১২ ডিসেম্বর থেকে যেসব অঞ্চলে রেজিস্ট্রেশন শুরু

logo-fb


রেজিস্ট্রেশন বিষয়ে কিছু তথ্য:

রেজিস্ট্রেশন চলবে প্রতিদিন বেলা ১১টা থেকে বিকেল চারটা পর্যন্ত। রেজিস্ট্রেশন করার সময় শিক্ষার্থীদের নিজ নিজ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের পরিচয়পত্র, বেতনের রসিদ, ফলাফলের বিবরণী কিংবা এসএসসি পরীক্ষার প্রবেশপত্র—যেকোনো একটি প্রমাণ হিসেবে দেখাতে হবে।
সব আঞ্চলিক উৎসবে ‘আগে এলে আগে’ ভিত্তিতে নির্ধারিত সংখ্যক শিক্ষার্থীর রেজিস্ট্রেশন করা হবে।
চারটি ক্যাটাগরিতে গণিত অলিম্পিয়াড অনুষ্ঠিত হবে। ২০১৪ সালের অধীত শ্রেিণ অনুযায়ী ক্যাটাগরি নির্ধারিত হবে।
ক. প্রাইমারি, বাংলা মাধ্যম—তৃতীয় থেকে পঞ্চম শ্রেিণ বা সমমান এবং স্ট্যান্ডার্ড-৩ থেকে স্ট্যান্ডার্ড-৫।
খ. জুনিয়র, বাংলা মাধ্যম—ষষ্ঠ থেকে অষ্টম শ্রেিণ বা সমমান এবং স্ট্যান্ডার্ড-৬ থেকে স্ট্যান্ডার্ড-৮।
গ. সেকেন্ডারি, বাংলা মাধ্যম—নবম, দশম শ্রেিণ ও এসএসসি পরীক্ষার্থী বা সমমান এবং ও-লেভেল এবং ও-লেভেল পরীক্ষার্থী।
ঘ. হায়ার সেকেন্ডারি, বাংলা মাধ্যম—একাদশ, দ্বাদশ শ্রেিণ ও এইচএসসি পরীক্ষার্থী বা সমমান এবং এ-লেভেল এবং এ-লেভেল পরীক্ষার্থী।

যে সব অঞ্চলে ১২ ডিসেম্বর শুরু হচ্ছে রেজিস্ট্রেশন

ঢাকা অঞ্চল: ঢাকা-১, ঢাকা-২, গাজীপুর, নারায়ণগঞ্জ, মুন্সিগঞ্জ ও মানিকগঞ্জ।
যোগাযোগ: প্রথম আলো অফিস, ১৯ কারওয়ান বাজার, ঢাকা। প্রয়োজনে: ০১৭১১২৭০৪৩৬ ও ০১৯১৩৯১৬৬৩১

শরীয়তপুর অঞ্চল: মাদারীপুর ও শরীয়তপুর। যোগাযোগ: এফআইটি কার্যালয়, ঋষিপাড়া, সদর রোড, শরীয়তপুর।প্রয়োজনে: ০১৭১৩৫০৫৮৩৪ ও ০১৭১৪৬৪১৯০৪

চাঁদপুর অঞ্চল: চাঁদপুর ও কুমিল্লা।
যোগাযোগ: হাসান আলী সরকারি উচ্চবিদ্যালয় (অফিস প্রাঙ্গণ), চাঁদপুর।
প্রয়োজনে: ০১৮১৮৮৭০৮১১ ও ০১৭১৩১০৩৮৩১

নোয়াখালী অঞ্চল: লক্ষ্মীপুর, ফেনী ও নোয়াখালী। যোগাযোগ: প্রথম আলো অফিস, টাউন হল মোড়, ফ্ল্যাট রোড (দ্বিতীয় তলা), মাইজদী কোর্ট, নোয়াখালী।
প্রয়োজনে: ০১৭৪৯০৭৬১০০ ও ০১৯১২০৯৯৩৮৪

চট্টগ্রাম অঞ্চল: চট্টগ্রাম।
যোগাযোগ: প্রথমা, সানমার স্প্রিং গার্ডেন, জামালখান, চেরাগী পাহাড়, চট্টগ্রাম।
প্রয়োজনে: ০১৬৭০৪৬২৮৪৪ ও ০১৮১৫৮১১৩২৮

কক্সবাজার অঞ্চল: কক্সবাজার জেলা
যোগাযোগ: প্রথম আলো অফিস, হোটেল সাগরগাঁও, ঝাউতলা, কক্সবাজার।
প্রয়োজনে: ০১৭১৩১০৩৮৭৬ ও ০১৭১৪৩৭৪৬৩৪

রাঙামাটি অঞ্চল: রাঙামাটি ও খাগড়াছড়ি
যোগাযোগ: রাঙামাটি অফিস, বই একাডেমির ওপর তলা, বনরূপা, রাঙামাটি।
প্রয়োজনে: ০১৮২০৩৫০১২৫ ও ০১৮১৫৬১০৫৮৯১

৫ ডিসেম্বর থেকে ১৭ টি আঞ্চলে শুরু হচ্ছে গণিত উৎসব ২০১৫ -এর রেজিস্ট্রেশন

logo-fb

রেজিস্ট্রেশন বিষয়ে কিছু তথ্য:

রেজিস্ট্রেশন চলবে প্রতিদিন বেলা ১১টা থেকে বিকেল চারটা পর্যন্ত। রেজিস্ট্রেশন করার সময় শিক্ষার্থীদের নিজ নিজ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের পরিচয়পত্র, বেতনের রসিদ, ফলাফলের বিবরণী কিংবা এসএসসি পরীক্ষার প্রবেশপত্র—যেকোনো একটি প্রমাণ হিসেবে দেখাতে হবে।
সব আঞ্চলিক উৎসবে ‘আগে এলে আগে’ ভিত্তিতে নির্ধারিত সংখ্যক শিক্ষার্থীর রেজিস্ট্রেশন করা হবে।
চারটি ক্যাটাগরিতে গণিত অলিম্পিয়াড অনুষ্ঠিত হবে। ২০১৪ সালের অধীত শ্রেিণ অনুযায়ী ক্যাটাগরি নির্ধারিত হবে।
ক. প্রাইমারি, বাংলা মাধ্যম—তৃতীয় থেকে পঞ্চম শ্রেিণ বা সমমান এবং স্ট্যান্ডার্ড-৩ থেকে স্ট্যান্ডার্ড-৫।
খ. জুনিয়র, বাংলা মাধ্যম—ষষ্ঠ থেকে অষ্টম শ্রেিণ বা সমমান এবং স্ট্যান্ডার্ড-৬ থেকে স্ট্যান্ডার্ড-৮।
গ. সেকেন্ডারি, বাংলা মাধ্যম—নবম, দশম শ্রেিণ ও এসএসসি পরীক্ষার্থী বা সমমান এবং ও-লেভেল এবং ও-লেভেল পরীক্ষার্থী।
ঘ. হায়ার সেকেন্ডারি, বাংলা মাধ্যম—একাদশ, দ্বাদশ শ্রেিণ ও এইচএসসি পরীক্ষার্থী বা সমমান এবং এ-লেভেল এবং এ-লেভেল পরীক্ষার্থী।


যে সব অঞ্চলে ৫ ডিসেম্বর শুরু হচ্ছে রেজিস্ট্রেশন

পঞ্চগড় অঞ্চল: পঞ্চগড় ও ঠাকুরগাঁও
যোগাযোগ: পঞ্চগড় সরকারি মিলনায়তন, পঞ্চগড়।
ফোন: ০১৭৩৭৫৪২৭০৩ ও ০১৭১৩২০১৭৩৭


রংপুর অঞ্চল: রংপুর, দিনাজপুর, কুড়িগ্রাম, নীলফামারী ও লালমনিরহাট।
যোগাযোগ: প্রথম আলো রংপুর অফিস, আইনজীবী সমিতি ভবন, কাচারীবাজার, রংপুর।
ফোন: ০১৭১৯৩০৩৮২৪ ও ০১৭৩৭৩৪৫৫১৭


