ডাচ্-বাংলা ব্যাংক- প্রথম আলো গণিত উৎ​সব ২০১৮–এর সময়সূচী 

ডাচ্-বাংলা ব্যাংক- প্রথম আলো গণিত উৎ​সব ২০১৮–এর সময়সূচী চূড়ান্ত করা হয়েছে। নিচের তালিকায় উল্লেখিত তারিখ অনুযায়ী অলিম্পিয়াড ও আঞ্চলিক উৎসবগুলো অনুষ্ঠিত হবে। সকল উৎসব সম্পন্ন হওয়ার পরে জাতীয় উৎসব অনুষ্ঠিত হবে এবং সম্ভাব্য তারিখ নির্ধারণ করা হয়েছে ২০১৮ জানুয়ারী মাসে।

সাহসী আনিকা

২০ দিন ধরে জ্বর কমছেই না আনিকার। কখনো ১০৩, কখনো বা ১০৪। অবস্থা খারাপ হওয়ায় হাসপাতালেও ভর্তি করা হয়েছে তাকে। তবে শারীরিক এই কষ্ট তাকে দমাতে পারেনি। হাতে ইনজেকশন দেওয়ার ক্যানোলা নিয়েই সে চলে এসেছে গণিত উৎসবে।

বগুড়া, পাবনা, গাইবান্ধা ও কুষ্টিয়া আঞ্চলিক গণিত উৎসবের খবর

শীতের শিশিরভেজা সকালে আকাশে বেলুন-ফেস্টুন উড়িয়ে ও জাতীয় সংগীত পরিবেশনের মধ্য দিয়ে আজ শুক্রবার বগুড়া, পাবনা, গাইবান্ধা ও কুষ্টিয়ায় শুরু হয়েছে ডাচ্‌-বাংলা ব্যাংক-প্রথম আলো আঞ্চলিক গণিত উৎসব। ডাচ্‌-বাংলা ব্যাংক লিমিটেডের পৃষ্ঠপোষকতায় ও প্রথম আলোর ব্যবস্থাপনায় উৎসব আয়োজনে যুক্ত রয়েছে গণিত অলিম্পিয়াড কমিটি। উৎসব আয়োজনে সার্বিক সহযোগিতা করছেন প্রথম আলোর বন্ধুসভার বন্ধুরা।

রাজশাহী, মাদারীপুর, নওগাঁ ও রাজবাড়ীতে গণিত উৎ​সব অনুষ্ঠিত

কুয়াশাচ্ছন্ন আকাশে বেলুন-ফেস্টুনের সঙ্গে সঙ্গে গণিতের ভয়কেও উড়িয়ে দেওয়ার মধ্য দিয়ে আজ বৃহস্পতিবার রাজশাহী, মাদারীপুর, নওগাঁ ও রাজবাড়ী দিয়ে শুরু হয়েছে ডাচ-বাংলা ব্যাংক-প্রথম আলো আঞ্চলিক গণিত উৎসব। ডাচ-বাংলা ব্যাংক লিমিটেডের পৃষ্ঠপোষকতায় ও প্রথম আলোর ব্যবস্থাপনায় উৎসব আয়োজন করে বাংলাদেশ গণিত অলিম্পিয়াড কমিটি। উৎসব আয়োজনে সহযোগিতা করছেন প্রথম আলোর বন্ধুসভার বন্ধুরা।

গণিত উৎসব ২০১৮ রেজিস্ট্রেশনের তারিখসমূহ

গণিত উৎসব ২০১৮ আঞ্চলিক উৎসবে রেজিস্ট্রেশনের তারিখ নির্ধারণ করা হয়েছে।

সব আঞ্চলিক উৎসবে ‘আগে এলে আগে’ ভিত্তিতে নির্দিষ্টসংখ্যক শিক্ষার্থীর রেজিস্ট্রেশন করা হবে। শিক্ষার্থীদের ২০১৭ সালে অধীত শ্রেণি অনুসারে তার ক্যাটাগরি নির্ধারিত হবে। বাংলা ও ইংরেজি উভয় মাধ্যমের বেলায় এটি প্রযোজ্য হবে।
ব্যক্তিগত পর্যায়ে যে কেউ অংশ নিতে পারবে। তবে রেজিস্ট্রেশন করার সময় শিক্ষার্থীদের নিজ নিজ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের পরিচয়পত্র, বেতনের রসিদ, ফলাফলের বিবরণী কিংবা এসএসসি পরীক্ষার প্রবেশপত্র—যেকোনো একটি প্রমাণ হিসেবে দেখাতে হবে।

