক ছিনিয়ে আনবে। গণিত ছাড়াও বাংলা, ইংরেজি, ইতিহাস, ভূগোল ইত্যাদি বিষয়ে এ রকম আয়োজন করলে শিক্ষায় গতিশীলতা আসবে। সকাল সাড়ে ১০টায় ঘণ্টা বাজিয়ে শুরু হয় সোয়া এক ঘণ্টার পরীক্ষা। পঞ্চগড় ও ঠাকুরগাঁওয়ের অর্ধশত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ছয় শতাধিক শিক্ষার্থী এতে অংশ নেয়। পরে শিক্ষার্থীরা মজার মজার প্রশ্ন করে জিতে নেয় পুরস্কার। রুবিকস কিউব প্রতিযোগিতায় চ্যাম্পিয়ন হয় ঠাকুরগাঁও সরকারি বালক উচ্চবিদ্যালয়ের নবম শ্রেিণর ছাত্র কাজী ফাইয়াজ আবরার। ‘আমরা করব জয়’—এ গানের মধ্য দিয়ে ইতিটানা হয় বর্ণিল এ উৎসবের। এতে শুভেচ্ছা বক্তব্য দেন প্রথম আলোর পঞ্চগড় প্রতিনিধি শহীদুল ইসলাম। এ পর্বে ভেন্যু প্রতিষ্ঠানকে দেওয়া হয় শুভেচ্ছা স্মারক। স্মারক নিয়ে জীবধন বর্মণ বলেন, গণিত নীরস বিষয় নয়, আজকের উৎসবই এর প্রমাণ। পরে চার ক্যাটাগরিতে ৪০ বিজয়ীকে জাতীয় উৎসবের জন্য নির্বাচন করা হয়। বিজয়ীদের হাতে তুলে দেওয়া হয় সনদ। পরিয়ে দেওয়া হয় মেডেল ও টি-শার্ট।
বরগুনা: সকাল নয়টায় জাতীয় সংগীত পরিবেশনের মধ্য দিয়ে বরগুনা সরকারি উচ্চবিদ্যালয় মাঠে শুরু হয় বরিশাল অঞ্চলের গণিত উৎসব। নয়টার আগেই ভরে ওঠে বিদ্যালয়ের মাঠে নির্মিত প্যান্ডেল। এ উৎসবে বরগুনা ও পটুয়াখালীর ৫৫টি স্কুলের ৪৯০ জন শিক্ষার্থী অংশ নেয়। প্রাথমিক, নিম্নমাধ্যমিক, মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক—এই চার বিভাগে শিক্ষার্থীরা উৎসবে পরীক্ষায় অংশ নেয়। বন্ধুসভার সদস্যদের গাওয়া জাতীয় সংগীতের সঙ্গে পতাকা উত্তোলন করে উৎসবের উদ্বোধন করেন বরগুনার জেলা প্রশাসক মীর জহুরুল ইসলাম, ওই বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সৈয়দ আহম্মেদ ও পটুয়াখালী এ কে এম কলেজের সহকারী অধ্যাপক গৌতম সাহা। প্রধান অতিথির বক্তব্যে জেলা প্রশাসক বলেন, আধুনিক ও যুক্তিনির্ভর প্রজন্ম বির্নিমাণে এ উৎসব এক যুগান্তকারী পদক্ষেপ। একসময় গণিতে শিক্ষার্থীদের খুব ভীতি ছিল। অভিভাবকেরাও এটি নিয়ে উদ্বিগ্ন থাকতেন। এখন তা অনেক কমেছে। গণিত উৎসব এ ক্ষেত্রে অনন্য ভূমিকা রাখছে। এ উৎসবের জন্য প্রথম আলো ও ডাচ্-বাংলা ব্যাংককে ধন্যবাদ জানান তিনি। জেলা প্রশাসক শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে বলেন, গণিতকে ভয় করলে চলবে না। গণিতকে আনন্দ ও বিনোদন আর মেধাবিকাশের সহায়ক বিষয় হিসেবে গণ্য করতে হবে। গণিতভীতিকে জয় করে বিশ্বের বুকে দেশের সম্মান বয়ে আনতে হবে। উৎসবে শুভেচ্ছা বক্তব্যে প্রধান শিক্ষক সৈয়দ আহম্মেদ বলেন, ‘পৃথিবীর অপার বিস্ময় হচ্ছে আমাদের মহাবিশ্ব। এ মহাবিশ্বকে জানতে গাণিতিক নিয়ম সম্পর্কে জানতে হবে। চলতি বিশ্বের সঙ্গে আমাদের তাল মেলাতে হলে ভালোভাবে গণিত শিখতে হবে। মুখস্থবিদ্যা পরিহার করতে হবে।’ কুইজ পর্বে শিক্ষার্থীরা প্রকৃত উৎপাদক ও মৌলিক উৎপাদকের পার্থক্য কী? টামটা কী? অসংজ্ঞায়িত ও অনির্ণেয়র মধ্যে পার্থক্য কী? শক্তির উৎস কী? পৃথিবী গোল কেন? বিশ্বের এত শক্তি কোথা থেকে আসে? এ রকম নানা প্রশ্ন করে। শিক্ষার্থীদের এমন প্রশ্নে উৎসবে এক ভিন্ন ধরনের আমেজ তৈরি করে। প্রশ্নের জবাব দেন পটুয়াখালী এ কে এম কলেজের সহকারী অধ্যাপক গৌতম দাস ও বরগুনা সরকারি বালিকা বিদ্যালয়ের জ্যেষ্ঠ সহকারী শিক্ষক বাবুল আকতার। কুইজ পর্ব শেষে সমাপনী অনুষ্ঠানে প্রথম আলোর বরগুনার নিজস্ব প্রতিবেদক এম জসীম উদ্দীন, পটুয়াখালী প্রতিনিধি শংকর দাস, বন্ধুসভার সুশান্ত পোদ্দার সবাইকে শুভেচ্ছা জানান। উৎসবে চ্যানেল আইয়ের সেরাকণ্ঠ শিল্পী অমিত কর্মকার গান গেয়ে শোনান। এ ছাড়া বন্ধুসভার তমা খান, ঈষাণ, তুহিন খান, সানজিদা শোনান গণিতের গান। শেষে মেহেদি ও ফেরদৌসের নৃত্য এবং বন্ধুসভার প্রয়োজনায় শোধন নামের একটি নাটিকা মঞ্চস্থ হয়।