বগুড়া অঞ্চল: সিরাজগঞ্জ, জয়পুরহাট, নওগাঁ, গাইবান্ধা ও বগুড়া।
যোগাযোগ: প্রথম আলো অফিস, হেলাল ম্যানশন, শেরপুর রোড, সূত্রাপুর, বগুড়া।
ফোন: ০১৭১১১৬৬৯২১ ও ০১৫২১৩১৯১৪৮


রাজশাহী অঞ্চল: নওগাঁ, চাঁপাইনবাবগঞ্জ, নাটোর ও রাজশাহী
যোগাযোগ: প্রথম আলো রাজশাহী অফিস, ২০৯ কুমারপাড়া, বোয়ালিয়া থানার মোড়, রাজশাহী।
ফোন: ০১১৯৫২০৯৫২৬ ও ০১৭২২৮৫৬৮৬৭


পাবনা অঞ্চল: পাবনা
যোগাযোগ: প্রথম আলো পাবনা অফিস, মিতালী ক্যাবিনেটের দ্বিতীয় তলা, ট্রফিক মোড়, পাবনা।
ফোন: ০১৭২৩৪৩০৭৯০ ও ০১৭৩৭৩৪৬৯৪৬


কুষ্টিয়া অঞ্চল: মেহেরপুর ও কুষ্টিয়া
যোগাযোগ: প্রথম আলো অফিস, চৌধুরী কওসের উদ্দিন আহম্মেদ সড়ক, ফজলুল বারী চৌধুরী মার্কেট (তৃতীয় তলা) শিল্পকলার সামনে, মজমপুর গেট, কুষ্টিয়া।
ফোন: ০১৭১৭৪৪৫৫০৪ ও ০১৭৬৭৪৬৪০৫৬


ঝিনাইদহ অঞ্চল: মাগুরা, ঝিনাইদহ ও চুয়াডাঙ্গা
যোগাযোগ: ফরেন ভিউ, এইচ এস এস সড়ক (পুরোনো ডিসি কোর্টের সামনে), ঝিনাইদহ।
ফোন: ০১৭৬০৪০৪০৪০ ও ০১৭২১৬৯৩৫২০


নড়াইল অঞ্চল: গোপালগঞ্জ, যশোর ও নড়াইল
যোগাযোগ: ভিক্টোরিয়া লাইব্রেরি, ভিক্টোরিয়া কলেজের পেছনে, নড়াইল।
ফোন: ০১৭২১৩৮৭০৬৯ ও ০১৯১৮০৫২৩৯৩


রাজবাড়ী অঞ্চল: ফরিদপুর ও রাজবাড়ী
যোগাযোগ: প্রথম আলো প্রতিনিধি কার্যালয়, রেলগেট, সালমা হোটেলের ২য় তলা (প্রেসক্লাবের উল্টো দিকে), রাজবাড়ী। ফোন: ০১৭১৪৯৮৪২৬২ ও ০১৭১১২৬৯২৪৭


খুলনা অঞ্চল: খুলনা, বাগেরহাট ও সাতক্ষীরা
যোগাযোগ: প্রথম আলো অফিস, ৩৩৫ শেরেবাংলা রোড, ময়লাপোতার মোড়, খুলনা।
ফোন: ০১৭১৫৯৫১০৩৬ ও ০১৭১৪৮৪৬৯১৩


ময়মনসিংহ অঞ্চল: কিশোরগঞ্জ, টাঙ্গাইল, জামালপুর, নেত্রকোনা, শেরপুর ও ময়মনসিংহ।
যোগাযোগ:  প্রথম আলো ময়মনসিংহ অফিস, রাইয়ান ভিলা, ১৪ সাহেব আলী রোড, নতুন বাজার, ময়মনসিংহ।
ফোন: ০১৭১৮-৬৬৬৭৩৭ ও ০১৭১৩৬৮৩৬৫২


টাঙ্গাইল অঞ্চল: টাঙ্গাইল
যোগাযোগ: প্রথম আলো অফিস, ইসমাইল মার্কেট  (৩য় তলা), শহীদ জগলু (পুরাতন আদালত) রোড, টাঙ্গাইল। ফোন: ০১৭২৫৩৪৭৪৩৫ ও ০১৬৮৭৬৮৬৩৮০


নরসিংদী অঞ্চল: নরসিংদী ও ব্রাহ্মণবাড়িয়া
যোগাযোগ: নরসিংদী সরকারি কলেজ (রেড ক্রিসেন্ট অফিস), নরিসংদী। ফোন: ০১৯২৪৯৮০৩০৮ ও ০১৯১৩৯২৬৮৬৭


হবিগঞ্জ অঞ্চল: হবিগঞ্জ ও মৌলভীবাজার
যোগাযোগ: প্রথম আলো প্রতিনিধি কার্যালয়, সওদাগর মসজিদ ভবন নিচতলা, বাণিজ্যিক এলাকা, হবিগঞ্জ।
ফোন: ০১৭১১৯২২৫৩১ ও ০১৭২২০০৯৯৯৩


সুনামগঞ্জ অঞ্চল: সুনামগঞ্জ ও সিলেট   
যোগাযোগ: প্রথম আলো অফিস, ২১২ পৌর বিপণি, দ্বিতীয় তলা, সুনামগঞ্জ-৩০০০।
ফোন: ০১৯১৮৬৫৬৫৭৭ ও ০১৭৭২৭৭৬৫৩৩


বরগুনা অঞ্চল: বরগুনা ও পটুয়াখালী
যোগাযোগ: প্রথম আলো অফিস, বঙ্গবন্ধু রোড, বরগুনা
প্রয়োজনে: ০১৭১৭০৪৮৮৭১ ও ০১৭১৯৫৯০১৭৫


ঝালকাঠি অঞ্চল: বরিশাল, পিরোজপুর, ঝালকাঠি ও ভোলা
যোগাযোগ: ঝালকাঠি প্রেসক্লাব, ঝালকাঠি।
প্রয়োজনে: ০১৭১২১৫৪১১৫ ও  ০১৭১০১৮১১৪৫

...............................................

উল্লেখ্য, শরীয়তপুর, চাঁদপুর, নোয়াখালী, চট্টগ্রাম, রাঙামাটি, কক্সবাজার ও ঢাকা আঞ্চলিক উৎসবের রেজিস্ট্রেশনের তথ্য খুব শিগগির জানানো হবে

গণিত উৎসবের স্বেচ্ছাসেবক নিবন্ধন চলছে

শুরু হয়েছে গণিত উৎসব ২০১৫

প্রতিবারের মত এবারও গণিত উৎসব সফল করার জন্য নতুন স্বেচ্ছাসেবক নেয়া হবে। আগ্রহীদেরকে গণিত অলিম্পিয়াডের ওয়েবসাইটে নির্দিষ্ট ফরমে আবেদন করতে হবে। স্বেচ্ছাসেবক হতে হলে শিক্ষাগত যোগ্যতা অবশ্যই এইচএসসি/ সমমানের হতে হবে। একাদশ/দ্বাদশ শ্রেনীতে পড়ছে এমন শিক্ষার্থীরা মুভার্স হতে পারবে না।

এ বছর উৎসবে কাজ করতে চাইলে পুরাতন মুভার্সদের নতুন করে এই ফর্মে আবেদন করতে হবে।

আগ্রহীদের অবশ্যই ১ ডিসেম্বর ২০১৪ রাত ১২ টার মধ্যে আবেদন করতে হবে।
সবাইকে ধন্যবাদ। জয় গণিত উৎসব ২০১৫ !