চারটি ক্যাটাগরিতে গণিত অলিম্পিয়াড অনুষ্ঠিত হবে।
ক. প্রাইমারি: তৃতীয় থেকে পঞ্চম শ্রেণি বা সমমান এবং স্ট্যান্ডার্ড-৩ থেকে স্ট্যান্ডার্ড-৫।
খ. জুনিয়র: ষষ্ঠ থেকে অষ্টম শ্রেণি বা সমমান এবং স্ট্যান্ডার্ড-৬ থেকে স্ট্যান্ডার্ড-৮।
গ. সেকেন্ডারি: নবম, দশম শ্রেণি ও এসএসসি পরীক্ষার্থী বা সমমান এবং ও–লেভেল এবং
ও–লেভেল পরীক্ষার্থী।
ঘ. হায়ার সেকেন্ডারি: একাদশ, দ্বাদশ শ্রেণি ও এইচএসসি পরীক্ষার্থী বা সমমান এবং
এ–লেভেল ও এ-লেভেল পরীক্ষার্থী।

শুরু হচ্ছে গণিত উত্সব ২০১৮

দেশের শিক্ষার্থীদের গণিতে দক্ষ করে তোলা এবং রোমানিয়ায় অনুষ্ঠেয় ৫৯তম আন্তর্জাতিক গণিত অলিম্পিয়াডে (আইএমও) যোগদানের জন্য বাংলাদেশ দলের সদস্য বাছাইয়ের লক্ষ্য  ডাচ্-বাংলা ব্যাংক-প্রথম আলো গণিত উত্সব ২০১৮ ও ষোড়শ বাংলাদেশ গণিত অলিম্পিয়াডের কার্যক্রম শুরু হয়েছে। বার্ষিক পরীক্ষার পর ডিসেম্বরের তৃতীয় সপ্তাহে শুরু হবে এবারের লড়াই। বরাবরের মতো এবারও বাংলাদেশ গণিত অলিম্পিয়াড কমিটির আয়োজনে গণিত উৎসবের পৃষ্ঠপোষক ডাচ্-বাংলা ব্যাংক লিমিটেড; আর সার্বিক ব্যবস্থাপনায় প্রথম আলো।

অাইএমও ২০১৭–এর জন্য বাংলাদেশ দল ঘোষনা

আগামী ১২–২৩ জুলাই ২০১৭ ব্রাজিলের রিও ডি জেনেরিও–তে অনুষ্ঠেয় ৫৮তম আন্তর্জাতিক গণিত অলিম্পিয়াডের (আইএমও) জন্য ছয় সদস্যের বাংলাদেশ দল ঘোষণা করেছে বাংলাদেশ গণিত অলিম্পিয়াড কমিটি। শিক্ষার্থীরা হলো আসিফ-ই-ইলাহী (সিলেট এমসি কলেজ, সিলেট), মো. সাব্বির রহমান (নটর ডেম কলেজ), আহমেদ জাওয়াদ চৌধুরী (ক্যান্টনমেন্ট ইংলিশ স্কুল ও কলেজ , চট্টগ্রাম), এ এম নাঈমুল ইসলাম (অমৃতলাল দে মহাবিদ্যালয়, বরিশাল), তামজীদ মোর্শেদ রুবাব (নটর ডেম কলেজ) ও রাহুল সাহা (ঢাকা কলেজ)। বাংলাদেশ গণিত দলের জন্য শুভ কামনা।

আইএমও ওয়েবসাইটে বাংলাদেশের প্রোফাইল: https://www.imo-official.org/year_reg_team.aspx?year=2017&code=BGD

জাতীয় গণিত উৎসব ২০১৭ এর ফলাফল

জাতীয় উৎসব ২০১৭ এর ফলাফল ডাউনলোড করুন নিচের লিংক থেকে।

সম্পূর্ণ ফলাফল ফাইল ডাউনলোড

 

ঢাকা উৎসবের ফলাফল

ঢাকা আঞ্চলিক উৎসবের ফলাফল ডাউনলোড করুন নিচের লিংক থেকে।

সম্পূর্ণ ফলাফল ফাইল ডাউনলোড

 