পঞ্চগড়ে বেলুন উড়িয়ে গণিত উৎসবের উদ্বোধন করছেন শিক্ষাসচিব নজরুল ইসলাম খান। ছবিটি আজ বিপি সরকারি উচ্চবিদ্যালয়ের মাঠ থেকে তোলা হয়। ছবি: মঈনুল ইসলামশৈত্যপ্রবাহের হিমেল বাতাসের মধ্যে সমবেত কণ্ঠে জাতীয় সংগীতের সঙ্গে পতাকা উত্তোলন। এরপর মুহুর্মুহু করতালিতে আকাশে উড়ল রঙিন বেলুন। গণিত উৎসব শুরু হওয়ার কথা ঘোষণা করলেন প্রধান অতিথি। আজ শুক্রবার সকাল সাড়ে নয়টায় পঞ্চগড়ের বিপি সরকারি উচ্চবিদ্যালয়ের মাঠে এভাবেই শুরু হয়েছে গণিত উৎসবের আঞ্চলিক পর্বের অনুষ্ঠান। ‘গণিত শেখো, স্বপ্ন দেখো’ স্লোগান সামনে রেখে শুরু হওয়া ১৩তম গণিত উৎসবের আয়োজক বাংলাদেশ গণিত অলিম্পিয়াড কমিটি। প্রথম আলোর সহযোগিতায় আর ডাচ-বাংলা ব্যাংকের পৃষ্ঠপোষকতায় আঞ্চলিক পর্বের এ অনুষ্ঠানে পঞ্চগড় ও ঠাকুরগাঁও জেলার ৫০টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ৬০০-এর বেশি শিক্ষার্থী অংশ নিচ্ছে। প্রাথমিক, নিম্ন-মাধ্যমিক, মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষার্থীরা অংশ নিচ্ছে প্রতিযোগিতায়। অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি শিক্ষাসচিব নজরুল ইসলাম খান জাতীয় পতাকা উত্তোলন করেন। ভেন্যু প্রতিষ্ঠানের প্রধান শিক্ষক জীবধন বর্মণ বাংলাদেশ গণিত অলিম্পিয়াডের পতাকা এবং ডাচ-বাংলা ব্যাংকের পঞ্চগড় শাখার ব্যবস্থাপক মো. মোফাজ্জল হোসেন মণ্ডল আন্তর্জাতিক অলিম্পিয়াডের পতাকা উত্তোলন করেন। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের বক্তৃতায় নজরুল ইসলাম খান বলেন, ২০১৭ সালের মধ্যে আন্তর্জাতিক গণিত অলিম্পিয়াডে বাংলাদেশের এই খুদে গণিতবিদেরা স্বর্ণপদক ছিনিয়ে আনবে। গণিত ছাড়াও বাংলা, ইংরেজি, ইতিহাস, ভূগোল ইত্যাদি বিষয়ে এ রকম আয়োজন করলে শিক্ষায় গতিশীলতা আসবে। গণিত উৎসবের এ অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত রয়েছেন বাংলাদেশ গণিত অলিম্পিয়াড কমিটির সাধারণ সম্পাদক মুনির হাসান, এটুআই প্রকল্পের জনপ্রেক্ষিত বিশেষজ্ঞ নাঈমুজ্জামান, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) শামসুল আজম, মকবুলার রহমান সরকারি কলেজের সহকারী অধ্যাপক এহতেশামুল হক প্রমুখ।
আঞ্চলিক গণিত উৎসবের তৃতীয় দিনের মিলনমেলাও দারুণ জমে উঠেছিল। গতকাল রোববার কুষ্টিয়া, ঝিনাইদহ ও নরসিংদীতে তিনটি আসরে সাত জেলার ৮০টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রায় ১৮ শ শিক্ষার্থী অংশ নেয়। কুষ্টিয়া ও নরসিংদীর উৎসবে পাটের জীবনরহস্য উন্মোচনকারী বাংলাদেশি বিজ্ঞানী সদ্যপ্রয়াত মাকসুদুল আলম স্মরণে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়। আঞ্চলিক গণিত উৎসবের এ বছরের উৎসব শুরু হয় গত শুক্রবার। ওই দিন সুনামগঞ্জ, খুলনা, ময়মনসিংহ ও পাবনায় ১১ জেলার ২০৪ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রায় তিন হাজার শিক্ষার্থী অংশ নেয়। শনিবার রাজশাহী, টাঙ্গাইল, হবিগঞ্জ ও নড়াইলে ১০ জেলার ১৪১ প্রতিষ্ঠানের তিন হাজার শিক্ষার্থী উৎসবে মেতে ওঠে। সর্বশেষ গতকাল রোববার তিনটি স্থানে অনুষ্ঠিত উৎসব সকালে বন্ধুসভার সদস্যদের জাতীয় সংগীত পরিবেশনের মধ্য দিয়ে শুরু হয়।
ঘন কুয়াশা ও ঠান্ডা বাতাস উপেক্ষা করে সকাল সাড়ে আটটার আগেই পূর্ণ হয়ে যায় কুষ্টিয়া জিলা স্কুলের মাঠ। জাতীয় পতাকা উত্তোলন ও অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করেন কুষ্টিয়ার অতিরিক্ত জেলা হাকিম (এডিএম) আনার কলি মাহবুব। বাংলাদেশ গণিত অলিম্পিয়াডের পতাকা তোলেন জিলা স্কুলের প্রধান শিক্ষক নিভা রানী পাঠক এবং আন্তর্জাতিক গণিত অলিম্পিয়াডের পতাকা তোলেন ডাচ্-বাংলা ব্যাংকের কুষ্টিয়া শাখার ব্যবস্থাপক নজরুল ইসলাম। উৎসবে কুষ্টিয়া ও মেহেরপুর জেলার প্রায় ২৫টি প্রতিষ্ঠানের ছয় শতাধিক শিক্ষার্থী অংশ নেয়। সকাল পৌনে ১০টায় পরীক্ষা শুরু হয়ে শেষ হয় বেলা ১১টায়। এরপর মূল প্যান্ডেলে চলে প্রশ্নোত্তর পর্ব। অন্যদিকে শিক্ষক মিলনায়তনে চলে খাতা দেখার কাজ। প্রশ্নোত্তর পর্বে শিক্ষার্থীদের মজার মজার ও চমকপ্রদ প্রশ্নের উত্তর দেন মুনির হাসান। এর ফাঁকে ফাঁকে চলে কুষ্টিয়া বন্ধুসভার সদস্য ও উৎসবে অংশ নেওয়া ছাত্রছাত্রীদের গান, কবিতা ও আবৃত্তি। উৎসবে রুবিকস কিউব ২৪.৬ সেকেন্ড মিলিয়ে প্রতিযোগিতায় চ্যাম্পিয়ন হয় কুষ্টিয়া জিলা স্কুলের ছাত্র আবদুল্লাহ শাহরিয়ার।