নিচের লিংকে আবেদন করতে হবে:
http://matholympiad.org.bd/movers-registration

৫৫তম আইএমওর জন্য বাংলাদেশ গণিত দলের নাম ঘোষণা

IMO All

আগামী ৩ থেকে ১৩ জুলাই দক্ষিণ আফ্রিকার কেপটাউন শহরে বসবে প্রাক্-বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ের শিক্ষার্থীদের মেধা যাচাইয়ের সবচেয়ে বড় আসর ৫৫তম আন্তর্জাতিক গণিত অলিম্পিয়াড (আইএমও)-২০১৪। এ আসরে বাংলাদেশের প্রতিনিধিত্ব করার জন্য ছয় কৃতী শিক্ষার্থীর নাম ঘোষণা করেছে বাংলাদেশ গণিত অলিম্পিয়াড কমিটি। শিক্ষার্থীরা হলো নূর মোহাম্মদ শফিউল্লাহ (ঢাকা কলেজ), আদিব হাসান (ময়মনসিংহ জিলা স্কুল), সাজিদ আখতার তূর্য (বিএল সরকারি উচ্চবিদ্যালয়, সিরাজগঞ্জ), আসিফ-ই-ইলাহী (সিলেট সরকারি পাইলট উচ্চবিদ্যালয় সিলেট), মো. সানজিদ আনোয়ার (ময়মনসিংহ জিলা স্কুল) ও মুতাসিম মিম (রাজশাহী কলেজ, রাজশাহী)।
এর আগে চলতি বছরের ১৭ জানুয়ারি বাংলাদেশ গণিত অলিম্পিয়াড কমিটির উদ্যোগে ‘ডাচ্-বাংলা ব্যাংক-প্রথম আলো গণিত উৎসব’-এর আঞ্চলিক পর্বের মধ্য দিয়ে শুরু হয় দশমবারের মতো আন্তর্জাতিক গণিত অলিম্পিয়াডে অংশ নেওয়ার জন্য বাংলাদেশ জাতীয় গণিত দলের সদস্যদের অন্বেষণ। এরপর ২২টি আঞ্চলিক গণিত উৎসবে অংশ নেয় সারা দেশের প্রায় ২৪ হাজার শিক্ষার্থী। এসব আঞ্চলিক উৎসবে বিজয়ী এক হাজার ৫৫ জন শিক্ষার্থী নিয়ে ৮ ও ৯ ফেব্র“য়ারি ঢাকার সেন্ট যোসেফ উচ্চমাধ্যমিক বিদ্যালয়ে অনুষ্ঠিত হয় দ্বাদশ বাংলাদেশ গণিত অলিম্পিয়াড ও জাতীয় গণিত উৎসব ২০১৪। দ্বাদশ বাংলাদেশ গণিত অলিম্পিয়াড থেকে জুনিয়র, সেকেন্ডারি ও হায়ার সেকেন্ডারি ক্যাটাগরির সেরা ৩৫ জন শিক্ষার্থী নিয়ে ১২ থেকে ২০ মার্র্চ ঢাকায় অনুষ্ঠিত হয় দশম বাংলাদেশ গণিত ক্যাম্প। পরবর্তী সময়ে দশম বাংলাদেশ বাংলাদেশ গণিত ক্যাম্প, এপিএমও ফলাফলের ওপর ভিত্তি করে ২০ জন সেরা শিক্ষার্থী নিয়ে অনুষ্ঠিত হয় আইএমও দল নির্বাচনী ক্যাম্প। এই ক্যাম্পের ফলাফলের ভিত্তিতে বাংলাদেশ গণিত দলের কোচ মাহবুব মজুমদার দক্ষিণ আফ্রিকায় অনুষ্ঠেয় ৫৫তম আইএমওর জন্য ছয় সদস্যের বাংলাদেশ দল সুপারিশ করেন। কোচের সুপারিশ অনুযায়ী বাংলাদেশ গণিত অলিম্পিয়াড কমিটি এই ছয় সদস্যের দল চূড়ান্ত করে। এ ছাড়া দলের সঙ্গে দলনেতা, উপদলনেতা ও পর্যবেক্ষক হিসেবে যাবেন বাংলাদেশ গণিত অলিম্পিয়াডের কোচ মাহবুব মজুমদার, সাধারণ সম্পাদক মুনির হাসান ও একাডেমিক কাউন্সিলর তামিম শাহ্রিয়ার।
১৯৫৯ সাল থেকে আন্তর্জাতিক গণিত অলিম্পিয়াড আয়োজন শুরু হয়। বাংলাদেশ সদস্যপদ লাভ করে ২০০৪ সালে এবং ২০০৫ সাল থেকে আইএমওতে অংশ নেওয়া শুরু করে বাংলাদেশ।  এ পর্যন্ত আন্তর্জাতিক গণিত অলিম্পিয়াডে (আইএমও) বাংলাদেশ একটি রৌপ্যপদক, নয়টি ব্রোঞ্জপদক এবং ১৬টি সম্মানজনক স্বীকৃতি লাভ করেছে।
উল্লেখ্য, ডাচ-বাংলা ব্যাংকের পৃষ্ঠপোষকতায় ও প্রথম আলোর  ব্যবস্থাপনায় ৫৫তম আইএমওর জন্য ছয় জনের বাংলাদেশ গণিত দল নির্বাচন ও এর আনুষাঙ্গিক আয়োজন করেছে বাংলাদেশ গণিত অলিম্পিয়াড কমিটি।

এপিএমওতে বাংলাদেশের দুটি ব্রোঞ্জ পদক

এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের আঞ্চলিক গণিত অলিম্পিয়াড এশিয়ান-প্যাসিফিক ম্যাথমেটিক্যাল অলিম্পিয়াডের (এপিএমও) ২৬তম আয়োজনে বাংলাদেশ দুটি ব্রোঞ্জ ও তিনটি সম্মানজনক স্বীকৃতি (অনারেবল মেনশন) পেয়েছে। গতকাল আনুষ্ঠানিকভাবে এ ফলাফল ঘোষণা করা হয়। ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থী নূর মোহাম্মদ সফিউল্লাহ এবং ময়মনসিংহ জিলা স্কুলের শিক্ষার্থী আদিব হাসান ব্রোঞ্জ পদক পেয়েছে। এ ছাড়া সিলেট সরকারি পাইলট উচ্চবিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আসিফ-ই-এলাহী, সিরাজগঞ্জ বিএল সরকারি উচ্চবিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী সাজিদ আখতার ও ঢাকার সেন্ট যোসেফ হায়ার সেকেন্ডারি স্কুলের শিক্ষার্থী সৌমিত্র দাস পেয়েছে সম্মানজনক স্বীকৃতি। বাংলাদেশের এমন সফলতায় বাংলাদেশ গণিত দলের কোচ মাহবুব মজুমদার জানান, 'আমি এমন ফলাফলে খুশি। আশা করছি আগামী বছর আমরা ১০ জনকে নির্বাচন করতে পারব এবং ফলাফল আরও ভালো হবে।'
এপিএমওর সদস্য ৩৬টি দেশে একযোগে অনুষ্ঠিত হয় এ প্রতিযোগিতা। এরই অংশ হিসেবে গত ১১ মার্চ ডাচ-বাংলা ব্যাংক লিমিটেডের পৃষ্ঠপোষকতায় এবং প্রথম আলোর ব্যবস্থাপনায় বাংলাদেশে এপিএমওর আয়োজন করে বাংলাদেশ গণিত অলিম্পিয়াড কমিটি। চলতি বছর ৭১ জন শিক্ষার্থী এ প্রতিযোগিতার বাংলাদেশ পর্বে অংশ নেয়। এর মধ্যে মেধার ভিত্তিতে সাতজনকে আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতার জন্য নির্বাচন করা হয়। বিভিন্ন দেশে অনুষ্ঠিত হলেও এপিএমওর পরীক্ষা হয় অভিন্ন প্রশ্নে। অলিম্পিয়াডে গণিতের পাঁচটি সমস্যা সমাধানের জন্য চার ঘণ্টা সময় দেওয়া হয়। ঢাকায় অনুষ্ঠিত এপিএমওতে সারা দেশ থেকে আসা প্রাক্-বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ের শিক্ষার্থীরা অংশগ্রহণ করে। ফলাফলের বিস্তারিত জানা যাবে http://daryn.kz/apmo?lang=en ঠিকানায়।