ঢাকা আঞ্চলিক উৎসব : গণিত শিখতে আনন্দ চাই


একে ছুটির দিন। তার ওপর মাঘের সকাল। এমন সকালে লেপের ওম ছেড়ে হাজারো শিক্ষার্থী হাজির গণিত উৎসবে। সেখানে খুদে গণিতবিদদের বুদ্ধিদীপ্ত সব প্রশ্ন, গান-গল্পসহ গণিত ও বিজ্ঞানবিষয়ক নানা আয়োজনের ভেতর দিয়ে শেষ হলো ‘ডাচ্-বাংলা-প্রথম আলো গণিত উৎসব, ২০১৭’-এর ঢাকা আঞ্চলিক পর্ব।
উৎসবে উপস্থিত দেশের বিজ্ঞানী, গণিতবিদ ও সুধীজনেরা এসব শিক্ষার্থীর মনে গেঁথে দিলেন এক কার্যকর কৌশল। এটি হচ্ছে শুধু প্রতিযোগিতা নয়, গণিতকে আত্মস্থ করতে সবার আগে সেটাকে উপভোগ করা চাই।
গতকাল শুক্রবার ঢাকা রেসিডেনসিয়াল মডেল কলেজ প্রাঙ্গণে আয়োজিত এই উৎসবে চার ক্যাটাগরিতে ঢাকা, মানিকগঞ্জ, গাজীপুর, মুন্সিগঞ্জ, নরসিংদী ও নারায়ণগঞ্জ জেলার ১৬৮টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রায় সাড়ে তিন হাজার শিক্ষার্থী অংশ নেয়। ডাচ্-বাংলা ব্যাংক লিমিটেডের পৃষ্ঠপোষকতায় এবং প্রথম আলোর ব্যবস্থাপনায় বাংলাদেশ গণিত অলিম্পিয়াড কমিটি এই উৎসবের আয়োজন করে।
চলতি বছর ব্রাজিলে অনুষ্ঠেয় ৫৮তম আন্তর্জাতিক গণিত অলিম্পিয়াডের জন্য বাংলাদেশ গণিত দল নির্বাচনের লক্ষ্যে এবং দেশের শিক্ষার্থীদের গণিতে দক্ষতা বাড়ানোর জন্য এ বছর ১৫টি শহরে আঞ্চলিক গণিত উৎসব অনুষ্ঠিত হচ্ছে। সব উৎসবের বিজয়ীরা আগামী ১০ ও ১১ ফেব্রুয়ারি ঢাকার সেন্ট যোসেফ হায়ার সেকেন্ডারি স্কুলে অনুষ্ঠেয় জাতীয় গণিত উৎসব, ২০১৭ এবং পঞ্চদশ বাংলাদেশ গণিত অলিম্পিয়াডে অংশ নেবে।
গতকাল রেসিডেনসিয়াল কলেজ মাঠে আনন্দমুখর পরিবেশে উৎসবের উদ্বোধন ঘোষণা করেন কলেজের অধ্যক্ষ ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. আব্দুল মান্নান ভূঁইয়া। তিনি বলেন, গণিত এমন একটি বিষয়, যা শিক্ষার্থীর সৃজনশীলতাকে উসকে দেয়।
বাংলাদেশ গণিত অলিম্পিয়াড কমিটির সভাপতি অধ্যাপক জামিলুর রেজা চৌধুরী বলেন, পৃথিবীর কোনো দেশে মনে হয় না একসঙ্গে এত শিক্ষার্থী গণিতবিষয়ক এ রকম একটি প্রতিযোগিতায় অংশ নেয়। শিক্ষার্থীদের গণিতকে উপভোগ করার পরামর্শ দিয়ে তিনি বলেন, বিজ্ঞান, প্রকৌশল ও প্রযুক্তিতে বাংলাদেশকে এগিয়ে নিতে হলে গণিতে ভালো করার বিকল্প নেই।
গণিতের ডানায় ভর করে এই শিক্ষার্থীরা একদিন সাফল্যের শিখরে পৌঁছে যাবে বলে প্রত্যাশা ব্যক্ত করেন ডাচ্-বাংলা ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আবুল কাশেম মো. শিরিন।
গণিত অলিম্পিয়াড কমিটির সহসভাপতি মুহম্মদ জাফর ইকবাল খুদে গণিতবিদদের উৎসাহ দিয়ে বলেন, ‘এখানে তোমরা সবাই মেডেল পাবে না। কিন্তু সবাই বিজয়ী হবে। কারণ এটি উৎসব। আনন্দের ভেতর দিয়ে, উপভোগের ভেতর দিয়ে যে শিক্ষা অর্জিত হয়, সেটাই প্রকৃত শিক্ষা। কিন্তু আমার খুব মন খারাপ হয় যখন দেখি তোমরা গোল্ডেন ফাইভের জন্য প্রতিযোগিতায় নামো।’