উদ্বোধনী বক্তব্যে আনার কলি মাহবুব বলেন, ‘শীতের শীতল বাতাস ও গণিতের ভয় উপেক্ষা করে তোমরা এখানে এসেছ। তোমরাই পারবে ভবিষ্যতে দেশকে নেতৃত্ব দিতে।’ অনুষ্ঠানে কুষ্টিয়া সরকারি কলেজের বাংলা বিভাগের শিক্ষক নুরুন্নাহার, বাংলাদেশ গণিত অলিম্পিয়াডের সাধারণ সম্পাদক ও যুব কর্মসূচির সমন্বয়ক মুনির হাসান, প্রথম আলোর কুষ্টিয়া প্রতিনিধি তৌহিদী হাসান প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। ঝিনাইদহ ওয়াজির আলী মাধ্যমিক বিদ্যালয় মাঠে উৎসবে অংশ নেয় ঝিনাইদহ, চুয়াডাঙ্গা ও মাগুরা জেলার ২৫ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সাত শতাধিক শিক্ষার্থী। সকাল সাড়ে নয়টায় সরকারি কেসি কলেজের অধ্যক্ষ বি এম রেজাউল করিম জাতীয় পতাকা উত্তোলন করেন। আন্তর্জাতিক গণিত অলিম্পিয়াডের পতাকা উত্তোলন করেন ওয়াজির আলী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সহকারী প্রধান শিক্ষিকা নাহিদ আক্তার এবং বাংলাদেশ গণিত অলিম্পিয়াডের পতাকা উত্তোলন করেন একই বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সাইফুল ইসলাম। উপস্থিত ছিলেন ঝিনাইদহ আমেনা খাতুন ডিগ্রি কলেজের অধ্যক্ষ আমিনুর রহমান। রেজাউল করিম বলেন, ‘মানুষের উন্নতির জন্য ভাষায় দক্ষতা আর গণিতে পারদর্শিতা থাকা দরকার। প্রথম আলো শিক্ষার্থীদের নিয়ে নানামুখী কর্মসূচি বাস্তবায়ন করে আসছে, যা আমাদের ছেলেমেয়েদের বুদ্ধি বিকাশে অনেক এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে।’ গণিতের পরীক্ষা শুরু হয় সকাল ১০টায়। শেষ হয় বেলা সোয়া ১১টা পর্যন্ত। আলোচনা করেন অধ্যক্ষ আমিনুর রহমান, শিক্ষক নাহিদ আক্তার, প্রবীণ শিক্ষক আলতাফ হোসেন, বন্ধুসভার সভাপতি সাইক-আল-জামি লিশন ও প্রথম আলোর নিজস্ব প্রতিবেদক আজাদ রহমান। অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন প্রথম আলো বন্ধুসভার উপদেষ্টা শাহীনূর আলম। নরসিংদী ও ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার প্রায় ২০টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের পৌনে পাঁচ শ শিক্ষার্থী সমবেত হয় নরসিংদীর সরকারি বালিকা উচ্চবিদ্যালয় মাঠে। জেলা প্রশাসক আবু হেনা মোরশেদ জামান জাতীয় পতাকা, ইনডিপেনডেন্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক খোদাদাদ খান গণিত অলিম্পিয়াডের আন্তর্জাতিক পতাকা এবং সরকারি বালিকা উচ্চবিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক গৌতম চন্দ্র মিত্র বাংলাদেশ গণিত অলিম্পিয়াডের পতাকা উত্তোলন করেন। উৎসব উদ্বোধন করেন গৌতম চন্দ্র মিত্র। অনুষ্ঠানে প্রথম আলোর সহযোগী সম্পাদক আব্দুল কাইয়ুম উপস্থিত ছিলেন। উৎসবে শিক্ষার্থীরা মাদক, মুখস্থ ও মিথ্যাকে না বলার অঙ্গীকার করে। ১৩তম বর্ষের এই উৎসবের আয়োজক বাংলাদেশ গণিত অলিম্পিয়াড কমিটি। পৃষ্ঠপোষক ডাচ্-বাংলা ব্যাংক লিমিটেড। সার্বিক ব্যবস্থাপনায় প্রথম আলো। ‘গণিত শেখো, স্বপ্ন দেখো’ স্লোগান নিয়ে প্রাথমিক, নিম্নমাধ্যমিক, মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক—এই চার বিভাগে শিক্ষার্থীরা উৎসবস্থলে অনুষ্ঠিত পরীক্ষায় অংশ নেয়। সব স্থানেই বন্ধুসভার সদস্যদের জাতীয় সংগীত পরিবেশনের মধ্য দিয়ে উৎসব উদ্বোধন করা হয়।
কুষ্টিয়া ও নরসিংদীতে আজ রোববার সকাল থেকে শুরু হয়েছে গণিত উৎসব। শীতের সকালে এ উৎসবে দুই জেলার প্রায় ৪৫টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের এক হাজারের বেশি শিক্ষার্থী অংশ নিয়েছে। কুষ্টিয়ায় অনুষ্ঠান শুরু হওয়ার নির্ধারিত সময় ছিল সকাল সাড়ে আটটা। এর আগেই ঘন কুয়াশা ও মৃদু শীতল বাতাস জয় করে শিক্ষার্থীরা উৎসবস্থলে আসতে শুরু করে। সাড়ে আটটার আগেই পূর্ণ হয়ে যায় কুষ্টিয়া জিলা স্কুলের মাঠ। সেখানে ডাচ-বাংলা ব্যাংক-প্রথম আলো গণিত উৎসব শুরু হয়েছে। সকাল নয়টায় কুষ্টিয়া বন্ধুসভার সদস্যরা জাতীয় সংগীত পরিবেশন করেন। জাতীয় পতাকা উত্তোলন ও অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করেন কুষ্টিয়ার অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট (এডিএম) আনার কলি মাহবুব। বাংলাদেশ গণিত অলিম্পিয়াডের পতাকা তোলেন কুষ্টিয়া জিলা স্কুলের প্রধান শিক্ষক নিভা রানী পাঠক ও আন্তর্জাতিক পতাকা তোলেন ডাচ-বাংলা ব্যাংকের কুষ্টিয়া শাখার ব্যবস্থাপক নজরুল ইসলাম। এ সময় বাংলাদেশ গণিত অলিম্পিয়াডের সাধারণ সম্পাদক ও যুব কর্মসূচির সমন্বয়ক মুনির হাসান, প্রথম আলোর কুষ্টিয়া প্রতিনিধি তৌহিদী হাসান প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। উদ্বোধনী বক্তব্যে আনার কলি মাহবুব বলেন, ‘শীতের শীতল বাতাস ও গণিতের ভয়কে উপেক্ষা করে তোমরা যারা আজ এখানে এসেছ, তোমরাই পারবে ভবিষ্যতে দেশকে নেতৃত্বে দিতে। জয় করবে সকল বাধা-বিপত্তি।’ কুষ্টিয়ার উৎসবে কুষ্টিয়া ও মেহেরপুর জেলার প্রায় ২৫টি প্রতিষ্ঠানের ছয় শতাধিক শিক্ষার্থী অংশ নিচ্ছে। সকাল পৌনে ১০টায় পরীক্ষা শুরু হয়। নরসিংদী: সকাল থেকেই নরসিংদী সরকারি বালিকা উচ্চবিদ্যালয়ের মাঠে আসতে থাকে দলে দলে শিক্ষার্থীরা। এখানেই গণিত উৎসবের নরসিংদী আঞ্চলিক পর্যায়ের অনুষ্ঠান। ১৩তম এ গণিত উৎসবের স্লোগান ‘গণিত শেখো, স্বপ্ন দেখো’। অনুষ্ঠানের শুরুতে সকাল সাড়ে নয়টায় নরসিংদী বন্ধুসভার সদস্যরা জাতীয় সংগীত পরিবেশন করেন। এ সময় জেলা প্রশাসক আবু হেনা মোরশেদ জামান জাতীয় পতাকা, ইনডিপেনডেন্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক খোদাদাদ খান গণিতের আন্তর্জাতিক পতাকা ও নরসিংদী সরকারি বালিকা উচ্চবিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক গৌতম চন্দ্র মিত্র বাংলাদেশ গণিত অলিম্পিয়াডের পতাকা উত্তোলন করেন। এ সময় প্রথম আলোর যুগ্ম সম্পাদক আব্দুল কাইয়ুম উপস্থিত ছিলেন। পরে প্রধান শিক্ষক গৌতম চন্দ্র মিত্র গণিত উৎসবের উদ্বোধন করেন। অনুষ্ঠানে নরসিংদী ও ব্রহ্মণবাড়িয়া জেলার প্রায় ২০টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের পৌনে পাঁচ শ শিক্ষার্থী অংশগ্রহণ করছে। প্রাথমিক, নিম্ন মাধ্যমিক, মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক এই চার বিভাগে ভাগ হয়ে শিক্ষার্থীরা গণিত প্রতিযোগিতায় অংশ নিচ্ছে।
শব্দতরঙ্গ কী, প্লুটোকে গ্রহের তালিকা থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে কেন—এমন অফুরন্ত প্রশ্ন আর উত্তর। পাশাপাশি নাচ, গান, কবিতা, কুইজ। নানা আয়োজনে গতকাল শনিবার রাজশাহী, টাঙ্গাইল, হবিগঞ্জ ও নড়াইলে হয়ে গেল গণিত উৎসব। উৎসবে বিশিষ্টজনদের কথায় উঠে আসে গণিতের মাহাত্ম্য, ‘গণিত মানুষকে সৃজনশীল হতে শেখায়’, ‘গণিতের ছন্দ সমগ্র সৃষ্টির মধ্যে নিহিত আছে’। এ উৎসবের আয়োজক বাংলাদেশ গণিত অলিম্পিয়াড কমিটি। পৃষ্ঠপোষক ডাচ্-বাংলা ব্যাংক লিমিটেড। সার্বিক ব্যবস্থাপনায় প্রথম আলো। ‘গণিত শেখো, স্বপ্ন দেখো’ স্লোগান নিয়ে প্রাথমিক, নিম্নমাধ্যমিক, মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক—এ চার বিভাগে শিক্ষার্থীরা উৎসবস্থলে অনুষ্ঠিত পরীক্ষায় অংশ নেয়। চার ভেন্যুতে ১০টি জেলার অন্তত ১৪১টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রায় তিন হাজার শিক্ষার্থী যোগ দেয়।
রাজশাহী: সকাল নয়টায় এক হাজার শিক্ষার্থীর কণ্ঠে ধ্বনিত হলো জাতীয় সংগীত। উত্তোলন করা হলো জাতীয় পতাকা। ‘গণিত শেখো স্বপ্ন দেখো’—স্লোগান লেখা উৎসবের ব্যানার নিয়ে আকাশে উড়ে গেল একঝাঁক বেলুন। শুরু হলো রাজশাহী আঞ্চলিক গণিত উৎসব। রাজশাহী শিক্ষা বোর্ড মডেল স্কুল অ্যান্ড কলেজ মাঠে আয়োজিত এ উৎসবে রাজশাহী, নওগাঁ, নাটোর ও চাঁপাইনবাবগঞ্জের ৬৮টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রায় এক হাজার শিক্ষার্থী অংশ নেয়। উৎসবে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করেন রাজশাহী শিক্ষা বোর্ড মডেল স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ মকবুল হোসেন। জাতীয় গণিত অলিম্পিয়াডের পতাকা উত্তোলন করেন ডাচ্-বাংলা ব্যাংকের স্থানীয় শাখার ব্যবস্থাপক আবু আলী মোহাম্মদ আরিফুর রহমান ও আন্তর্জাতিক গণিত অলিম্পিয়াডের পতাকা উত্তোলন করেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজকর্ম বিভাগের শিক্ষক জালাল উদ্দিন। উদ্বোধনী বক্তব্যে মকবুল হোসেন বলেন, ‘আজকের এই খুদে গণিতবিদদের হাতে যদি থাকে দেশ তাহলে প্রথম আলোর ভাষায় বলতে হয়, পথ হারাবে না বাংলাদেশ।’ সকাল পৌনে ১০টায় শুরু হয় এক ঘণ্টার পরীক্ষা। এরপর প্রশ্নোত্তর পর্ব। এই পর্বে শিক্ষার্থীদের প্রশ্নের উত্তর দেন বাংলাদেশ গণিত অলিম্পিয়াড কমিটির সাধারণ সম্পাদক মুনির হাসান, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের ইমেরিটাস অধ্যাপক অরুণ কুমার বসাক, গণিত বিভাগের শিক্ষক আসহাবুল হক, রবিউল হক, রাজশাহী টিচার্স ট্রেনিং কলেজের উপাধ্যক্ষ আবদুস সামাদ মণ্ডল, রাজশাহী কলেজের গণিত বিভাগের শিক্ষক শহীদুল আলম ও নগরের ছোটবনগ্রাম ইউসেপ স্কুলের শিক্ষক মাসুদ রানা। প্রশ্নোত্তর পর্ব শুরুর আগে পাকিস্তানে তালেবানের হামলায় নিহত শিশুদের স্মরণে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়। পরের শিক্ষার্থী মজার মজার প্রশ্ন করে পুরস্কার জিতে নেয়। উৎসবে রুবিকস কিউব প্রতিযোগিতায় চ্যাম্পিয়ন হয়েছে রাজশাহী গভর্নমেন্ট ল্যাবরেটরি স্কুলের দশম শ্রেণির ছাত্র সাদমান ইবনে সাইফুল। অনুষ্ঠানের রাজশাহী বন্ধুসভার বন্ধুরা গণিত জয়ের গান ও দেশাত্মবোধক গান পরিবেশন করেন।