জাতীয় গণিত উৎসবের সমাপনী

জীবনের স্বপ্ন বাস্তবায়নের প্রত্যয়
আশীষ-উর-রহমান | ফেব্রুয়ারি ১৬, ২০১৪

পরীক্ষা নেই, তাই কোনো উদ্বেগ-উৎকণ্ঠাও নেই। শুধুই আনন্দ আর গলা ছেড়ে চিৎকার দেওয়া। এই করে গতকাল শনিবার গণিত উৎসবের সমাপনী দিনটি কাটল নতুন প্রজন্মের গণিত অনুরাগীদের। রাজধানীর সেন্ট যোসেফ হায়ার সেকেন্ডারি স্কুলের মাঠে গত শুক্রবার শুরু হয়েছিল দুই দিনের ডাচ্-বাংলা ব্যাংক-প্রথম আলো জাতীয় গণিত উৎসব ২০১৪ ও দ্বাদশ বাংলাদেশ গণিত অলিম্পিয়াড। বিজয়ীদের পুরস্কৃত করার মধ্য দিয়ে শেষ হলো গণিতের এই আনন্দঘন উৎসব।
গতকালের অনুষ্ঠান শুরু হয়েছিল সকাল নয়টায়। আঞ্চলিক প্রতিযোগিতায় বিজয়ীদের পরীক্ষা হয়েছিল শুক্রবার। ফল জানার জন্য উদগ্রীব ছিল সবাই। ‘গণিত শেখো স্বপ্ন দেখো’ ছাপ দেওয়া টি-শার্ট গায়ে অভিভাবকদের নিয়ে উৎসবমঞ্চের সামনে সমবেত হয়েছিল সবাই। কথোপকথন, গান, গণিতের পটগান, রুবিকস কিউব প্রতিযোগিতা, আলোচনা আর শেষে পুরস্কার বিতরণী—এসব নিয়েই ছিল জমানো আয়োজন।
অনুষ্ঠানের শুরুতে বাংলাদেশ গণিত অলিম্পিয়াড কমিটির সাধারণ সম্পাদক মুনির হাসান শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথোপকথনের একপর্যায়ে জানতে চাইলেন, তারা দেশের প্রধানমন্ত্রী হলে কে কী করবে? একেকজনের একেক অভিপ্রায়। কেউ বলল, স্কুলে কম্পিউটার গেমস বাধ্যতামূলক করবে, কেউ বলে স্কুলগুলো খুব বিরক্তিকর, তাই বন্ধ করে দেবে। এর মধ্যে একজন উঠে বলল, ‘প্রধানমন্ত্রী একা কোনো দেশকে ভালো করতে পারে না। সবাই মিলে দেশকে ভালো করতে হয়। প্রধানমন্ত্রী হলে সবাইকে নিয়ে দেশকে ভালো করার কাজ করব।’ তার পর থেকে নিজের জন্য, দেশের জন্য ভালো কাজ করার প্রেরণা ও প্রত্যয়ই প্রধান সুর হয়ে থাকল পুরো অনুষ্ঠানে।
‘আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো একুশে ফেব্রুয়ারি’ গানটি দিয়ে সমবেত সংগীত শুরু করেছিলেন প্রথম আলো বন্ধুসভার বন্ধুরা। এরপর তাঁরা শোনান ‘পূর্ব দিগন্তে সূর্য উঠেছে’, ‘মন শুধু মন ছুঁয়েছে’ ও ‘জীবনের আহ্বানে সামনে এগিয়ে যাই’ গানগুলো। আর্জেন্টিনা গণিত অলিম্পিয়াডে অংশ নেওয়া তানজিম শরিফ শোনান ‘সোনা বন্ধু তুই আমারে’ গানটি। দেশের ঐতিহ্যবাহী পটগান ছিল এরপর। গণিত উৎসব নিয়ে রূপান্তর থিয়েটারের পটগানটি বেশ উপভোগ্য হয়ে উঠেছিল। পটে আঁকা ছবির সঙ্গে নাচ ও গানের মধ্যে দিয়ে শিল্পীরা গণিত উৎসবের গত এক যুগের কার্যক্রম তুলে ধরেন।
এরপর ছিল আরেকটি আকর্ষণীয় পর্ব। রুবিকস কিউব প্রতিযোগিতা। আগের ২২ সেকেন্ডের জাতীয় রেকর্ড ভেঙে দিয়ে ১৮ সেকেন্ডে কিউব মিলিয়ে নতুন রেকর্ড করে চ্যাম্পিয়ন হয় হাসান জহিরুল ইসলাম। দ্বিতীয় হুমায়ূন কবির ও তৃতীয় শাকিব বিন রশিদ।
এরপর শুরু হয় পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠান। প্রথমেই গণিতে অবদান এবং গণিত উৎসবে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখায় দেশের প্রবীণ গণিতবিদ লুৎফুজ্জামান ও খোদাদাদ খানকে দেওয়া হয় আজীবন সম্মাননা। প্রতিক্রিয়ায় লুৎফুজ্জামান বলেন, জীবনের এই পর্যায়ে এসে সম্মাননা পাওয়ায় তিনি আনন্দে আপ্লুত। খোদাদাদ খান বলেন, প্রাণের টানে তিনি গণিত উৎসবে আসেন। ছোট ছোট ছেলেমেয়েরা যে গণিতভীতি কাটিয়ে গণিতকে আনন্দের বিষয় হিসেবে নিয়েছে, তাতে তিনি অভিভূত। এই পর্যায়ে দেশের সেরা গণিত ক্লাব মেহেরপুরের গাংনী গণিত পরিবার, এবারের আঞ্চলিক প্রতিযোগিতার সেরা কেন্দ্র, সেরা ব্যবস্থাপনা এসব ক্ষেত্রে সেরাদের পুরস্কার দেওয়া হয়।
পুরস্কারের ফাঁকে ফাঁকে আলোচনা আর নতুন নতুন ঘোষণার মধ্যে দিয়ে চলছিল অনুষ্ঠান। আগের বিশেষ পুরস্কারগুলোর সঙ্গে আরও নতুন চারটি পুরস্কারের ঘোষণা দেওয়া হয় এবার। এগুলো হলো প্রকৌশলী লুৎফর রহমান স্মৃতি পুরস্কার, জামাল নজরুল ইসলাম স্মৃতি পুরস্কার, গৌরাঙ্গ দেব রায় স্মৃতি পুরস্কার ও জেবুন্নেছা হোসেন পুরস্কার। এরপর বিতরণ করা হয় আগের দিনে সুডোকু প্রতিযোগিতার বিজয়ীদের পুরস্কার। প্রথম হয়েছে রিফা মুহাইমিনা রহমান, দ্বিতীয় সাহিকা আহমেদ ও তৃতীয় হয়েছে হাসান ইশরাক। তাদের পুরস্কৃত করার পর ডাচ্-বাংলা ব্যাংকের উপব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. সাইদুল হাসান প্রতিযোগীদের উৎসাহ দিয়ে বলেন, ‘তোমাদের এই কৃতিত্ব ধরে রাখতে হবে। ভবিষ্যতের জন্য মহৎ পরিকল্পনা করতে হবে।’
বাংলাদেশ গণিত অলিম্পিয়াড কমিটির সভাপতি জামিলুর রেজা চৌধুরী বলেন, সারা দেশে গণিত উৎসবের মধ্যে দিয়ে শিক্ষার্থীদের মন থেকে গণিতভীতি দূর হয়েছে। সারা বিশ্বে এই উৎসব একটি ব্যতিক্রমী উৎসব হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছে।
অনুষ্ঠানে আরও আলোচনা করেন গণিত অলিম্পিয়াডের কোচ মাহবুব মজুমদার, প্রথম আলোর সহযোগী সম্পাদক আব্দুল কাইয়ুম ও আনিসুল হক। উপস্থিত ছিলেন জ্যোতির্বিজ্ঞানী এ আর খান, এফ আর সরকার, জিনবিজ্ঞানী আবেদ চৌধুরী, বিজ্ঞান লেখক রেজাউর রহমান, সেন্ট যোসেফ হায়ার সেকেন্ডারি স্কুলের অধ্যক্ষ ব্রাদার রবি পিউরিফিকেশন, উপাধ্যক্ষ ব্রাদার বিকাশ ডি রোজারিও সিএসসি, তাজিমা মজুমদারসহ অনেকে।
আলোচনার পালা শেষ। এরপর গণিত প্রতিযোগিতায় জাতীয় পর্যায়ে চারটি বিভাগের বিজয়ীদের মধ্যে পুরস্কার বিতরণীর পালা। এবার প্রাথমিক, জুনিয়র, সেকেন্ডারি ও হায়ার সেকেন্ডারি এই চারটি বিভাগে প্রায় ২৫ হাজার শিক্ষার্থী আঞ্চলিক প্রতিযোগিতায় অংশ নেয়। তাদের মধ্যে বিজয়ী এক হাজার ৫৫ জন অংশ নেয় জাতীয় পর্যায়ের প্রতিযোগিতায়। এদের মধ্যে ৮১ জন বিজয়ীকে গতকাল পদক, ক্রেস্ট, সনদ ও বিশেষ পুরস্কারের অর্থ দেওয়া হয়। এদের মধ্যে চার বিভাগে সেরাদের সেরা হয়েছে প্রাথমিকে শাহাদাৎ হোসাইন, জুনিয়রে তাহমিদ আনজুম, সেকেন্ডারিতে প্রীতম কুণ্ডু ও হায়ার সেকেন্ডারিতে নূর মোহাম্মদ শফিউল্লাহ। সবাই মিলে ‘আমরা করব জয়’ গানটি গেয়ে জীবনের স্বপ্ন বাস্তবায়ন করার প্রত্যয় নিয়ে বাড়ি ফেরে নবীন প্রজন্ম।
উৎসব সঞ্চালনায় ছিলেন গণিত অলিম্পিয়াডের একাডেমিক কাউন্সিলর মাহমুদুল হাসান ও তামিম শাহিরয়ার।