শুভেচ্ছা বক্তব্যে প্রথম আলোর সহযোগী সম্পাদক আব্দুল কাইয়ুম বলেন, ঢাকার উৎসবে একসঙ্গে প্রায় সাড়ে তিন হাজার শিক্ষার্থীর অংশগ্রহণ একটি রেকর্ড। তিনি আশা করেন, জ্ঞান-বিজ্ঞানের প্রতিটি শাখায় গণিতের এই আলো ছড়িয়ে যাবে।
উদ্বোধনী পর্বে আরও উপস্থিত ছিলেন গণিতবিদ অধ্যাপক লুৎফুজ্জামান, বাংলাদেশ গণিত অলিম্পিয়াড কমিটির সদস্য অধ্যাপক মোহাম্মদ কায়কোবাদ ও অধ্যাপক আনোয়ার হোসেন, বিজ্ঞানী ড. রেজাউর রহমান, শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ইয়াসমিন হক, বাংলাদেশ গণিত অলিম্পিয়াড কমিটির সাধারণ সম্পাদক মুনির হাসান প্রমুখ।
উদ্বোধনী পর্বের পর শিক্ষার্থীরা সোয়া ঘণ্টাব্যাপী অলিম্পিয়াডে অংশ নেয়। এরপর উৎসবে ‘আয় আয় আয়, কে স্বপ্ন দেখবি আয়/ আয় গণিতের আঙিনায়’ গানটির সঙ্গে নৃত্য পরিবেশন করে নিত্যরঙের শিল্পীরা। প্রশ্নোত্তর পর্বে শিক্ষার্থীদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাব দিতে মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন অধ্যাপক মুহম্মদ জাফর ইকবাল, বাংলাদেশ গণিত দলের কোচ অধ্যাপক মাহবুব মজুমদার, অধ্যাপক আবদুল হাকিম খান, মনোচিকিৎসক মোহিত কামাল, অধ্যাপক হায়দার খান প্রমুখ। খুদে শিক্ষার্থীদের বুদ্ধিদীপ্ত প্রশ্নের জন্য ছিল পুরস্কারের ব্যবস্থা। এ পর্বটি সঞ্চালনা করেন গণিত অলিম্পিয়াডের অ্যাকাডেমিক কাউন্সিলর মাহমুদুল হাসান।
‘তাওয়ায় দিলে রুটি কেন ফুলে ওঠে?’, ‘মাইনাস ১ কে বর্গমূল করা যায় না কেন?’, ‘দুঃখ পেলে চোখে পানি আসে কেন?’, ‘মানুষ কেন বুড়ো হয়?’ খুদে শিক্ষার্থীদের এমন সব প্রশ্নে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেন মঞ্চে উপস্থিত বিশিষ্টজনেরা।
প্রশ্নোত্তর পর্ব শেষে বিরতির মধ্যে ছিল শিক্ষার্থী মনন মাহমুদের ওয়াটার রকেট উৎক্ষেপণের পালা। পরে রুবিকস কিউব প্রতিযোগিতায় প্রথম স্থান অর্জন করে রবিন নামের এক শিক্ষার্থী। এরপর পাবলিক পরীক্ষায় নম্বর প্রকাশের পক্ষে-বিপক্ষে বিতর্কে অংশ নেয় শিক্ষার্থীরা।
বিতর্কের আগে কিশোর আলোর সম্পাদক আনিসুল হক শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে বলেন, ‘খালি পরীক্ষায় ভালো ফল করলে হবে না। একজন পরিপূর্ণ মানুষ হতে গেলে কবিতা পড়তে হবে, সাহিত্য পড়তে হবে, দর্শন পড়তে হবে। খেলাধুলায় অংশ নিতে হবে।’
সমাপনী পর্বে ১৭৮ জন বিজয়ীর নাম ঘোষণা এবং তাদের পদক ও সনদ দেওয়ার মধ্য দিয়ে শেষ হয় দিনব্যাপী আয়োজন।
এর আগে রেসিডেনসিয়াল মডেল কলেজের অধ্যক্ষ মোঃ আব্দুল মান্নান ভূঁইয়ার হাতে ভেন্যু স্মারক ও উপাধ্যক্ষ ফেরদৌস আরার হাতে সুহৃদ স্মারক তুলে দেন আয়োজকেরা। উৎসব উপলক্ষে কলেজ প্রাঙ্গণে বিজ্ঞানচিন্তা, কিশোর আলো, প্রথমা প্রকাশনসহ গণিত ও বিজ্ঞানবিষয়ক বইয়ের স্টলগুলোতেও ছিল উৎসাহী লোকজনের ভিড়। গোটা আয়োজনটি সফলভাবে সম্পন্ন করতে সহযোগিতা করে বন্ধুসভা ও ম্যাথ অলিম্পিয়াড ভলেনটিয়ার্সের সদস্যরা।