টাঙ্গাইল: সকাল নয়টায় শুরুর কথা থাকলেও শীত উপেক্ষা করে সাড়ে আটটার মধ্যেই পরিপূর্ণ হয়ে যায় উৎসবস্থল। টাঙ্গাইল শহরের বিবেকানন্দ হাইস্কুল অ্যান্ড কলেজ মাঠে জাতীয় পতাকা উত্তোলনের মধ্য দিয়ে উৎসবের উদ্বোধন করেন টাঙ্গাইলের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) আবু সালেহ্ মোহাম্মদ মহিউদ্দিন খাঁ। শুভেচ্ছা বক্তব্য দেন ইনডিপেনডেন্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক খোদাদাদ খান, প্রথম আলোর সহযোগী সম্পাদক আব্দুল কাইয়ুম, বিবেকানন্দ স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ আনন্দ মোহন দে। খোদাদাদ খান বলেন, ‘মনে রাখতে হবে, সৃজনশীল না হয়ে পরীক্ষায় এ প্লাস পেয়ে লাভ নেই। গণিত মানুষকে সৃজনশীল হতে শেখায়।’ উদ্বোধনী অধিবেশনের পর পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। পরীক্ষা শেষে শুরু হয় কুইজ ও প্রশ্নোত্তর পর্ব। প্রশ্নের উত্তর দেন খোদাদাদ খান, আব্দুল কাইয়ুম, আবু সালেহ্ মোহাম্মদ মহিউদ্দিন খাঁ, আনন্দ মোহন দে, মাওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের গণিত বিভাগের চেয়ারম্যান পিনাকী দে, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক সাজ্জাদ ওয়াহিদ ও আহসান হাবিব, পদার্থবিদ্যা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক যোবায়দুল ইসলাম। উৎসবের বিভিন্ন পর্বের সঞ্চালনা করেন জাহিদ হোসাইন খান, মোর্শেদুল আমিন ও টাঙ্গাইল বন্ধুসভার আল মোসাব্বির।
হবিগঞ্জ: হবিগঞ্জ বিকেজিসি বালিকা সরকারি উচ্চবিদ্যালয়ে গতকাল সকাল সাড়ে নয়টায় শুরু হওয়া উৎসবে হবিগঞ্জ ও মৌলভীবাজারের প্রায় ৬০০ শিক্ষার্থী অংশ নেয়। পাশাপাশি ছিলেন তাদের অভিভাবক ও শিক্ষকেরাও। জাতীয় সংগীত পরিবেশনের মধ্য দিয়ে এ গণিত উৎসবের উদ্বোধন করেন বিকেজিসি উচ্চবিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আমেনা খাতুন। এ সময় আন্তর্জাতিক গণিত অলিম্পিয়াডের পতাকা উত্তোলন করেন হবিগঞ্জ বৃন্দাবন সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ বিজিত কুমার ভট্টাচার্য্য ও বাংলাদেশ গণিত অলিম্পিয়াডের পতাকা উত্তোলন করেন ডাচ্-বাংলা ব্যাংক হবিগঞ্জ শাখার ব্যবস্থাপক মোহাম্মদ নজমুল হক। বিজিত কুমার ভট্টাচার্য্য বলেন, ‘সব শিক্ষার্থীই পড়াশোনায় ভালো করতে চায়। কিন্তু যখন প্রশ্নপত্র ফাঁস হয়, তখন আমরা সবাই হতাশ হই। এ অপতৎপরতা বন্ধ না হলে শিক্ষার মান নিয়ে আমরা এগোতে পারব না।’ আমেনা খাতুন বলেন, গণিত শিক্ষার্থীদের নতুন পথ দেখাবে। এরপর পরীক্ষা ও তারপর প্রশ্নোত্তর ও কুইজ প্রতিয়োগিতা শুরু হয়। বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন অনুষ্ঠানের সঞ্চালক বাংলাদেশ গণিত অলিম্পিয়াড কমিটির একাডেমিক কাউন্সিলর মাহমুদুল হাসান। এ পর্বে উপস্থিত ছিলেন বিকেজিসি উচ্চবিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক সুধাংশু কুমার কর্মকার ও নবীগঞ্জ হোমল্যান্ড আইডিয়াল স্কুলের প্রধান শিক্ষক তাপস চন্দ্র আচার্য্য। অনুষ্ঠানে সার্বিক সহযোগিতায় ছিলেন হবিগঞ্জ বন্ধুসভার সদস্যরা।
নড়াইল: ঘন কুয়াশা আর হাড়কাঁপানো শীত উপেক্ষা করে শিক্ষার্থী, অভিভাবক আর অতিথিরা সকাল নয়টা বাজার আগেই নড়াইল সরকারি উচ্চবিদ্যালয় চত্বরে জড়ো হতে শুরু করেন। নয়টায় বন্ধুসভার সদস্যদের জাতীয় সংগীত পরিবেশনের মধ্য দিয়ে শুরু হয় উৎসব। এ সময় জাতীয় পতাকা উত্তোলন করেন জেলা প্রশাসক আবদুল গাফফার খান, আন্তর্জাতিক গণিত অলিম্পিয়াডের পতাকা তোলেন নড়াইল সরকারি উচ্চবিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক অনিল কুমার বিশ্বাস এবং বাংলাদেশ গণিত অলিম্পিয়াডের পতাকা তোলেন ভাষাসৈনিক রিজিয়া খাতুন। জেলা প্রশাসক উৎসবের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন। সকাল ১০টায় ঘণ্টা বাজিয়ে পরীক্ষার কার্যক্রম শুরু হয়। মোট ৮৬৬ জন শিক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশ নেয়। পরীক্ষা নিয়ে বেশ উত্তেজনা ছিল শিক্ষার্থীদের মধ্যে। কে পাস করবে, ঢাকায় যাওয়ার টিকিট পাবে। মজার পর্ব ছিল প্রশ্নোত্তর পর্ব। নানা প্রশ্নের উত্তর দেন গণিতবিদ সৌমিত্র চক্রবর্তী। গণিত অলিম্পিয়াড একাডেমির কাউন্সিলর দলের সদস্য কামরুল হাসান, সুদীপ্ত, স্বাক্ষর, হাসান ইমাম প্রমুখ। অনুষ্ঠানস্থলে নির্মিত তাম্রলিপি, গণিত অলিম্পিয়াডের বই, রকমারি ডট কম, বন্ধুসভার চারটি স্টলে বেশ ভিড় দেখা যায়। পরে বন্ধুসভার সদস্যরা সংগীত পরিবেশন করে। সমাপনীতে বিশিষ্ট সমাজসেবক শৈলেন্দ্রনাথ সাহা, সরকারি উচ্চবিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক অনিল কুমার বিশ্বাস বিজয়ীদের মধ্যে পুরস্কার বিতরণ করেন। শুভেচ্ছা বক্তব্য দেন প্রথম আলোর নড়াইল প্রতিনিধি কার্ত্তিক দাস।