গণিত উৎসবে প্রাণের স্ফুরণ

আশীষ-উর-রহমান | ফেব্রুয়ারি ১৫, ২০১৪

একে পরীক্ষা, তার ওপর বিষয়টি অঙ্ক। ভয়ে বুক দুরুদুরু করারই কথা। কিন্তু হলুদ টি-শার্ট গায়ে চাপিয়ে যারা গতকাল শুক্রবার সকালে সেন্ট যোসেফ হায়ার সেকেন্ডারি স্কুলের শ্রেণীকক্ষের দিকে ছুটল পরীক্ষা দিতে—তাদের চোখেমুখে ভয়ের ছাপ তো ছিলই না, বরং উৎসাহ-উদ্দীপনা দেখে মনে হচ্ছিল, অঙ্কের চেয়ে মজার কোনো বিষয় আর হতেই পারে না।
গত এক যুগের চেষ্টার এই ফল। স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীরা অঙ্কভীতি কাটিয়ে এখন উৎসবে মেতে উঠেছে অঙ্ক নিয়ে। গতকাল ছিল সেই উৎসবেরই জাতীয় পর্যায়ের চূড়ান্ত আয়োজন: ডাচ্-বাংলা ব্যাংক-প্রথম আলো জাতীয় গণিত উৎসব ২০১৪ ও দ্বাদশ বাংলাদেশ গণিত অলিম্পিয়াড। এবার আন্তর্জাতিক গণিত অলিম্পিয়াড হবে দক্ষিণ আফ্রিকায় আগামী ৩ থেকে ১২ জুলাই পর্যন্ত। তাতে অংশগ্রহণের জন্যই বাংলাদেশ গণিত অলিম্পিয়াড কমিটি ডাচ্-বাংলা ব্যাংক লিমিটেডের পৃষ্ঠপোষকতায় ও প্রথম আলোর ব্যবস্থাপনায় দেশজুড়ে গণিত উৎসবের আয়োজন করে।
এবার আঞ্চলিক পর্যায়ে প্রতিযোগিতা শুরু হয়েছিল জানুয়ারি মাসে। প্রতিযোগিতা হয়েছে ২২টি অঞ্চলে। গত বছর হয়েছিল ১৭টি অঞ্চলে। প্রাথমিক, জুনিয়র, সেকেন্ডারি ও হায়ার সেকেন্ডারি—এই চারটি বিভাগে ২৩ হাজারের বেশি শিক্ষার্থী এতে অংশ নেয়। তাদের মধ্যে বিজয়ী এক হাজার ৫৫ জনকে নিয়ে গতকাল শুক্রবার থেকে ঢাকায় শুরু হলো দুই দিনের জাতীয় উৎসব। দেশে গণিতের এই উৎসব শুরু হয়েছিল ২০০৩ সালে। এবার হলো তার যুগপূর্তি। এই এক যুগের সাফল্য—দেশের তরুণদের নয়টি অলিম্পিয়াডে অংশ নিয়ে একটি রৌপ্য, আটটি ব্রোঞ্জসহ নয়টি পদক জয়।
উৎসবের জমকালো সাজে সাজানো হয়েছিল সেন্ট যোসেফ হায়ার সেকেন্ডারি স্কুলের বিরাট মাঠটি। দক্ষিণ প্রান্তে শামিয়ানা টানিয়ে উৎসব মঞ্চ। পশ্চিম পাশে আঞ্চলিক কেন্দ্রগুলোর বুথ। উত্তর আর পূর্বে বিভিন্ন প্রকাশনী ও প্রতিষ্ঠানের স্টল। এর মধ্যে ছিল প্রথমা, কিশোর আলো, তাম্রলিপি, সময়, মুক্ত আসর, বন্ধুসভা, এভারেস্ট একাডেমির অ্যাডভেঞ্চারার্স ক্লাব, মুহম্মদ জাফর ইকবালের লেখা ছোটদের মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস এবং গণিত ও বিজ্ঞানবিষয়ক বইয়ের স্টল। আরও ছিল আঞ্চলিক উৎসবগুলোর ছবি, অলিম্পিয়াডে পদকজয়ীদের ছবিসংবলিত বিশালাকার বোর্ড।
অংশগ্রহণকারীদের নাম নিবন্ধন শুরু হয়েছিল সকাল আটটা থেকে। সেন্ট যোসেফ হায়ার সেকেন্ডারি স্কুলের অধ্যক্ষ ব্রাদার রবি পিউরিফিকেশন জাতীয় পতাকা উত্তোলন করে উৎসবের উদ্বোধন করেন। এমন একটি উৎসবের কেন্দ্র হিসেবে তাঁদের প্রতিষ্ঠানকে বেছে নেওয়ার জন্য তিনি আয়োজকদের ধন্যবাদ জানান। এই আয়োজন শিক্ষার্থীদের মধ্যে গণিতের প্রতি আরও আগ্রহ সৃষ্টি করবে বলে উল্লেখ করেন তিনি।
বাংলাদেশ গণিত অলিম্পিয়াডের পতাকা উত্তোলন করেন দেশের গণিত অলিম্পিয়াড কমিটির সভাপতি অধ্যাপক জামিলুর রেজা চৌধুরী। তিনি নবীন শিক্ষার্থীদের উৎসাহ দিয়ে বলেন, প্রতিবছরই অলিম্পিয়াডে অংশগ্রহণকারীদের সংখ্যা বাড়ছে। ভবিষ্যতে হয়তো এই মাঠে আর জায়গাই হবে না। আমাদের দেশের শিক্ষার্থীরা বিশ্বের সেরা বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে শিক্ষা গ্রহণ করছে। তিনি বলেন, যেভাবে আমাদের তরুণ প্রজন্ম শিক্ষা-বিজ্ঞানের চর্চায় এগিয়ে এসেছে, তাতে ২০৩০ সালের মধ্যে বিজ্ঞানে আমাদের নোবেল পুরস্কার পাওয়ার উজ্জ্বল সম্ভাবনা আছে। আন্তর্জাতিক গণিত অলিম্পিয়াডের পতাকা উত্তোলন করে ডাচ্-বাংলা ব্যাংক লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক কে এস তাবরেজ বলেন, ডাচ্-বাংলা ব্যাংক এই আয়োজনের সঙ্গে জড়িত হয়ে আনন্দিত। গণিত অলিম্পিয়াড থেকে দেশের প্রতিযোগীরা ব্রোঞ্জ ও রৌপ্যপদক জয় করেছে। ভবিষ্যতে স্বর্ণপদকও জয় করবে বলে তিনি শিক্ষার্থীদের উৎসাহিত করেন।
দেশের সব ধর্মের মানুষ যেন মিলেমিশে একসঙ্গে বসবাস করতে পারে, সে জন্য নবীন প্রজন্মের শিক্ষার্থীদের দায়িত্ব নেওয়ার আহ্বান জানালেন কমিটির সহসভাপতি অধ্যাপক মুহম্মদ জাফর ইকবাল। তিনি বলেন, ‘এই দেশে মুসলিম, হিন্দু, খ্রিষ্টান, বৌদ্ধ—সবাইকে মিলেমিশে একসঙ্গে থাকতে হবে। হিন্দুদের বাড়িতে আগুন দেওয়া হচ্ছে। তাদের অনেকেই হয়তো এই উৎসবে আসতে পারছে না। সবাই যেন আসতে পারে, তোমাদের সেই দায়িত্ব নিতে হবে। তা না হলে শুধু অঙ্ক নিয়ে মেতে থাকা আর পদক জয় করা অর্থবহ হবে না।’
প্রথম আলো সম্পাদক মতিউর রহমান তাঁর বক্তব্যে বিগত এক যুগে গণিত অলিম্পিয়াডের কার্যক্রম ও সাফল্য তুলে ধরে বলেন, ছোট করে শুরু হলেও আজ গণিত উৎসব দেশের একটি বিশাল উৎসবে পরিণত হয়েছে। শিক্ষার্থীরা ভবিষ্যতে আরও বড় সাফল্য আনবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন খোদাদাদ খান, লুৎফুজ্জামান, মোহাম্মদ কায়কোবাদ, এফ আর খান, আনোয়ার হোসেন, রাশেদ তালুকদার, মোহিত কামাল, মুসা ইব্রাহীম, মুনির হাসান প্রমুখ। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের পরেই শুরু হয় পরীক্ষা পর্ব। অংশ নিতে শিক্ষার্থীরা ছুটল শ্রেণীকক্ষের দিকে, আর তাদের সঙ্গে আসা অভিভাবকেরা কেউ গেলেন স্টলগুলোর সামনে, কেউ বিশ্রাম নিলেন মঞ্চের সামনে পাতা চেয়ারে বসে।
পরীক্ষার পর ব্যবস্থা ছিল দুপুরের খাবারের। এরপর সন্ধ্যা অবধি আনন্দের হরেক আয়োজন। জল রকেট ওড়ানো, সুডোকু প্রতিযোগিতা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। আনন্দ আরও বেড়েছিল প্রিয় লেখক মুহম্মদ জাফর ইকবালকে কাছে পেয়ে। সকালে পরীক্ষা থাকায় শিক্ষার্থীরা তাঁর অটোগ্রাফ সংগ্রহ আর ছবি তোলার সুযোগ তেমন পায়নি। তিনি মাঠে আসামাত্রই সবাই ঘিরে ফেলে তাঁকে। একপর্যায়ে মঞ্চ থেকে ‘জাফর স্যার জাফর স্যার, মঞ্চে আসুন, মঞ্চে আসুন’ স্লোগান দিয়ে তাঁকে মঞ্চে আনা হয়। মজার মজার কিছু গল্প শোনালেন তিনি শিক্ষার্থীদের। এ পর্বে মঞ্চে ছিলেন লুৎফুজ্জামান, দেশের সর্বকনিষ্ঠ ফিদে মাস্টার ফাহাদ রহমান ও মুসা ইব্রাহীম।
সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের পর্ব শুরু হয়েছিল সমবেত কণ্ঠে গণিত উৎসবের গান ‘মন মেলে শোন শুনতে পাবি বিজয়ের আহ্বান/ গণিতের ধ্বনিতে বাজে ঐ মুক্তির জয়গান’। পরে বিভিন্ন জেলার শিক্ষার্থীরা আবৃত্তি, অভিনয়, নৃত্য ও গানে গানে মুখর করে তোলে বসন্তের গোধূলি বেলা।
আজকের আয়োজন: আজ সমাপনী দিনের অনুষ্ঠান শুরু হবে সকাল সাড়ে আটটায়। থাকবে গণিতের পট, ভাষা ও দেশের গান, রুবিকস কিউব প্রতিযোগিতা, সমাপনী অনুষ্ঠান ও পুরস্কার বিতরণী। অনুষ্ঠানটি সরাসরি www.prothom-alo.com ও www.matholympid.org.bd তে দেখা যাবে।

ছবি: ঘণিত অলিম্পিয়াডের ফেসবুক গ্রুপে
https://www.facebook.com/groups/BdMOC/

আগামীকাল জাতীয় গণিত উৎসব শুরু

 