রাজশাহী, নড়াইল, টাঙ্গাইল ও হবিগঞ্জে আজ শনিবার সকালে শুরু হয়েছে গণিত উৎসব। ‘গণিত শেখো, স্বপ্ন দেখো’—স্লোগান নিয়ে শুরু হওয়া উৎসবের আয়োজক বাংলাদেশ গণিত অলিম্পিয়াড কমিটি। এতে পৃষ্ঠপোষকতা করছে ডাচ্-বাংলা ব্যাংক লিমিটেড। আর সার্বিক ব্যবস্থাপনায় রয়েছে প্রথম আলো। আমাদের নিজস্ব প্রতিবেদক ও প্রতিনিধিদের পাঠানো খবর: রাজশাহী: ঘড়ির কাঁটায় সকাল নয়টা। এক হাজার শিক্ষার্থীর কণ্ঠে ধ্বনিত হলো জাতীয় সংগীত। তোলা হলো জাতীয় পতাকা। ‘গণিত শেখো, স্বপ্ন দেখো’—স্লোগান লেখা উৎসবের ব্যানার নিয়ে আকাশে উড়ে গেল একঝাঁক বেলুন। শুরু হলো রাজশাহী আঞ্চলিক গণিত উৎসব। রাজশাহী শিক্ষা বোর্ড মডেল স্কুল অ্যান্ড কলেজ মাঠে আয়োজিত উৎসবে রাজশাহী, নওগাঁ, নাটোর ও চাঁপাইনবাবগঞ্জের ৬৮টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রায় এক হাজার শিক্ষার্থী উৎসবে অংশ নেয়। উৎসবের শুরুতে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করেন রাজশাহী শিক্ষা বোর্ড মডেল স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ মকবুল হোসেন। জাতীয় গণিত অলিম্পিয়াডের পতাকা উত্তোলন করেন ডাচ্-বাংলা লিমিটেডের স্থানীয় শাখার ব্যবস্থাপক আবু আলী মোহাম্মদ আরিফুর রহমান ও আন্তর্জাতিক গণিত অলিম্পিয়াডের পতাকা উত্তোলন করেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজকর্ম বিভাগের শিক্ষক জালাল উদ্দিন। সকাল পৌনে ১০টায় শুরু হয় পরীক্ষা। বেলা ১১টায় পরীক্ষা শেষে চলছে প্রশ্নোত্তর পর্ব। এই পর্বে শিক্ষার্থীদের প্রশ্নের উত্তর দিচ্ছেন বাংলাদেশ গণিত অলিম্পিয়াড কমিটির সাধারণ সম্পাদক ও প্রথম আলোর যুববিষয়ক কর্মসূচির সমন্বয়ক মুনির হাসান, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষক অরুণ কুমার বসাক, গণিত বিভাগের শিক্ষক আসাবুল হক, রবিউল হক ও নগরের ছোটবনগ্রাম ইউসেপ স্কুলের শিক্ষক মাসুদ রানা।
টাঙ্গাইল: টাঙ্গাইলের স্থানীয় বিবেকানন্দ হাইস্কুল অ্যান্ড কলেজ মাঠে সকালে উৎসবের উদ্বোধন করেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) সালেহ মোহাম্মদ মহিউদ্দিন খাঁ। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বিশিষ্ট গণিত বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক খোদাদাদ খান, প্রথম আলোর সহযোগী সম্পাদক আব্দুল কাইয়ুম, বিবেকানন্দ স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ আনন্দ মোহন দে বক্তব্য দেন। উৎসবে জেলার বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ৩৫০ জন শিক্ষার্থী অংশ নিয়েছে। নড়াইল: নড়াইল শহরজুড়ে উৎসবের আমেজ। ঘন কুয়াশা আর হাড় কাঁপানো শীত উপেক্ষা করে শিক্ষার্থী, অভিভাবক আর অতিথিরা সকাল নয়টা বাজার আগেই নড়াইল সরকারি উচ্চবিদ্যালয় চত্বরে জড়ো হতে শুরু করেন। নয়টায় বন্ধুসভার সদস্যদের জাতীয় সংগীত পরিবেশনের মধ্য দিয়ে শুরু হয় উৎসবের কার্যক্রম। এ সময় জেলা প্রশাসক মো. আবদুল গাফফার খান জাতীয় পতাকা, নড়াইল সরকারি উচ্চবিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক অনিল কুমার বিশ্বাস আন্তর্জাতিক গণিত অলিম্পিয়াড পতাকা ও ভাষাসৈনিক রিজিয়া খাতুন বাংলাদেশ গণিত অলিম্পিয়াড পতাকা তোলেন। কাল ১০টায় ঘণ্টা বাজিয়ে পরীক্ষার কার্যক্রম শুরু করা হয়। মোট ৮৬৬ জন শিক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশ নেয়। হবিগঞ্জ: হবিগঞ্জে শুরু হয়েছে আঞ্চলিক পর্যায়ের গণিত উৎসব। আজ সকাল নয়টায় বি কে জি সি বালিকা সরকারি উচ্চবিদ্যালয় মাঠে এ উৎসব শুরু হয়। হবিগঞ্জের এ গণিত উৎসবে হবিগঞ্জ ও মৌলভীবাজার জেলার বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ছয় শতাধিক শিক্ষার্থী অংশ নিয়েছে। প্রাথমিক, নিম্ন মাধ্যমিক, মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক—এই চার বিভাগে শিক্ষার্থীরা গণিত প্রতিযোগিতায় অংশ নিচ্ছে। ১৩তম গণিত উৎসবের উদ্বোধন করেন ভেন্যু প্রতিষ্ঠানের প্রধান শিক্ষক আমেনা খাতুন। এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন হবিগঞ্জ বৃন্দাবন সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ বিজিত কুমার ভট্টাচার্য ও ডাচ্-বাংলা ব্যাংকের হবিগঞ্জ শাখার ব্যবস্থাপক মোহাম্মদ নজমুল হক।