গণিত উৎসব ২০১৪

আগামীকাল জাতীয় গণিত উৎসব শুরু

নিজস্ব প্রতিবেদক | আপডেট: ০২:১৮, ফেব্রুয়ারি ১৩, ২০১৪ | প্রিন্ট সংস্করণ
 

আগামীকাল ১৪ ফেব্রুয়ারি শুক্রবার ঢাকার সেন্ট যোসেফ হায়ার সেকেন্ডারি স্কুলে শুরু হচ্ছে দুই দিনব্যাপী জাতীয় গণিত উৎসব ২০১৪ ও দ্বাদশ বাংলাদেশ গণিত অলিম্পিয়াড। ডাচ্-বাংলা ব্যাংক লিমিটেডের পৃষ্ঠপোষকতায় এবং প্রথম আলোর ব্যবস্থাপনায় বাংলাদেশ গণিত অলিম্পিয়াড কমিটি উৎসবের আয়োজন করেছে। সকাল নয়টায় উৎসবের উদ্বোধন করবেন সেন্ট যোসেফ হায়ার সেকেন্ডারি স্কুলের অধ্যক্ষ ব্রাদার রবি পিউরিফিকেশনস। এ বছরের জুলাইয়ে দক্ষিণ আফ্রিকায় অনুষ্ঠেয় ৫৫তম আন্তর্জাতিক গণিত অলিম্পিয়াডের জন্য বাংলাদেশ গণিত দলের সদস্যদের নির্বাচনের লক্ষ্যে এ বছর সারা দেশের ২২টি জেলা শহরে আঞ্চলিক গণিত উৎসব অনুষ্ঠিত হয়েছে। এই ২২টি আঞ্চলিক গণিত উৎসবের বিজয়ী সেরা এক হাজার ৫৫ জন অংশ নেবে জাতীয় উৎসবে।
উৎসবে উপস্থিত থাকবেন বাংলাদেশ গণিত অলিম্পিয়াড কমিটির সভাপতি অধ্যাপক জামিলুর রেজা চৌধুরী, সহসভাপতি অধ্যাপক মুহম্মদ জাফর ইকবাল, সদস্য অধ্যাপক মোহাম্মদ কায়কোবাদ, ডাচ্-বাংলা ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক কে এস তাবরেজ, গণিতবিদ অধ্যাপক খোদাদাদ খান, অধ্যাপক লুৎফুজ্জামান, বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক আবদুল হাকিম খান, সহযোগী অধ্যাপক ফারসীম মান্নান মোহাম্মদী, বিজ্ঞানলেখক রেজাউর রহমান, বাংলাদেশ গণিত দলের কোচ মাহবুব মজুমদারসহ বিশিষ্টজনেরা।
উৎসবের প্রথম দিন প্রাইমারি, জুনিয়র, সেকেন্ডারি ও হায়ার সেকেন্ডারি—এই চার ক্যাটাগরিতে শিক্ষার্থীদের মধ্যে অনুষ্ঠিত হবে উৎসবের মূল পর্ব দ্বাদশ বাংলাদেশ গণিত অলিম্পিয়াড। এতে প্রাইমারি ক্যাটাগরি দুই ঘণ্টা, জুনিয়র ক্যাটাগরি তিন ঘণ্টা এবং সেকেন্ডারি ও হায়ার সেকেন্ডারি ক্যাটাগরির চার ঘণ্টাব্যাপী অলিম্পিয়াডে অংশ নেবে। গণিত অলিম্পিয়াড ছাড়াও থাকবে শিক্ষার্থীদের সুডোকু প্রতিযোগিতা, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, বইমেলাসহ নানা আয়োজন।
উৎসবের দ্বিতীয় দিন ১৫ ফেব্রুয়ারি সকাল সাড়ে আটটায় উৎসব শুরু হয়ে গণিতের পট, ভাষা ও দেশের গান ও বাংলাদেশ রুবিক্সকিউব প্রতিযোগিতা এবং বেলা ১১টা থেকে সমাপনী অনুষ্ঠান ও পুরস্কার বিতরণের মাধ্যমে শেষ হবে এ বছরের গণিত উৎসব। গণিত উৎসবে উপস্থিত থাকবেন আঞ্চলিক আয়োজকেরাও। আঞ্চলিক আয়োজকদের পুরস্কৃত করা ছাড়াও থাকবে ২০১৩ সালের সেরা গণিত ক্লাবের পুরস্কার প্রদান।
আঞ্চলিক গণিত উৎসবের সব বিজয়ীকে সার্টিফিকেট ও হলুদ রঙের টি-শার্ট পরে আগামীকাল সকাল সাড়ে আটটায় সেন্ট যোসেফ হায়ার সেকেন্ডারি স্কুল, আসাদ অ্যাভিনিউ, মোহাম্মদপুর ঢাকায় আসতে বলেছেন আয়োজকেরা। আসাদগেট থেকে মোহাম্মদপুরের দিকে সামান্য এগোলেই হাতের বাঁ পাশে পড়বে বিদ্যালয়টি।

১৪ ও ১৫ ফেব্রুয়ারি জাতীয় গণিত উৎসব ২০১৪

 

১৪ ও ১৫ ফেব্রুয়ারি জাতীয় গণিত উৎসব ২০১৪

আপডেট: ০১:৩৭, ফেব্রুয়ারি ০৮, ২০১৪ | প্রিন্ট সংস্করণ
 

১৪ ও ১৫ ফেব্রুয়ারি শুক্র ও শনিবার ঢাকার সেন্ট যোসেফ হায়ার সেকেন্ডারি স্কুলে ডাচ্-বাংলা ব্যাংক-প্রথম আলো জাতীয় গণিত উৎসব ২০১৪ অনুষ্ঠিত হবে। এ উৎসবের প্রধান আকর্ষণ দ্বাদশ বাংলাদেশ গণিত অলিম্পিয়াড। এই অলিম্পিয়াডে ২২টি আঞ্চলিক গণিত উৎসবের বিজয়ীরা অংশ নেবে। বিজয়ীদের হলুদ রঙের টি-শার্ট পরে এবং বিজয়ীর সার্টিফিকেট নিয়ে ১৪ ফেব্রুয়ারি সকাল আটটায় উৎসব প্রাঙ্গণে হাজির হতে হবে। শুরুতে বিজয়ীদের নিজ অঞ্চলের বুথ থেকে রেজিস্ট্রেশন করতে হবে। সকাল নয়টায় উদ্বোধনের পর সকাল ১০টা থেকে শুরু হবে সব ক্যাটাগরির শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণে দ্বাদশ বাংলাদেশ গণিত অলিম্পিয়াড। প্রাইমারি ক্যাটাগরির পরীক্ষা দুই ঘণ্টার, জুনিয়র ক্যাটাগরির তিন ঘণ্টা এবং সেকেন্ডারি ও হায়ার সেকেন্ডারি ক্যাটাগরির পরীক্ষা হবে চার ঘণ্টার। ১৫ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠানের দ্বিতীয় দিন সকাল সাড়ে আটটা থেকে বেলা একটার মধ্যে পুরস্কার বিতরণীর মাধ্যমে উৎসবের সব আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন হবে।
জাতীয় উৎসবের স্থান: সেন্ট যোসেফ হায়ার সেকেন্ডারি স্কুল, মোহাম্মদপুর, ঢাকা। আসাদগেট থেকে মোহাম্মদপুরের দিকে সামান্য এগোলেই হাতের বাঁ পাশে পড়বে বিদ্যালয়টি।