সকালের শুরুটা হয়েছিল কুয়াশার চাদর মুড়ি দিয়ে হাড়-কাঁপানো ঠান্ডা নিয়ে। এ কারণেই বোধহয় গতকাল শুক্রবার সুনামগঞ্জ, খুলনা, ময়মনসিংহ ও পাবনার সাধারণ মানুষের সকালটা শুরু করতে একটু দেরি হয়ে গিয়েছিল। তবে ‘বিশেষ’ কিছু মানুষের সকাল শুরু হয়েছিল সকালেরও আগেই! কুয়াশা কিংবা ঠান্ডা কোনোটাই ঘরে আটকে রাখতে পারেনি তাঁদের। ১১ জেলার ২০৪টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রায় ৩ হাজার শিক্ষার্থী ও তাদের অভিভাবকেরা গতকাল সমবেত হন উল্লিখিত চারটি স্থানে। শীতে জবুথবু হয়ে দূর-দূরান্ত থেকে তাঁরা ছুটে আসেন আঞ্চলিক গণিত উৎসবে। উৎসবের আয়োজক বাংলাদেশ গণিত অলিম্পিয়াড কমিটি। পৃষ্ঠপোষক ডাচ্-বাংলা ব্যাংক লিমিটেড। সার্বিক ব্যবস্থাপনায় প্রথম আলো। ‘গণিত শেখো, স্বপ্ন দেখো’ স্লোগান নিয়ে প্রাথমিক, নিম্নমাধ্যমিক, মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক—এই চার বিভাগে শিক্ষার্থীরা উৎসবস্থলে অনুষ্ঠিত পরীক্ষায় অংশ নেয়। সব স্থানেই বন্ধুসভার সদস্যদের জাতীয় সংগীত পরিবেশনের মধ্য দিয়ে উৎসব উদ্বোধন করা হয়।
খুলনার করোনেশন মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয় মাঠে সকাল নয়টায় উৎসবের উদ্বোধন করেন বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক লায়লা আরজুমান। শুভেচ্ছা বক্তব্য দেন খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি (কুয়েট) বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য শিবেন্দ্র শেখর শিকদার। অনুষ্ঠানে খুলনা, সাতক্ষীরা ও বাগেরহাট জেলার প্রায় ৮২টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ৮৯২ জন শিক্ষার্থী অংশ নেয়। শিবেন্দ্র শেখর শিকদার বলেন, ‘আমরা মহাবিশ্বকে চিহ্নিত করি গাণিতিক নিয়মে। তাই বিশ্বের সঙ্গে তাল মিলিয়ে এগিয়ে যাওয়ার জন্য ভালোভাবে গণিত শিখতে হবে।’ অনুষ্ঠানে বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষকদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন হারুনুর রশিদ, মো. আলহাজ উদ্দীন, হাসিবুল হক, আশীষ বর্মণ ও সাইফুল ইসলাম। কুইজ পর্বে শিক্ষার্থীরা নানান প্রশ্ন করে। আমাদের গ্রহ সূর্য, চাঁদ গোল আকৃতির হয়, কিন্তু অন্য আকৃতির হয় না কেন? প্রকৃত উৎপাদক ও মৌলিক উৎপাদকের মধ্যে পার্থক্য কী? অসংজ্ঞায়িত ও অনির্ণেয়র মধ্যে পার্থক্য কী? শক্তির ধ্বংস বা সৃষ্টি নেই। তাহলে বিশ্বের এত শক্তি কোথা থেকে আসে? এসব প্রশ্ন অনুষ্ঠানে নতুন মাত্রা যোগ করে।
ময়মনসিংহ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় হাইস্কুল মাঠে সকাল সাড়ে নয়টায় উৎসব যৌথভাবে উদ্বোধন করেন বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সৈয়দ রায়হান উদ্দিন এবং বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক জহিরুল হক খন্দকার। অনুষ্ঠানে শুভেচ্ছা বক্তব্য দেন ডাচ্-বাংলা ব্যাংকের উপব্যবস্থাপক নূরে আলম খান। উৎসবে ময়মনসিংহ, জামালপুর, নেত্রকোনা, শেরপুর ও কিশোরগঞ্জ জেলার ৫৫টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের এক হাজার শিক্ষার্থী অংশ নেয়। শিক্ষার্থীদের প্রশ্নের উত্তর দেন শিক্ষক নিরঞ্জন কুমার বসাক, এখলাস উদ্দিন খান, আলতাব হোসেন, রুহুল আমিন, আল মামুন ও রফিকুল ইসলাম। পাবনার আদর্শ গার্লস হাইস্কুল মাঠে উৎসবের উদ্বোধন করেন গণিতের প্রবীণ শিক্ষক ও পাবনা সরকারি শহীদ বুলবুল কলেজের অবসরপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ শিবজিত নাগ। বাংলাদেশ গণিত অলিম্পিয়াডের পতাকা উত্তোলন করেন আদর্শ গার্লস হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক আমান উল্লাহ খান। আন্তর্জাতিক গণিত অলিম্পিয়াডের পতাকা উত্তোলন করেন ডাচ্-বাংলা ব্যাংকের পাবনা শাখার ব্যবস্থাপক শফিকুজ্জামান খান।
শিক্ষার্থীদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন বাংলাদেশ গণিত অলিম্পিয়াড কমিটির সাধারণ সম্পাদক ও প্রথম আলোর যুববিষয়ক কর্মসূচির সমন্বয়ক মুনির হাসান। তাঁর সঙ্গে অংশ নেন শিক্ষক মো. নূর আলম, উদয় শংকর বসাক, তোফাজ্জল হোসেন ভূঁইয়া, উত্তম কুমার চৌধুরী ও আইনুল হক। শুভেচ্ছা বক্তব্য দেন পাবনা সরকারি মহিলা কলেজের সহকারী অধ্যাপক আখতার জামান। উৎসবে জেলার ২৫টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রায় সাড়ে তিন শ শিক্ষার্থী অংশ নেয়। সুনামগঞ্জের অনুষ্ঠানে আসে সুনামগঞ্জ ও সিলেট জেলার ৪২টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ছয় শতাধিক শিক্ষার্থী। উদ্বোধন করেন সুনামগঞ্জের জেলা প্রশাসক শেখ রফিকুল ইসলাম। আন্তর্জাতিক গণিত অলিম্পিয়াডের পতাকা উত্তোলন করেন ডাচ্-বাংলা ব্যাংক সুনামগঞ্জ শাখার ব্যবস্থাপক গোলাম আজাদ এবং বাংলাদেশ গণিত অলিম্পিয়াডের পতাকা উত্তোলন করেন এইচএমপি উচ্চবিদ্যালয়ের সহকারী প্রধান শিক্ষক প্রেমানন্দ বিশ্বাস। পরীক্ষা শেষে শিক্ষার্থীরা প্রশ্নোত্তর ও কুইজ পর্বে অংশ নেয়। প্রশ্নের উত্তর দেন শিক্ষক রাশেদ তালুকদার, সাজেদুল ইসলাম, আবদুল হান্নান, যোগেশ্বর দাস, মুত্তাকিন রহমান ও বিজয় কৃষ্ণ দাস। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন বাংলাদেশ গণিত অলিম্পিয়াড কমিটির একাডেমিক কাউন্সিলর মাহমুদুল হাসান।
ঘন কুয়াশার সঙ্গে ঝিরিঝিরি হিমেল বাতাস। শীতটাও তাই জেঁকে বসেছে। কিন্তু গণিত জয়ের স্বপ্ন নিয়ে আসা শিক্ষার্থীদের কাছে তা কিছুই নয়। উৎসব শুরু হওয়ার আগেই দলে দলে হাজির খুলনা নগরের সরকারি করোনেশন মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়ের মাঠে। আজ শুক্রবার এখানেই গণিত উৎসবের খুলনার আঞ্চলিক পর্যায়ের অনুষ্ঠান।
এ গণিত উৎসবের আয়োজক বাংলাদেশ গণিত অলিম্পিয়াড কমিটি। উৎসবে পৃষ্ঠপোষক ডাচ-বাংলা ব্যাংক লিমিটেড আর সার্বিক ব্যবস্থপনায় প্রথম আলো। ১৩তম এ গণিত উৎসবের স্লোগান ‘গণিত শেখো, স্বপ্ন দেখো’।
আজ শুক্রবার সকাল নয়টায় করোনেশন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা লায়লা আরজুমান গণিত উৎসবের উদ্বোধন করেন। অনুষ্ঠানে খুলনা, সাতক্ষীরা ও বাগেরহাট জেলার প্রায় ৬০টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ৯৫০ শিক্ষার্থী অংশগ্রহণ করছে। প্রাথমিক, নিম্ন মাধ্যমিক, মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক—এই চার বিভাগে ভাগ হয়ে শিক্ষার্থীরা গণিত প্রতিযোগিতায় অংশ নিচ্ছে।
বক্তৃতায় লায়লা আরজুমান বলেন, ‘আমাদের শিক্ষার্থীদের মধ্যে এখন আর গণিতভীতি নেই। গণিত মাধ্যমে আমাদের বিশ্বকে জয় করতে হবে। গণিত জয়ের মধ্য দিয়ে বিদেশের মাটিতে দেশের সুনাম ছড়িয়ে পড়বে।’
অনুষ্ঠানে আরও বক্তৃতা করেন খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুয়েট) ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য প্রফেসর শিবেন্দ্র শেখর শিকদার, গণিত বিভাগের শিক্ষক মো.আলহ্বাজ উদ্দীন, হারুনুর রশিদ প্রমুখ।
পাবনায় গণিত উৎসব শুরু হয়েছে। আজ শুক্রবার সকাল নয়টায় পাবনা আদর্শ গার্লস হাইস্কুলে এ উৎসব শুরু হয়। পাবনা সরকারী শহীদ বুলবুল কলেজের অবসরপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ শিবজিত নাগ এ উৎসবের উদ্বোধন করেন।
পাবনায় অনুষ্ঠিত আঞ্চলিক পর্যায়ের এ গণিত উৎসবে জেলার প্রাথমিক, নিম্ন মাধ্যমিক, মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক পর্যায়ের ২৫টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের তিন শতাধিক শিক্ষার্থী অংশ নিচ্ছে।
অনুষ্ঠানের শুরুতে পাবনা বন্ধুসভার সদস্যরা জাতীয় সংগীত পরিবেশনা করেন। এ সময় পাবনা আদর্শ গার্লস হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক আমান উল্লাহ খান জাতীয় পতাকা উত্তোলন করেন। গণিতের আন্তর্জাতিক পতাকা উত্তোলন করেন ডাচ-বাংলা ব্যাংকের পাবনা শাখার ব্যবস্থাপক শফিকুজ্জামান খান ও বাংলাদেশ গণিত অলিম্পিয়াডের পতাকা উত্তোলন করেন অধ্যক্ষ শিবজিত নাগ।
অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ গণিত অলিম্পিয়াড কমিটির সাধারণ সম্পাদক মুনির হাসান, পাবনা সরকারী মহিলা কলেজের সহযোগী অধ্যাপক আকতারুজ্জামান, সরকারী শহীদ বুলবুল কলেজের সহযোগী অধ্যাপক সমির আহমেদ প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের বক্তৃতায় শিবজিত নাগ বলেন, গণিত দিয়ে সব কিছু জয় করতে হবে। আজকের তোমরাই পারবে গণিত দিয়ে আগামীর পৃথিবীটা জয় করতে।
চোখে ওদের গণিত জয়ের স্বপ্ন