ঢাকা আঞ্চলিক গণিত উৎসব : গণিত শেখার, স্বপ্ন দেখার উৎসব

‘গণিত শেখো, স্বপ্ন দেখো’—এটা গণিত উৎসবের স্লোগান। আর এ স্লোগান সত্যি প্রমাণ করতেই যেন গতকাল শনিবার রাজধানীর রেসিডেনসিয়াল মডেল কলেজ প্রাঙ্গণে ঢাকা অঞ্চলের আঞ্চলিক গণিত উৎসবের প্রশ্নোত্তর পর্বে স্বপ্ন নিয়ে একের পর এক প্রশ্ন করছিল খুদে শিক্ষার্থীরা। ডাচ্-বাংলা ব্যাংক লিমিটেডের পৃষ্ঠপোষকতায় ও প্রথম আলোর ব্যবস্থাপনায় বাংলাদেশ গণিত অলিম্পিয়াড কমিটি গণিত শেখার, স্বপ্ন দেখার এ উৎসব আয়োজন করে।
মনোরোগ বিশেষজ্ঞ মোহিত কামাল প্রশ্নোত্তর পর্বের শুরু থেকেই স্বপ্নের মনোবৈজ্ঞানিক বিশ্লেষণ তুলে ধরছিলেন। একপর্যায়ে তিনি জানিয়ে দেন, ‘স্বপ্নের রং হয় সাদা-কালো।’ তারপর গণিত, পদার্থবিদ্যা হয়ে আবারও এক প্রশ্নকর্তা স্বপ্ন প্রসঙ্গে ফিরে জানতে চাইল, ‘স্বপ্নের রং সাদা-কালো হয় কেন?’ ততক্ষণে প্রশ্নের উত্তর দিচ্ছেন লেখক অধ্যাপক মুহম্মদ জাফর ইকবাল। খুদে গণিতবিদের এই প্রশ্নের উত্তরে তিনি বললেন, ‘এটা স্বপ্নের বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যা। তবে স্বপ্ন যে দেখে, সে চাইলেই স্বপ্নকে রঙিন করে তুলতে পারে।’
মুহম্মদ জাফর ইকবাল বলেন, কৃষক, পোশাক খাতের শ্রমিক ও প্রবাসী বাংলাদেশি—এ তিন মিলে এখন বাংলাদেশ তিন চাকার রিকশার মতো চলছে। বাংলাদেশের এখন আর একটি চাকা দরকার। নতুন প্রজন্মের চার কোটি শিক্ষার্থী যদি নিজেদের দক্ষ জনশক্তিতে রূপান্তর করতে পারে, তবেই ৪ নম্বর চাকাটি পেয়ে যাবে বাংলাদেশ, ছুটবে দুরন্তগতির গাড়ির মতো। তাহলেই ২০৫০ সাল নাগাদ বাংলাদেশের সমৃদ্ধি ইউরোপ-আমেরিকাকেও ছাড়িয়ে যাবে।
গতকাল সকাল নয়টার দিকে জাতীয় সংগীতের সঙ্গে জাতীয় পতাকা উত্তোলনের মধ্য দিয়ে শুরু হয় স্বপ্নকে রঙিন করার এ গণিত উৎসব। রেসিডেনসিয়াল মডেল কলেজের উপাধ্যক্ষ সুলতান উদ্দিন আহমেদ জাতীয় পতাকা, বাংলাদেশ গণিত অলিম্পিয়াড কমিটির সভাপতি অধ্যাপক জামিলুর রেজা চৌধুরী বাংলাদেশ গণিত অলিম্পিয়াডের পতাকা এবং ডাচ্-বাংলা ব্যাংক লিমিটেডের সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট মো. এহতেশামুল হক খান আন্তর্জাতিক গণিত অলিম্পিয়াডের পতাকা উত্তোলন করেন। পতাকা উত্তোলনের পর উৎসবের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন ঘোষণা করা হয়।
উদ্বোধনী অধিবেশনে জামিলুর রেজা চৌধুরী বলেন, ‘১২ বছর আগে শুরু হওয়া গণিত অলিম্পিয়াড এখন দেশে ও বিদেশে একটি অনুকরণীয় দৃষ্টান্ত হয়ে উঠেছে। আমাদের শিক্ষার্থীরা ক্রমাগত আন্তর্জাতিক গণিত অলিম্পিয়াডে ভালো করছে।’ তিনি আগামী কয়েক বছরের মধ্যে বাংলাদেশের শিক্ষার্থীরা আন্তর্জাতিক গণিত অলিম্পিয়াড থেকে স্বর্ণপদক জয় করে আনবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
মো. এহতেশামুল হক খান বলেন, শিক্ষার্থীদের প্রাণের উৎসবের সঙ্গে যুক্ত থাকতে পেরে ডাচ্-বাংলা ব্যাংক গর্বিত ও আনন্দিত। এ উৎসব শিক্ষার্থীদের গণিতে দক্ষ হওয়ায় ভূমিকা রাখছে।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রথম আলোর পক্ষে সহযোগী সম্পাদক আব্দুল কাইয়ুম শুভেচ্ছা বক্তব্য দেন।
এরপর সকাল ১০টায় গণিত উৎসবের লিখিত পরীক্ষা শুরু হয়ে চলে বেলা সোয়া ১১টা পর্যন্ত। পরীক্ষা শেষে খুদে গণিতবিদেরা আবারও মাঠে এসে জড়ো হয়। গণিত উৎসবের গান দিয়ে শুরু হয় উৎসবের এ পর্বটি। এরপর একে একে আয়োজন করা হয় রম্য বিতর্ক, প্রশ্নোত্তর পর্ব ও রুবিকস কিউব প্রতিযোগিতা। গণিত ও বিজ্ঞানবিষয়ক বই দিয়ে সাজানো বইমেলা উৎসবে বিশেষ মাত্রা যোগ করেছে।
গণিতবিদ অধ্যাপক খোদাদাদ খান, অধ্যাপক লুৎফুজ্জামান, গণিত অলিম্পিয়াড কমিটির সদস্য অধ্যাপক মোহাম্মদ কায়কোবাদ, বিশিষ্ট বিজ্ঞানলেখক রেজাউর রহমান, প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের গণিত বিভাগের প্রধান আবদুল হামিদ খান প্রমুখ খুদে গণিতবিদদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন।
খোদাদাদ খান খুদে গণিতবিদদের উদ্দেশে বলেন, ‘তোমাদের চোখে গণিত নিয়ে যে স্বপ্ন দেখছি, তা বৃদ্ধ বয়সে আমাকে আবারও স্বপ্ন দেখতে উদ্বুব্ধ করছে। আশা করছি, গণিতের চিন্তা ও যুক্তি তোমাদের মেধাকে আরও শাণিত করবে।’
মোহাম্মদ কায়কোবাদ বলেন, শিক্ষার্থীদের মন থেকে গণিত নিয়ে ভয় দূর করছে গণিত উৎসব। উৎসবে অংশগ্রহণকারী সবাইকে যে বড় গণিতবিদ হতে হবে তা নয়। গণিতের যুক্তি জীবনের সব ক্ষেত্রেই জরুরি।
এরপর রেসিডেনসিয়াল মডেল কলেজের উপাধ্যক্ষ ফেরদৌস আরা বেগম, এভারেস্ট বিজয়ী মুসা ইব্রাহীম, বাংলাদেশের পক্ষে আন্তর্জাতিক গণিত অলিম্পিয়াডে ব্রোঞ্জ বিজয়ী সামিন রিয়াসাত প্রমুখ শুভেচ্ছা বক্তব্য দেন। গণিত অলিম্পিয়াড কমিটির সহসভাপতি মুনিবুর রহমান চৌধুরী, সদস্য অধ্যাপক আনোয়ার হোসেন, বাংলাদেশ অ্যাস্ট্রোনমিক্যাল সোসাইটির সাধারণ সম্পাদক এফ আর সরকার, প্রথম আলোর সহযোগী সম্পাদক আনিসুল হক, বাংলাদেশ গণিত দলের কোচ মাহবুব মজুমদার প্রমুখ উৎসবে উপস্থিত ছিলেন। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন গণিত অলিম্পিয়াডের একাডেমিক কাউন্সেলর তামিম শাহিরয়ার।
বেলা তিনটা বাজার কয়েক মিনিট আগে শুরু হয় ফলাফল ঘোষণা। এর আগে গণিত অলিম্পিয়াড কমিটির সাধারণ সম্পাদক মুনির হাসান জানিয়ে দেন, ঢাকা অঞ্চলের এবারের আয়োজনে চারটি ক্যাটাগরিতে ঢাকা, গাজীপুর ও মানিকগঞ্জ—এ তিন জেলার ১৮৪টি স্কুলের তৃতীয় থেকে দ্বাদশ শ্রেণীর দুই হাজার ২১৮ জন শিক্ষার্থী অংশ নিয়েছে, এটি অংশগ্রহণকারীর বিগত সব রেকর্ড ভেঙে দিয়েছে। উৎসব সফল করার জন্য কাজ করেছেন ৩০০ স্বেচ্ছাসেবক। পরীক্ষা হলে দায়িত্ব পালনকারীর সংখ্যা ১৪৩। পরীক্ষার্থীদের খাতা দেখার কাজ করেছেন ১২০ জন।
অংশগ্রহণকারীদের মধ্য থেকে ১৬৪ জনকে পুরস্কৃত করা হয়। এই ১৬৪ জন দেশের আরও ২১টি আঞ্চলিক গণিত উৎসবে বিজয়ীদের সঙ্গে ১৪ ও ১৫ ফেব্রুয়ারি ঢাকার আসাদগেটসংলগ্ন সেন্ট যোসেফ হায়ার সেকেন্ডারি স্কুলে অনুষ্ঠেয় জাতীয় গণিত উৎসব ২০১৪ ও দ্বাদশ বাংলাদেশ গণিত অলিম্পিয়াডে অংশ নেবে এবং সেখান থেকে নির্বাচিত বাংলাদেশ গণিত দল যাবে দক্ষিণ আফ্রিকায় অনুষ্ঠেয় ৫৫তম আন্তর্জাতিক গণিত অলিম্পিয়াডে (আইএমও) অংশ নিতে।